রংপুর কারমাইকেল কলেজ ছাত্রীর লাশ রেখে পালালেন দুই তরুণ | বাংলারদর্পণ

রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর :
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সোমবার বেলা ১১টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় এক তরুণীকে নিয়ে আসেন এক তরুণ। ১১টা ৫৫ মিনিটে ছাত্রীটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

এরপর লাশটি হাসপাতালেই ফেলে পালিয়ে যান ওই তরুণ। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দুর্ঘটনায় মেয়েটি আহত হয়েছিল বলে লেখা রয়েছে।

পরে জানা যায়, নিহত তরুণীর নাম রুবাইয়া ইয়াসমিন (২২)। তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন। তাঁর বাড়ি নীলফামারী সদরের কচুকাটা ইউনিয়নে; বাবার নাম আব্দুর রাজ্জাক।
স্বজনদের অভিযোগ, সোমবার সকালে স্থানীয় দুই তরুণ মোটরসাইকেলে রুবাইয়াকে অপহরণ করার চেষ্টা করে। রুবাইয়া তাঁদের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছিল, একপর্যায়ে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।

রুবাইয়ার স্বজন ও নীলফামারীর জলঢাকার স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, সোমবার সকালে প্রতিদিনের মতো রুবাইয়া বাড়ির পাশের জলঢাকা উপজেলার টেংগনমারী বাজারে কোচিং করতে যান। কোচিং শেষে তাঁরা তিন বান্ধবী বাড়ি ফিরছিলেন। নয়টার দিকে টেংগনমারী বাজারের রজনীগন্ধা হোটেলের সামনে কচুকাটা ইউনিয়নের বর্ম্মতল গ্রামের মো. আব্দুল্লাহর ছেলে ফয়সাল হোসেন ও তাঁর সহযোগী রেজভী হোসেন জোর করে রুবাইয়াকে তাঁদের মোটরসাইকেলে তুলে নেন। চার কিলোমিটার দূরে রাজারহাট এলাকায় মোটরসাইকেল থেকে পড়ে মাথায় আঘাত পান রুবাইয়া।

পরে ওই তরুণসহ স্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁকে উদ্ধার করে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ফয়সাল তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানেই মেয়েটি মারা যান। রুবাইয়ার মৃত্যুর খবর শুনে লাশ ফেলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান ফয়সাল।

রংপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, সোমবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটে এক তরুণ রিমু নাম দিয়ে ওই তরুণীকে হাসপাতালে ভর্তি করান। কিছুক্ষণ পরেই মেয়েটি মারা গেলে তাঁকে নিয়ে আসা তরুণকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

রুবাইয়ার বাবা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘ওই ছেলের (ফয়সালের) সঙ্গে আমার মেয়ের কোনো সম্পর্ক ছিল না। অপহরণের পর আমার মেয়ে ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করছিল। এ কারণে তাকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’ সোমবার রাতে তিনি জলঢাকা থানায় মামলা করতে গেছেন বলে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *