৩৫ বছর ধরে বটগাছ লাগাচ্ছেন ইদ্রিস আলী

পাবনা : লাকায় সবাই তাকে চেনে বৃক্ষপ্রেমী হিসেবে। তবে অন্যান্য গাছ লাগালে বটবৃক্ষের প্রতিই তার টান বেশি। ১৮-১৯ বছর বয়সে ‘বটবৃক্ষের ছায়া যেমন, মায়ের স্নেহ লাগে তেমন’ গানটি রেডিওতে শুনে নিজ বাড়ির আশপাশে গাছ লাগানো শুরু করেন; এরপর গত ৩৫ বছর ধরে নিজের সবকিছু বিলিয়ে রাস্তার ধারে গাছ লাগিয়ে চলেছেন বটগাছপ্রেমী ইদ্রিস আলী খান।

ইদ্রিস আলী খানের দাবি, কোনো কিছু পাওয়ার জন্য নয়, ভালো লাগে তাই গাছ লাগান। বাকি জীবন তিনি গাছ লাগিয়ে যেতে চান। এ পর্যন্ত শুধু বটগাছই লাগিয়েছেন পাঁচ শতাধিক।

 

পাবনা শহর থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত পল্লী ফরিদপুর উপজেলার চিথুলিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের বটবৃক্ষ-প্রেমী ইদ্রিস আলী খান। তার গাছ লাগানোর যেমন কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই, তেমনি চারা সংগ্রহে কোনো নির্দিষ্ট বন্দোবস্ত নেই। পুরনো ভবন, তালগাছের মাথা এবং দূর-দূরান্ত থেকে বটবৃক্ষের চারা সংগ্রহ করেন তিনি। আর সেগুলো রোপণ করেন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, হাট-বাজার, কবরস্থান, সড়ক কিংবা পরিত্যক্ত জায়গায়।

‘বাংলাদেশ গড়ি’ রোড শোতে ‘সাদামনের মানুষ’ স্বীকৃতি পাওয়া ইদ্রিস আলী বলেন, বটগাছ ছাড়াও তাল, খেজুর, আম, জাম, মেহগনি, কৃষ্ণচূড়া, বকুল ফুলের গাছ লাগান তিনি। ডাক পেলে অন্যের বাড়িতে গাছের কলম বেঁধে দিয়ে আসেন খুশি মনে।

বটগাছ লাগানোর নেশা এমনই পেয়ে বসেছে তাকে, এখনো বিয়ে করা হয়নি ইদ্রিস আলীর। সংসার, ছেলেমেয়ে নেই, তাই সন্তানের মমতায় গাছকে ভালোবাসেন জীর্ণ ঘরের এই বাসিন্দা।

 

গাছের ছায়াতলে মানুষ বিশ্রাম নেয়। পাখিরা গাছের ফল খায়। এগুলো দেখলে তার খুব ভালো লাগে। সিডরে সুন্দরবনে গাছপালার প্রচুর ক্ষতির খবরে খুব কষ্ট পেয়েছিলেন মানুষটি। সামর্থ্য হলে সুন্দরবনে গিয়ে গাছ লাগানোর ইচ্ছা তার।

ফরিদপুর পৌর মেয়র খ ম কামরুজ্জামান মাজেদ বলেন, ইদ্রিসের মতো মানুষ গাছ লাগাতে এগিয়ে এলে পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষা হতো। এই দেশপ্রেমীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি ও সহযোগিতা করা হলে বাংলাদেশ খ্যাতি অর্জন করবে বলেও মনে করেন তিনি।

এই বটবৃক্ষপ্রেমীকে আগামী দিনে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন ফরিদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *