সোনাগাজীতে আওয়ামীলীগের সম্মেলন: কেন্দ্রের নির্দেশনা উপেক্ষিত, নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ

সৈয়দ মনির আহমদ >>>
অক্টোবরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
সেই লক্ষে কেন্দ্রিয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারাদেশে তৃণমুল আওয়ামী লীগ এর
সকল ইউনিটে সম্মেলন চলছে। সম্মেলন উপলক্ষে ৩জুলাই ফেনী জেলা আ’লীগের সিদ্ধান্ত ও নিদের্শনা অনুযায়ী ৭ জুলাই সোনাগাজী উপজেলা আ’লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ৯জুলাই থেকে ওয়ার্ড ও ২৩ জুলাই থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্মেলন শুরু হয়।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় কমিটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তৃনমূল কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিলেও নুন্যতম মানা হচ্ছেনা সেই নির্দেশনা। ওয়ার্ড কমিটি ঘোষনার আগেই ইউনিয়ন ও পৌর কমিটির সম্মেলন হওয়ায় তৃনমূল নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

সোনাগাজী পৌর সভার ২নং ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ওবায়দুল হক পাটোয়ারী বলেন, অতীতে আমরা দেখেছি দলের ওয়ার্ড কর্মীদের সমর্থন নিয়ে ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি-সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হতেন। নির্বাচিত ওয়ার্ড
আ’লীগ সভাপতি-সাধারন সম্পাদক এর প্রত্যক্ষ ভোটে ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি নির্বাচিত হতো। এবারো আ’লীগ সে ভাবে তৃণমূল কমিটি গঠনের নির্দেশনা
দিয়েছেন। কিন্তু সে নির্দেশনা মানছেনা দায়ীত্বশীল নেতারা।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আফতাব হোসেন মমিন ভুঞা বাংলারদর্পনকে বলেন, দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ওয়ার্ড কমিটি ঘোষনার পরই ইউনিয়ন সম্মেলন হওয়ার নিয়ম। এবং উপজেলা সম্মেলনের পূর্বে অবশ্যই ইউনিয়ন কমিটি ঘোষনা করতে হয় । কিন্তু সোনাগাজী উপজেলায় তৃণমূল আ’লীগের চলমান সম্মেলনে সাংগঠনিক এ নিয়ম মানা হচ্ছেনা। এতে নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।

 

উপজেলা আ’লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নুর নবী লিটন বলেন, উপজেলা কমিটি দীর্ঘদিন অকার্যকর ছিল। উপজেলা ও পৌর কমিটির নেতারা নিজেদের আখের ঘোচাতে ব্যাস্ত ছিলেন , অনেকে দলের পদবী ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এতে নেতাদের প্রতি তৃলমূল কর্মীদের  দীর্ঘদিন  ক্ষোভের  সৃষ্টি হয়েছে, ভোটে তার প্রতিফলন ঘটতে পারে। নিজেদের রক্ষার্থে পকেট কমিটি গঠনের পায়তারা হচ্ছে।

 

উপজেলা আ’লীগ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মফিজুল হক বাংলারদর্পনকে বলেন, জেলা আ’লীগের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলার প্রতিটি ইউনিটের সম্মেলন হচ্ছে। সম্মেলন শেষে সভাপতি-সাধারন সম্পাদক পদ প্রার্থীদের আবেদন সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে জেলা আ’লীগের কাছে পাঠানো হবে। তৃনমুলের ক্ষোভের বিষয়ে তিনি বলেন, যাচাই-বাছাই করতে কিছু সময় লাগছে, কমিটি ঘোষনার পর সকল প্রকার ক্ষোভ দূর হবে।

ফেনী জেলা আওয়ামী লীগ দপ্তর সম্পাদক ও সোনাগাজী উপজেলার তৃণমুল সম্মেলনের সমন্বয়ক শহীদ খোন্দকার বাংলারদর্পনকে বলেন, অক্টোবরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হতে পারে। আগষ্ট মাস আমাদের শোকের মাস। সে কারনে দ্রুত সময়ের মধ্যে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্মেলন শেষ করতে হচ্ছে। ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটিতে সভাপতি-সাধারন সম্পাদক পদ প্রার্থীদের আবেদন গুলো উপজেলা আ’লীগ যাচাই-বাছাই করে জেলা আ’লীগ এর দপ্তরে জমা দিবেন। জেলা আ’লীগ চুড়ান্ত বাছাই করে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষনা করবেন।

তিনি আরও বলেন, নানান কারনে বিতর্কিত, মাদক বিক্রেতা, সন্ত্রাসী ও অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকাতে জেলা আ’লীগ এ প্রক্রিয়ায় কমিটি করার সিদ্ধান্ত নেয়।

বিভিন্ন সময় সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সাময়িক বহিষ্কৃতদের ব্যপারে তিনি বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের ক্ষমতা শুধুই কেন্দ্রিয় কমিটির । সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ গুলো কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এখানো সিদ্ধান্ত জানায়নি আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিয় কমিটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *