লামায় প্রবাসীর স্ত্রী-কন্যা খুনের ঘটনায় মামলা

প্রতিবেদক, লামা (বান্দরবান):
বান্দরবানের লামা পৌরসভার চাম্পাতলীতে প্রবাসীর ১০মাসের শিশু কন্যাসহ মা-মেয়ে তিনজনের খুনের ঘটনায় অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেছে মৃত মাজেদা বেগমের মা লালমতি খাতুন। শনিবার দুপুরের পর লামায় থানায় এই মামলা দায়ের করেন তিনি।

এদিকে খুনের শিকার মাজেদা বেগম ও তার দুই কন্যা নুর-এ জান্নাত রীদা প্রকাশ নুরী (১০) এবং সুমাইয়া ইয়াছমিন প্রকাশ রাফি’র ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

এরআগে শুক্রবার (২১ মে) দিনগত রাত তিনটার দিকে কুয়েত প্রবাসী নুর মোহাম্মদের লামা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড চাম্পাতলী গ্রামের তালাবব্ধ ঘর থেকে তার স্ত্রী ও দু’কন্যার লাশ উদ্ধার করে লামা থানা পুলিশ ।

পুলিশ জানায়, বাইর থেকে তালা দেওয়া ওই বাসার রান্না ঘরের পাশের কক্ষের মেঝেতে পড়ে ছিল মাত্র ১০ মাস বয়সী কন্যা নুর-এ জান্নাত রীদা প্রকাশ নুরী, তার অদূরেই মা মাজেদা বেগম এবং শোয়ার কক্ষে খাটের উপর দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইয়াছমিন প্রকাশ রাফি’র (১৬) লাশ। মৃত নূরী ও রাফির চাচা আব্দুল খালেকের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধারে যায়। রাফিদের বাবা নূর মোহাম্মদ কুয়েতে।

এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও লামা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর জানান, এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয়জনকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

হেফাজতে নেওয়া ছয়জনের মধ্যে চারজন মৃত রাফি ও নূরীর দু’চাচা আব্দুল খালেক ও শাহ আলম, খালা রাহেলা বেগম ও খালু মো. আব্দুর রহিম। এছাড়া রাফিদের বাসার পার্শ্ববর্তী মসজিদে গেল রমজানে তারাবির নামাজ পড়ানো হাফেজ মো. সায়েদুর রহমান এবং স্থানীয় প্রতিবেশি যুবক মো. রবিউল হোসেন।

লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত খুন। হত্যাকাণ্ডের পর র্দুবৃত্তরা বাহির থেকে তালা দিয়ে গেছে। তাছাড়া ঘরের মধ্যে আলমিরা ও ওয়্যারড্রপের ড্রয়ারের তালা ভাঙা। ঘরের কাপড়-চোপড় আসবাসপত্র সব এলোমেলো।

প্রাথমিকভাবে প্রায় ১৫ ভরি স্বর্ণা-লংকার ও লক্ষাধিক টাকা খোয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মৃত মাজেদার শাশুড়ি ছকিনা খাতুন। ওসি বলেন, যেহেতু পুলিশ, পিবিআই ও র‌্যাব এক হয়ে কাজ করছে। আশা করি অতিদ্রুত খুনের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য: শুক্রবার (২১ মে) দিনগত রাত তিনটার দিকে কুয়েত প্রবাসী নুর মোহাম্মদের লামা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের চাম্পাতলীর তালাবব্ধ ঘর থেকে তার স্ত্রী ও দু’কন্যার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে নুর মোহাম্মদের ভাই আব্দুল খালেক রাত আটটার দিকে এই তালাবব্ধ বাসায় লাশ আছে পুলিশকে খবর দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *