পিস্তল ঠেকিয়ে চাঁদা আদায় : সন্ত্রাসি সাগর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার | বাংলারদর্পণ

কুমিল্লা :
তিতাসে শামসুল হুদা নামে এক পল্লী চিকিৎসকের চেম্বারে ঢুকে পিস্তল ঠেকিয়ে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় অভিযুক্ত সন্ত্রাসী সাগরকে (৩২) ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার ডেমরা থানার মাতুয়াইল এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

আটককৃত সন্ত্রাসী সাগর শাহপুর গ্রামের হাবুল মিয়ার পুত্র। সাগরের বিরুদ্ধে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও অস্ত্রসহ কমপক্ষে ৮টি মামলা রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিতাস থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিল্লাল।

তিনি জানান, ভিডিওটি নজরে আসার পর থেকে রাতভর গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত ছিল । সকালে তার অবস্থান নিশ্চিত করে অভিযান পরিচালনা করে আটক করা হয়েছে। তার কাছে থাকা পিস্তলটি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলমান রয়েছে।

সন্ত্রাসী সাগর আটকের পর ভুক্তভোগী পল্লী চিকিৎসক শামসুল হুদা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সন্ত্রাসী সাগর এলাকাতে যেন আর প্রভাব দেখাতে না পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে ।

পুলিশ দ্রুত সময়ে তাকে আটক করেছে শুনে খুশি হয়েছি। আমরা আর কত চুপ থাকবো । দশ বছর ধরে নীরবে চাঁদা দিয়ে আসছি। এলাকায় ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলে না। আমি জীবনের মায়া না করে ভিডিও ফেসবুকে দিয়েছি। আমি চাই এসব চাঁদাবাজদের স্থান যেন এই সমাজে না হয়।

তিতাসবাসী অতিষ্ঠ সন্ত্রাসী সাগরের জ্বালায়। আমি তার ফাঁসি চাই । এখনও আমি ভয়ে আছি। কারণ তার সহযোগীরা আমার আশে-পাশে রয়েছে।

উল্লেখ্য, রোববার মজিদপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের শান্তির বাজারে শামসুল হুদা নামে এক পল্লী চিকিৎসকের চেম্বারে ঢুকে অস্ত্র দেখিয়ে চাঁদাবাজির একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এ ঘটনায় জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয় । রোববার (০৮ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে মজিদপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের শান্তির বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরে নিজের জীবন রক্ষা ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন ওই পল্লী চিকিৎসক।

পল্লী চিকিৎসক শামসুল হুদা জানান, শনিবার (০৭ আগস্ট) রাতে আমার বাসায় একদল ডাকাত হামলা করে। কিন্তু প্রতিবেশীরা টের পেলে তারা পালিয়ে যায়। রোববার বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান ফারুক মিয়া সরকারসহ গণ্যমান্য বক্তিদের জানানো হয়।

বিকেল ৪টায় সাগর ক্ষিপ্ত হয়ে আমার চেম্বারে ঢুকে প্রথমে আমাকে হুমকি দেয়। পরে পিস্তল বের করে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

ভয়ে আমি নগদ ও বিকাশে ৩৯ হাজার টাকা দেই। সে টাকা নিয়ে আরও দুই লাখ টাকার জন্য চাপ দিয়ে যায়। না দিলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। সে আগেও আমার কাছে চাঁদা দাবি করেছে। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলাম। সকলের সহযোগিতায় এখন নিরাপদে আছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *