২০ কোটি টাকা বিলের যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য নয় – ঢামেক পরিচালক

প্রতিবেদকঃ
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন দাবি করেছেন, চিকিৎসক নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের এক মাসের থাকা খাওয়া বাবদ ২০ কোটি টাকা বিল করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য নয়। তিনি বলেন, বিলের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এতে আমরা অত্যন্ত অপমান বোধ করছি এবং দুঃখ পেয়েছি।

যারা মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। মঙ্গলবার (৩০ জুন) হাসপাতালে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ দাবি করেন। ঢামেক পরিচালক বলেন, এই মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। আমরা মনে করছি বিষয়টা সবাইকে পরিষ্কারভাবে জানানো দরকার।এ অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানাতে বুধবার (১ জুলাই) সংবাদ সম্মেলন করবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ঢাকা মেডিক্যালে মতো দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান যারা ৭৪ বছর ধরে সেবা দিয়ে যাচ্ছে, এই অপপ্রচারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠান সম্পৃক্ত সবাইকে অপদস্ত করা হয়েছে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, মিডিয়াতে দেখছি এক মাসে চিকিৎসক নার্সদের থাকা ও খাবারের বিল বাবদ আমরা নাকি ২০ কোটি টাকা ব্যয় করেছি।

এটি যে কত বড় মিথ্যা কথা…, এটা বলার মধ্য দিয়ে এ হাসপাতাল ও হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট যারা কাজ করে আসছি আমরা সবাই অত্যন্ত অপমান বোধ করছি এবং দুঃখ পেয়েছি। যেখানে মানুষের জীবন রক্ষার জন্য নিজেদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছি, সেখানে এখন আমরা কোথায় আছি, কী খাচ্ছি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আমরা অতিরিক্ত ব্যয় করে থাকলে তা দেখার জন্য আমাদের অথরিটি রয়েছে, মন্ত্রণালয় রয়েছে। এই অথরিটির নির্দেশনার বাইরে আমরা কোনো কাজ করতে পারি না। অতিরিক্ত যদি আমরা কিছু ব্যয় করে থাকি সেটি মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর সেটি দেখবে।

নাসির উদ্দিন বলেন, ‘খাবারের বিল কেন এত হবে, খাবারের জন্য তো মাত্র ৫০০ টাকা করে পার্মানেন্ট। একদিনে কোনো হোটেলের ভাড়া দুই হাজার টাকা, কোনো হোটেলের ৫০০ টাকা, কোনো হোটেলের আড়াই হাজার টাকা এবং কোনো হোটেলে পাঁচ হাজার টাকাও আছে।

হোটেলের ভাড়াই তো ম্যাক্সিমাম এক্সপেনডিচার, তারপর হচ্ছে তাদের খাবার ও যাতায়াত। আমাদের এখানে যাতায়াতের জন্য প্রায় ১৫টি মিনিবাস, দুটি মাইক্রোবাস ও দুটি বাস রেখেছি। এগুলো দিয়ে প্রতিদিন তিন বেলা (সকাল, দুপুর, রাত) তাদের আনা-নেওয়া করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা প্রায় ৩০টি হোটেলে চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী, টেকনিশিয়ান, আনসার সদস্য, সিকিউরিটি গার্ডদের রেখেছি এবং সেখানে তারা তিন সপ্তাহের মতো অবস্থান করছেন। এ পর্যন্ত সবমিলিয়ে তিন হাজার ৬৮৮ জনকে হোটেলে রাখতে হয়েছে। আমরা হিসেব করে দেখেছি, এতে করে আমাদের প্রায় ১১ কোটি টাকার বেশি বিল ইতোমধ্যে চলে এসেছে। তাই আমরা পরবর্তী সময়কে হিসেবে ধরেই ২০ কোটি টাকার মতো বাজেট চেয়েছিলাম।

প্রসঙ্গত, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীদের সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের এক মাসে খাবারের বিল ২০ কোটি টাকা হয়েছে বলে সম্প্রতি খবর ছড়িয়ে পড়ে। এত ব্যয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আলোচনা হচ্ছে। জাতীয় সংসদেও বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে।

ঢামেক স্বাস্থ্যকর্মীদের এক মাসের খাবারের বিল ২০ কোটি টাকা কী করে হয়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *