ছাত্রদল সভাপতিকে বুকে টেনে নিলেন ছাত্রলীগ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী | বাংলারদর্পন 

নিউজ ডেস্ক :

বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো যখন একে অপরের ছায়া মাড়াতেও ‘অস্বস্তি’ বোধ করেন সেখান এক বিরল দৃশ্যে অবতারণা করলেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান। রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের শীর্ষ দুই ছাত্র সংগঠনের দুই শীর্ষ নেতা একে অপরকে আলিঙ্গন করলেন।

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে সকালে রেজিস্ট্রার ভবনে আসেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা। সেখানেই রাজীব আহসানকে বুকে টেনে নেন গোলাম রাব্বানী।

রোববারের বৈঠকে ছাত্রদলের নেতারা উপস্থিত হবেন এ খবর সবারই জানা ছিল। ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতারা আসলে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় কিনা তা নিয়ে সাধারণ ছাত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সংবাদমাধ্যম কর্মীদের কৌতূহল ছিল।

সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গাড়িতে করে সভাস্থল রেজিস্টার ভবনে পৌঁছান। তাদের সঙ্গে আসেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে বেলা পৌনে ১২টায় বৈঠক শুরু হয়। চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

বৈঠক শেষে ছাত্র সংগঠনের নেতারা যখন বের হচ্ছিলেন তখন বাইরে ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মীর ভিড় ছিল। আর ছাত্রদলের ওই দুজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর গোলাম রাব্বানী তখন ছাত্রদলের দুই নেতাকে নিরাপদে বের করার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা একরকম ঘিরে রেখেছিল ছাত্রদলের দুই নেতাকে। এসময় তারা আতঙ্কিত বলে মনে হচ্ছিল। বারবার তারা পেছনের দিকে দেখছিলেন।

বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ছাত্রদলের দুই নেতার জন্য অপেক্ষা করছিল। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং বিশ্ববিদ্যালয়রে নেতারা ঘিরে রেখেই ছাত্রদলের দুই নেতাকে রেজিস্ট্রার ভবন থেকে বের করে গাড়ির কাছে নিয়ে আসেন। বিদায়ী আলাপের মধ্যেই ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসানকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী। এরপরই গাড়িতে উঠে ক্যাম্পাস থেকে বিদায় নেন ছাত্রদলের নেতারা।

প্রশাসনের সভা শেষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনকে আমরা রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছি। আমরা ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছি।’

পরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘পকেটে পেট্রোল বোমা না রাখলে সহাবস্থানে ছাত্রলীগের আপত্তি নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনকে আমরা রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘ঢাবির হলগুলোতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী আছে ৩০ শতাংশ। বাকিগুলো সাধারণ শিক্ষার্থী ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী। ছাত্রদলের ক্যাম্পাসে সহাবস্থানে কোনো আপত্তি নেই। তবে তারা পকেটে পেট্রোল বোমা রাখবে না আমাকে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *