প্রতিবেদক :
অনেক দিন ধরেই ভুগছিলেন প্রথিতযশা সম্পাদক-সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ড. ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী। শরীর-মন ভেঙে পড়েছিল অনেক আগেই । বিছানাই ছিল ঠিকানা। ইশারা ইঙ্গিতে কথাবার্তা বলতেন। স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে পিজি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন দীর্ঘদিন। উন্নত চিকিৎসার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন, সেই সামর্থ্যও ছিল না তার পরিবারের। আর্থিক টানাপড়েনে নিয়মিত বড় হাসপাতালে চিকিৎসাও নিতে পারেননি প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) এই চেয়ারম্যান। অবশেষে আজ সোমবার চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
৬০-এর দশকের মেধাবী ছাত্রনেতা ড. কোরেশী তৎকালীন অবিভক্ত পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। এরপর তিনি ১৯৬১ সালে ডাকুসর ভিপিও নির্বাচিত হন। জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশে তার অবদান ছিল অসামান্য। ৬ দফা ও ১১ দফাভিত্তিক ছাত্র ও গণআন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীর ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। ’৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তাঞ্চল থেকে মুক্তিযুদ্ধের মুখপাত্র হিসেবে দেশবাংলা পত্রিকা বের করেন ড. কোরেশী। ওই সময় থেকেই তিনি পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি গঠন করলে ওই দলের প্রথম যুগ্ম মহাসচিবও ছিলেন ড. কোরেশী। ২০০৭ সালে তিনি প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) দল গঠন করেন। আমৃত্যু তিনি ওই দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন।
২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে এ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। পরে বহুদিন ছিলেন পিজিতে। আর্থিক টানাপড়েনের কারণে শারীরিকভাবে কিছুটা সুস্থ হলেই বাসায় ফেরেন আলোচিত এই রাজনীতিবিদ। এরপর বাসায় বিছানায় শুয়ে কেটেছে এক সময়ের তুখোড় এই ছাত্রনেতার।
ঘনিষ্ঠরা জানান, ড. কোরেশীর মতো নীতিবান রাজনৈতিক নেতার আজ বড় অভাব। তার মতো রাজনীতিবিদ অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি। আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে যে ছাত্রনেতাকে ‘দার্শনিক’ হিসেবে বিশ্বের গণমাধ্যম আখ্যা দিত, সেই ডাকসুর ভিপি চলে গেলেন নীরবে। প্রথিতযশা সাংবাদিক ও সম্পাদক ড. ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীর উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছিলেন কয়েকজন সম্পাদক। বাংলারদর্পণ