ফেনীতে ব্যাপক অালোচনায় ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানার ফেইসবুক স্ট্যাটাস

ফেনী প্রতিনিধি : ফেনীতে ব্যাপক অালোচনায় জেলা প্রশাসনের  ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানার ১২ মার্চ ৭:৪৫ মিনিটের  ফেইসবুক স্ট্যাটাসটি। কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ছাড়াও ২ টি দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে সেই অালোচিত ফেইসবুক স্ট্যাটাস।

বাংলার দর্পন ডটকম এর পাঠকদের জন্য পুর্নাঙ্গ স্ট্যাটাস টি নিম্মে দেয়া হল।

আমরা এই চরাচরে কয়েকজন মিলে কিছু দুর্বল আর অবাস্তব স্বপ্নের কাছে প্রতিদিন হাজিরা দিই। আমরা এক সবুজ পৃথিবীর ক্ষয়িষ্ণু মরিচীকার পিছনে দলছুট ধাওয়া নিষ্ঠার সাথে বজায় রাখি। আমরা খুব সিরিয়াস, খুব অল্প আর ভীষণ দুর্বল। বলপয়েন্টে বিন্দু বিন্দু প্রতিবাদ পৃষ্ঠাজুড়ে খুব আবেগ নিয়ে ঢেলে দিই।

দশম শ্রেণীর ফুটফুটে কিশোরীর স্কুলের গলি ধরে নিরাপদে বাড়ি ফেরার ভাবনা নিয়ে আমরা হুদাই পেইন খাই। রিকশাওয়ালা জমিরের সাপ্তাহিক গোশতে ১৫০ গ্রাম যাতে কমে না যায় সেটি নিয়ে খুব টেনশন খাই। মাদ্রাসার বেশিরভাগ গরীব বাচ্চাগুলোর প্রতিদিনের খাবারের বিষ আমাদের বেচে থাকাকে খুব বিষাক্ত করে তোলে। আমরা তারুণ্যকে ফয়েল পেপারে পুড়িয়ে ফেলার সকল দুশ্চিন্তা ছোট মাথায় নিয়ে ফেলি, রক্ত আমাদের খুব সস্তা। আমাদের পথেঘাটে স্বাভাবিক মস্তিষ্কের বিচরণ দেখব বলে তোমাদের মত শক্তিশালীদের কাছে আমরা খুব ছোট হয়ে যাই। আমাদের সকালের ঘুম বিষাক্ত জেলী কেড়ে নিয়ে যায়, রাতে আমরা শেরে বাংলা নগর সাহিত্যের ওজন কম অংশে চোখ বুলাই।

 

তোমাদের জিরো টলারেন্সের বাম পাশের উহ্য দশ সীমান্তের কাটাতারে বিক্রি করে তোমরা ভবিষ্যত নিরাপদ কর। শেরে বাংলা নগর সাহিত্য তোমরা বান্ডিলের নিচে লুকিয়ে ফেলতে পারো, আমরা পারি না। দায়িত্ববোধ এর ভার আমরা খুব ছোট আর শীর্ণ কাধে আগপিছ না ভেবেই  নিয়ে ফেলি, তোমরা অনেক ভেবেচিন্তে বোঝা ভেবে ফেলে দাও। তোমাদের বিজ্ঞাপনীয় দায়িত্ববোধ আবার কম রেটে বিক্রিও হয়ে যায়। তোমাদের জানা থাকা দরকার তোমাদের বিকৃতির গন্ধে নর্দমার কীটও তোমাদের এড়িয়ে চলে।

 

আমাদের এই সংখ্যালঘু যাপনের কোন ভবিষ্যত নেই আমরা তা জানি। তারপরো আমরা জীবনকে রেস্টুরেন্টের মেন্যু আর মেসেঞ্জারের কী বোর্ডে চাপিয়ে বালিশের রাতজাগা বাড়িয়ে তুলছি না কেন??

আমরা বাতাসের বিপরীতে পাল তুলেও এত নির্লিপ্ত চোখে জেগে ওঠা সবুজের অপেক্ষা করি কোন সাহসে?

 

জানি না। সত্যি জানি না। শুধু জানি আমাদের ডুবে যাওয়া, হেরে যাওয়া বা পথ হারানোর নিশ্চিত আগামীতে তোমরা উৎসব করবে। রাতের পাখিরা আরো নির্লিপ্ত থেকে গোলাপী জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যাবে।

আর সেদিন ফুটফুটে কিশোরীরা,আক্রান্ত মস্তিষ্ক ঢেকে রাখা তরুণেরা, দারিদ্রের ফাঁদে আটকে যাওয়া গরীব শিশুরা,

যুগ যুগ ধরে প্রতারিত আত্মারা বুক ফাটিয়ে আর্তনাদ করবে। আর্তনাদের উৎসব অথবা উৎসবের আর্তনাদ পত্রিকার শিরোনাম হবে।

 

সম্পাদনা/ এমএ.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *