সংঘর্ষস্থলে চীনের বড় মাপের ঘাঁটি নির্মাণের ছবি ধরা পড়ল উপগ্রহচিত্রে

প্রতিবেদক :
চলমান ভারত-চিন উত্তেজনার মধ্যে যখন ভারত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরাতে রাজি হয়েছে। ঠিক সেই সময়ে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষস্থলের কাছে বড় মাপের ঘাঁটি নির্মাণ কাজ চালানোর ছবি ধরা পড়ল উপগ্রহচিত্রে। প্রাক্তন সেনা কর্তাদের আশঙ্কা, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে চীনা সেনারা ক’দিন পরেই সরে হয়তো যাবে, কিন্তু এরা ভারতের যে অংশ দখল করে নির্মাণকাজ চালাচ্ছে, তা থেকে সরে আসবে কি না, সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

গত ২০ জুন গালওয়ান নদী উপত্যকায় পেট্রোল পয়েন্ট ১৪-এ (গত সপ্তাহের সংঘর্ষস্থল) কেবল একটি তাঁবু ছিল। উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, সেই এলাকায় রীতিমতো কাঠামো তৈরি করে সেনাঘাঁটি বানিয়ে ফেলেছে চিন। বুলডোজ়ার, আর্থ মুভার ব্যবহার করে পাহাড়ের দেওয়াল কেটে রাস্তা বানানো হয়েছে।

তৈরি হয়েছে সেনাদের থাকার জায়গা। বসেছে ভারী অস্ত্রশস্ত্র। পেট্রোল পয়েন্ট ১৪ পর্যন্ত যাতে দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যায়, তার জন্য নদীর উপরে বানানো হয়েছে কালভার্টও। উপগ্রহচিত্র স্পষ্ট করেছে— এই ছবি কেবল পয়েন্ট ১৪-র নয়, গালওয়ান উপত্যকার বড় অংশ জুড়েই দীর্ঘমেয়াদি নজরদারি পোস্ট বানানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চিন। দু’পক্ষের বৈঠকের পরেও তাতে কোনও ছেদ পড়েনি।

নির্মাণকাজের বড় অংশই ভারতীয় অংশে হচ্ছে বলে অভিযোগ। যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি সেনা। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরাতে রাজি হলেও, চীন যে এলাকাগুলিতে অনুপ্রবেশ করে ঘাঁটি গেড়েছে, সেখান থেকে তাদের সরাতে সফল হবে কি দিল্লি?

প্রাক্তন সেনা কর্তাদের বড় অংশের মতে, পাকা কাঠামো তৈরি করে ফেলার পরে সেখান থেকে চীনা সেনা ফিরে যাবে, এমন ভাবা ভুল। রণকৌশলগত ভাবে সুবিধা নিতেই পরিকল্পিত আগ্রাসন চালানো হয়েছে। তাই কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে দর কষাকষি করে কতটা জমি ভারত ফিরে পায়, সেটাই এখন দেখার।

দু’দিনের লাদাখ সফরে আজ নোবরা-সহ সীমান্তের কিছু ফরোয়ার্ড পোস্ট ঘুরে দেখেন সেনাপ্রধান এম এম নরবণে। গত ১৫ জুন রাতে গালওয়ান সীমান্তে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া সেনাদের প্রশস্তিপত্র দিয়ে সম্মান জানান। সেনা প্রস্তুতি ও পরিকাঠামো নিয়ে সেনা কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন।

সেনা সূত্রের খবর, চীনা সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্ররেখা বরাবর অন্য কোনও এলাকা দিয়ে যাতে অনুপ্রবেশ করতে না-পারে, তার জন্য সতর্ক থাকা ও পাহারা বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছেন সেনাপ্রধান।

চীনের সঙ্গে সীমান্ত ঘিরে উত্তেজনা কমাতে কূটনৈতিক স্তরেও আজ বৈঠকে বসে দিল্লি। যুগ্মসচিব পর্যায়ের বৈঠকে পূর্ব লাদাখের সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। সুত্র. আনন্দবজার পত্রিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *