ফুলগাজীর শ্রীচন্দ্রপুর মুহুরী নদীর পাড় এলাকা যেন এক অবহেলিত জনপদ

জহিরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর:

ফেনীর  ফুলগাজী উপজেলার জিএম হাট ইউনিয়নস্থ মুহুরী নদীর কোল ঘেঁষে প্রাচীন জনপদ শ্রীচন্দ্রপুর।

 

সৌন্দর্য্যময় একটি গ্রামের নাম  প্রাকৃতিক পরিবেশের অনন্য সৃষ্টি বলেই হয়তো গ্রামটির নাম শ্রীচন্দ্রপুর।

 

ফুলগাজী সদর হতে প্রায় ১০ কি মিঃ এবং ফেনী জেলা শহর হতে ১২ কিঃমিঃ দূরত্বে জিএমহাট ইউনিয়নের অন্তর্গত এই গ্রামে হিন্দু- মুসলিম সম্প্রদায় একসাথে বসবাস করে।

সম্প্রীতির বন্ধনে এলাকায় প্রাচীন শনির হাট-বাজারে পাশাপাশি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় শালা এর সাথেই ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের একটি মসজিদ নির্মাণ করেই সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এই  জনপদের মানুষ।

নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ সেই হিসেবে এই জনপদে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা এর উপর নির্ভর করে এলাকার মানুষ স্থাপন করেছিল ঐতিহ্যবাহী শনির হাট হাট-বাজার। কালের বিবর্তনে আজ এই বাজারটি বন্ধ হয়ে গেছে। দূর-দূরান্তে যাতায়াতের সেই মাধ্যম নৌকা আর এই নদীতে চলাচল করে না।

 

মুহুরী নদীর পাড়ে পাড়ে বসতি স্থাপন করেছে এলাকার জনগণ।ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এই শ্রীচন্দ্রপুর গ্রামের দূরত্ব প্রায় চার কিলোমিটার।গ্রামীণ জনপদে রাস্তাঘাট থাকলেও পাকা করন করা হয়নি তেমন।

এই গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হলো মুহুরী নদীর পাড়। যার কারণে বর্ষাকালে দুর্ভোগ পোহাতে হয় এই এলাকার মানুষের।

খানাখন্দকে জলাবদ্ধতায় এবং স্থানে স্থানে নদীর বাঁধ ভেঙ্গার কারণে এলাকার মানুষ চরম বিপর্যয় পড়ে বর্ষাকালে।

 

সরেজমিনে গিয়ে শনির হাট বাজারের স্থানীয় লোকজনের সাথে আলাপকালে জানা যায়,একসময়ের জমজমাট এই বাজারে খেয়া পার হয়ে নদীর ওপার হতেও মানুুষের যাতায়াত ছিল।

গ্রামের অনেকেরই ফসলী জমি নদীর ওপারে। গ্রামটি নদীর পাড় দিয়ে পার্শ্ববর্তী ছাগলনাইয়া উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের মহামায়া ঘাট পর্যন্ত বিস্তৃত।

নদীর পশ্চিম পাড়ে ফুলগাজী উপজেলার জিএমহাট ইউনিয়ন অপর পাড়ে ছাাগলনাইয়ার মহামায়া ইউনিয়ন।

এ দুই পাড়ের বাসিন্দাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য নদীর ওপর একটি সেতুর প্রয়োজনীয়তা থাকলেও কেউ দেখার নেই।

স্থানীয় ইউপি নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন ও সংসদ নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা ভোটের জন্য এলাকায় গিয়ে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি দিলেও  কিন্তু নির্বাচন চলে গেলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আর এই এলাকার দিকে মুখ ফিরে তাকান না এমনটাই অভিযোগ করেছেন এলাকার জনগণ।

 

সেই হিসেবে অবহেলিত হয়ে আছে এই শ্রীচন্দ্রপুর এলাকার জনপদ।

 

বিশেষ করে বর্ষাকালে স্কুল, কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের জিএম হাট সহ জেলা শহর কিংবা উপজেলায় যেতে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।

 

বর্ষায় মুহুরী নদীর পূর্ণ যৌবনায় পশ্চিম পাড়ের বাসিন্দাদের আতংকে দিন যাপন করতে হয়। মুহুরী নদীর দুপাড়েই ভাঙনে সৃষ্টি হওয়ায় ফসলী জমি,সহ বাসিন্দাদের ক্ষতি হওয়ার আশংকা রয়েছে।

 

গ্রামটির বিস্তৃর্ণ এলাকা সরেজমিনে গিয়ে আরো দেখা যায়, নদীর পাড়ের প্রায় দুই কিঃমিঃ রাস্তা  কাঁচা ও ভাংগা হওয়ায় মানুষের দীর্ঘ পথ অতিক্রম করা দুঃসাধ্য।

 

শ্রীচন্দ্রপুরের বাসিন্দা প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা পরিমল ও এলাকার যুবক ইব্রাহিম খলিল মজনু  শনির হাটে মুহুরি নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ ও নদীর পাড় মেরামত ও পাকাকরণ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবী জানিয়েছেন।

 

দ্রুত নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ ও নদীর পাড়ের টেকসই মেরামত এবং পাকা করণ প্রাণের দাবি বলে উল্লেখ করেন এলাকাবাসী।

বাংলারদর্পণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *