ফেনীতে বিয়ে উৎসবের নামে বেহায়াপনা | বাংলারদর্পন

জসীম মাহমুদ :
পীর পাগলা হযরত আমির উদ্দিন (রঃ)’র পূণ্য ভূমি ফেনীতে এখন বিয়ে উৎসব হয়। তাও আবার আনুষ্ঠানিকভাবে। ছোট বেলায় আমরা অবচেতন মনে বৌ-জামাই খেলতাম। কিন্তু চুপিসারে। বড়রা দেখলে লজ্জায় লাল হয়ে যেতাম। মনের চেতন না থাকলেও কেন জানি বউ-জামাই খেলাটাকে অনেকটাই নিষিদ্ধ ও রহস্যময় মনে হতো।

এসব বউ-জামাই খেলতে আমরা লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যেতাম। সেখানেও বিপত্তি ঘটাতো দুষ্ঠ বড়রা। সব কিছু ঠিকঠাকভাবে চলা অবস্হায় বড়দের অনাকাংখিত আগমণে রহস্যময় বউ-জামাই খেলার সাধ নিমিষেই উবে যেতো।

বড়রা যখন বলতো এখানে কি? কোন উত্তর না দিয়েই সাথে সাথে ভৌঁ দৌঁড়। জোলাভাতি খেলাটাও শিশু কিশোরদের অন্যতম হবি ছিল। যা এখনো বিদ্যমান। তবে বউ-জামাই খেলা এখনো চলমান আছে কিনা জানিনা।

বিয়ে বিয়ে খেলা বা বিয়ে উৎসব অতীতকে মনে করিয়ে দিল। আচ্ছা, যারা বিয়ে বিয়ে খেলছে, তারা কি চেতনে করছে এসব নাকি অবচেতন মনে? এরাতো বয়স্ক। ছেলে মেয়ের বাপও নাকি আছে। বিবাহিত ছেলে-মেয়েরা কার সাথে এমন আদিম রসে মত্ত হলো? প্রাক্তন প্রেমিক নাকি পরকিয়া ফেরিওয়ালা নাগরদের সাথে? তা জানা হলোনা। আর অবিবাহিত ছেলে- মেয়েদের আগ্রহে কারা ছিল?

বিয়ে উৎসব হলো। ইউটিউব ও ফেইসবুক লাইভে দেখলাম। বিয়ের পরবর্তী ধাপও সমাপ্ত হবে নিশ্চয়ই। অর্থাৎ বাসর ঘর। এরই মধ্যে ফুলের বিছানাও সাজিয়েছে মনে হয়। সাজাবেইতো। কেন সাজাবেনা। বিয়ে যে হলো! এই অংশটুকু কি ইউটিউবে বা ফেইসবুক লাইভে দেখা যাবে? দেখতে পেলে পুলকিত হতো সবাই। বেয়ায়াপনার শেষ ধাপ দেখতে ৫৪ বছর বয়সেও আমি রাজি।

যারা এসব করে তাদের মা, বাবার সাথে বসে রসাত্মক আদিমতা কেমন দেখতে মনডা বড়ই আনচান আনচান করছে। আমরা অতি আধুনিক হয়ে গেছি। কিন্তু শিঁকড়ের সন্ধান করিনা। মঙ্গলবার ছিল ফেনী শহরের প্রতিষ্ঠাতা কবি নবীনচন্দ্র সেন’র জন্মদিন। ফেনীর কেউ এই মহান লোকটিকে স্মরণ করেছে বলে জানিনি।

তারই ফেনীতে আজ যৌবনের রস বিকিকিনি হয় প্রকাশ্যে। প্রশাসনের নাকের ডগায়। বলা যায়, প্রশাসনিক সহযোগিতায়! পীর আউলিয়ার এই সমতল ভূমির মানুষেরা অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেকটাই ধর্মভীরু। আর এখানে আধুনিকতার নামে পণ্যের ন্যায় নারীদেহ প্রদর্শনের নিলর্জ ঠিকাদারী নিয়েছে কিছু কুরুচিপূর্ণ মানুষ!

এসব বিয়ে বিয়ে নিলর্জ খেলা আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়। এটি হতে পারেনা। কিন্তু হয়েছে। কারা এসবের হোতা? কে দিয়েছে এসব করতে ইন্ধন? তাদের মুখোশ জনসম্মুখে উন্মোচণ করা দরকার। আমাদের ঈমান-আকিদা, কৃষ্টি কালচারকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে কারো মনগড়া মতবাদ চালিয়ে দেওয়া যায়না। আগামীতে এসব বেয়ায়াপনা বন্ধ করতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অতিব জরুরী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *