সাকিব আল হাসান আনলাকি’

বাংলার দর্পন ডেস্ক: তামিম ইকবালের পর সাকিব আল হাসান- দু’জনই লেগস্ট্যাম্পের বাইরে পিচ করে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারির পিছনে অযথা-অপ্রয়োজনে তাড়া করে উইকেট দিয়ে এসেছেন। কাল পড়ন্ত বিকেলে ওপেনার তামিম আর সাকিব আজ সকালে লঙ্কান চায়নাম্যান বোলার ল²ন সান্দাকানের লেগস্ট্যাম্পের বাইরে পিচ করে আরও বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারির পিছু নিয়ে আউট। তামিম রান আউট। আর সাকিব কটবিহাইন্ড।

ওই দুই শীর্ষ তারকা ও নির্ভরযোগ্য পারফরমারের এমন উইকেট বিসর্জন দেয়ায় বাংলাদেশ শুধু দু’ দুটি ভাইটাল উইকেটই হারায়নি, পেছনের পায়েও চলে গেছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, তারা কেন অযথা ওই বলের পিছু তাড়া করে উইকেট বিসর্জন দিয়ে এলেন?

আজ খেলা শেষে অফিসিয়াল মিডিয়া সেশনেও উঠল ওই প্রশ্ন। কেন তামিম-সাকিবের মত পরিণত, অভিজ্ঞ ও দক্ষ ব্যাটসম্যান এমন অপরিণত শট খেলতে গেলেন? এর সঙ্গে আরও একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্নও নিশ্চয়ই জাগছে কারো কারো মনে।

একপক্ষ খানিক সহানুভুতির সুরে বলছেন, আসলে ওই ডেলিভারিটা ছিল ‘চায়নাম্যান’। এটা আসলে বাঁ-হাতি স্পিনারের স্টক ডেলিভারি, ক্রিকেটীয় পরিভাষায় , ‘রং ওয়ান।’ অফস্পিনারের ‘দুসরা ’ বা লেগস্পিনারের ‘গুগলির’ মত।

সাকিব-তামিম হয়ত তা বুঝে উঠতে পারেননি। তাই ব্যাট পেতে দিয়েছিলেন। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনেও উঠল এ প্রশ্ন, ‘সাকিব কেন ঐ লেগস্ট্যাম্পের বাইরের বলকে অযথা খেলতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনলেন?’

সাকিব-তামিমের কেউ মিডিয়া সেশনে আসেননি। এসেছিলেন সৌম্য সরকার। তার ব্যাখ্যা, ‘সাকিব ভাই আনলাকি।’ ডেলিভারিটি ছিল, ‘চায়নাম্যান।’ বাঁ-হাতি স্পিনারের উল্টো ডেলিভারি।

বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের লেগস্ট্যাম্পের আশপাশে পড়ে  আরও বেরিয়ে যাচ্ছিল। সেটা তিনি ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন। সাকিব ভাই জেনে বুঝেই কব্জির মোচড়ে ব্যাট চালিয়েছিলেন। ফাইন লেগে কেউ ছিল না। ব্যাটে ঠিক মত লাগলেই অন্তত দু’রান পেয়ে যেতেন; কিন্তু জায়গামত লাগেনি। আর লাগেনি বলেই লঙ্কান কিপারের গ্লাভসে জমা পড়তো না।’

সৌম্য সরকারের এমন সাজানো গোছানো ব্যাখ্যাই বলে দেয় ওই আউট নিয়ে ড্রেসিং রুমে বিস্তর কথা হয়েছে। সৌম্যর বয়স কম। দলেও নবীন। সিনিয়র সদস্য সাকিব আল হাসান ভুল করেছেন? হল ভর্তি সাংবাদিকের সামনে তা স্বীকার করার মত পর্যায় এখনো আসেনি সৌম্য সরকারের।

কিন্তু সাকিব যে টেস্টেও উচ্চাভিলাষী, অপ্রয়োজনীয় এবং নিজের ইচ্ছেমত শট খেলে বার বার আউট হচ্ছেন, তার জবাব দেবে কে? ওয়েলিংটনে ডাবল সেঞ্চুরির পর ক্রাইস্টচার্চে দলের বিপদে সাকিব স্কোয়ার কাট করে গালি ও পয়েন্টের মাঝামাঝি ক্যাচ দিয়ে ফেরা সাকিব সম্পর্কে ওই ম্যাচের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তামিম বলেছিলেন, ‘সাকিব তো ওভাবেই খেলে রান করে। সেটাই তার স্টাইল।’

মানা গেল সাকিব একটু বেশি সাহসী। আক্রমণাত্মক। টেস্টেও চালিয়ে খেলতে ভালবাসেন। শটস খেলা তার পছন্দের। তাই বলে সব সময়? আজ খেলার যে অবস্থা ছিল, তাতে বলের চেয়ে বেশি রান করার কি দরকার ছিল?

দিন শেষে সৌম্য জানালেন, তাদের গেম প্ল্যান ছিল, সারা দিন উইকেটে টিকে থাকা। তাই যদি হবে, তাহলে ওয়ানডে মেজাজে ১৯ বলে ২৩ রান করে সাকিবের মত সিনিয়র মোস্ট প্লেয়ারের লেগস্ট্যাম্পের বাইরের বল তাড়া করে আউট হওয়া কেন?

এ প্রশ্নের জবাব নেই ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনের কাছেও, ‘কি আর বলবো বলুন? সাকিব তো ওভাবেই খেলে খেলে এতদুর এসেছে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *