শাহীন একাডেমির শিক্ষার্থীরা আবাসিক হোস্টেলে না থাকলেও বেতন আদায় করা হচ্ছে

ফেনী প্রতিনিধি:
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের এই দুঃসময়ে ফেনীর বেশ কয়েকটি মাধ্যমিক বেসরকারি স্কুলের মানবিক আচরনে বেতন অর্ধেকে নামিয়ে আনলেও দেশের মহাসংকট কালে ফেনীর রামপুরে অবস্থিত শাহীন একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজ কর্তপক্ষ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে সম্পুর্ন ব্যাতিক্রমী অমানবিক আচরণ করছে।

স্কুলের আবাসিক ছাত্রদের গত ১৮ মার্চ থেকে আবাসিক হোস্টেল বন্ধ থাকলেও শাহীন একাডেমির অফিসিয়াল নাম্বার থেকে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদেরকে বার বার মোবাইল ফোনে হোস্টেল ভাড়া ও বেতন দিতে চাপ প্রয়োগ করছে। শুধু তাই নয় সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে স্কুলের মাসিক টিউশন ফি পূর্ন টাকা দিতে বাধ্য করছে শিক্ষার্থীদের। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা চরম ক্ষোভ ও ক্ষুদ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

ফেনী জজ কোর্টের আইনজীবি তুহিন মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানান করোনা মহামারি আকার ধারণ করায় সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক গত ১৮ মার্চ থেকে শাহীন একাডেমির আবাসিক ছাত্রাবাস বন্ধ হয়ে যায়। তার পর থেকে আবাসিকের ছাত্ররা বাড়ীতে অবস্থান করে।

কিন্তু শাহীন একাডেমি কর্তৃপক্ষ গত কয়েকদিন ধরে বারবার মোবাইল ফোন করে মার্চ মাস থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা করে ছাত্রাবাসের বকেয়া বেতন ও ভাড়া পরিশোধ করতে চাপ প্রয়োগ করছে। তিনি আরো জানান তিনি জেলা প্রশাসক, শিক্ষাকর্মকতাকে অবহিত করবেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় শুধুমাত্র হোষ্টেল ভাড়া নয় স্কুলের মার্চ মাস থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সম্পুর্ন বকেয়া টাকা পরিশোধ না করলে শিক্ষার্থীদের ক্লাসের বাইরে দীর্ঘক্ষন দাড় করিয়ে রাখছে। বকেয়া বেতন পরিশোধ না করলে এসাইনমেন্ট জমা নিচ্ছেনা বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অভিযোগ করছেন।

শহরের বাইরে অবস্থান হওয়ায় প্রশাসনের তেমন নজর না থাকায় মনগড়া নিজস্ব নিয়মে পরিচালিত করছে স্কুল কতৃপক্ষ। করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেলেও স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে শত শত শিক্ষার্থীদের একই কক্ষে জড়ো করে রাখা হচ্ছে। কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করেন স্কুলের শিক্ষার মান ও ফলাফল সন্তোষজনক না হওয়ার পরও শিক্ষাকার্যক্রমে ফেনী জেলার সবচেয়ে বেশী ব্যায়বহুল ।

অপরদিকে শাহীন একাডেমি স্কুল কতৃপক্ষ দাবি করছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন আদায় করতে না পারলে শিক্ষক ও কর্মচারির বেতন দেয়া সম্ভব হবেনা। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত ১৮ই মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীও অভিভাবকদের মতো শিক্ষকরাও মানবেতর জীবনযাপন করছে।

স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন মোল্লা জানান হোস্টেলের সিট ভাড়া প্রতিমাসে ২ হাজার টাকার নেয়ার সিদ্বান্ত হয়েছে।

করোনার মহাসংকটকালে অনেক অভিভাবকের চাকরি চলে গেছে, কারও বেতন কমে গেছে আবার অনেক ব্যবসায়ীরা আছেন লোকসানের মধ্যে। এমন অবস্থায় স্কুলের অতিরিক্ত ফিস বহন করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবক ফারহানা রহমান সহ আরো বেশ কয়েকজন অভিভাবক।

একজন হতদরিদ্র অভিভাবক মঙ্গলবার দুপুরে এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করছেন স্কুল কতৃপক্ষ তার কাছে গত মার্চ মাস থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সম্পুর্ন টাকা দিতে চাপ দিচ্ছে, টাকা না দিলে ফলাফল ঘোষণা করা হবেনা বলে হুককী দিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে তার স্বামী কর্মহীন হয়ে ঘড়ে বসে আছেন এই মুহুত্বে এতটাকা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছেনা। কিন্তু স্কুল কর্তপক্ষকে কোন ভাবেই মানাতে পারছেননা তিনি।

কাহীন একাডেমির অধ্যক্ষ মো একরামুল হককে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *