প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কের পুলিশ চেকপোস্টে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় টেকনাফের বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতসহ সাত আসামির দ্বিতীয় দফায় চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৪ আগস্ট) বেলা তিনটার দিকে র্যাব-১৫ এর কার্যালয় থেকে হাসপাতাল হয়ে সাত দিনের রিমান্ড শেষে তাদের জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতে নেয়া হয়।
এর আগে দুপুর ১২টায় র্যাব-১৫ কক্সবাজার কার্যালয়ে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার বলেন, সিনহা হত্যা মামলার প্রধান তিন আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও উপপরিদর্শক নন্দদুলাল রক্ষিতের সাত দিনের রিমান্ড সোমবার শেষ হবে। তবে, মামলার যথাযথ তদন্তের জন্য তাদেরকে আরো জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। তাই তিন আসামিকে আজ আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের আরো সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
গত ৬ আগস্ট সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ তাদের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই তিন আসামিকে গত ১৮ আগস্ট কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে সাতদিনের রিমান্ডে র্যাবের হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
কারাগার থেকে প্রথমে তাদের কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। পরে নিয়ে যাওয়া হয় র্যাব কার্যালয়ে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মামলার মূল তিন আসামিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় তদন্ত সংস্থা র্যাব। রিমান্ডে তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে বলে সংবাদ সম্মেলন জানিয়েছিলেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ।
এদিকে এ মামলায় রিমান্ড চলমান রয়েছে কক্সবাজারে কর্মরত এপিবিএন-১৪ এর সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শাহজাহান, কনস্টেবল রাজীব ও আবদুল্লাহর। প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ।
পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন। ৫ আগস্ট টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। পরদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ওসি প্রদীপসহ সাত আসামি।