সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন | বাংলারদর্পন

শেখ আমিনুর হোসেন, সাতক্ষীরা ব্যুরো চীফ:

বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে নির্বাচনে অনিয়ম, দূর্ণীতি ও নির্বাচন পরবর্তী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নেতা কর্মীদের উপর সহিংসতার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।শুক্রবার সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সস্মেলন করে এ অভিযোগ করেন কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা শেখ আতাউর রহমান।

সংবাদ সম্মলন লিখিত বক্তব্যে পাঠ করে শেখ আতাউর রহমান বলেন, তাকে দলীয়ভাবে নৌকা প্রতীক নির্বাচন করার অনুমতি দেওয়ার পর বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে সাঈদ মেহেদী ও মেহেদী হোসেন সুমনকে নির্বাচন থেকে বিরত থাকার কথা বলা হলেও তারা শোনেননি। নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজস করে ঘোড়া প্রাতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ মেহেদী নির্বাচন চলাকালিন নৌকা প্রতীকের এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দিয়ে ভঝট লুটপাট করেছেন। কালিগঞ্জ ভোট কেন্দ্র ছিল ৭৮টি।

নিয়ম বহির্ভুতভাবে  জাময়া আলেয়া কাদরিয়া আলিয়া মাদ্রাসাসহ কয়েকটি নাম সর্বস্ব মাদ্রাসার শিক্ষককে নিয়ম বহির্ভুতভাব নির্বাচনে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ১৭, ১৮, ১৯ ও ২০ গ্রেডে কর্মরত কর্মচারিদের ভোট গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না মর্মে নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশ থাকলেও উপজেলা মৎস্য অফিসের সহায়ক আব্দুল বারী, পোষ্ঠম্যান জাকির হোসেন, মোঃ আরিফুজ্জামান, শেখ আব্দুল হামিদ, শেখ ফজর আলী এবং ওমর ফারকসহ কয়েকজনকে নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

কালিগঞ্জ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের নকল নবীশ রমেশ চন্দ্র বৈদ্য, সোহরাব হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, এসএম খায়রুল আলম, স্বপন কুমার ও হাবিবুর রহমান, রাজীব ঘোষ, নূর হোসান, লক্ষণ ঘোষ, সুধীর কুমার ঘোষ, চিরঞ্জিৎ ঘোষ, আরিজুল ইসলাম, ল্যাব সহকারি রহিমা খানম, জাহাঙ্গীর আলম, রায়হান পারভেজ, ন্যাশনাল সার্ভিসে কর্মরত সুভাষ মণ্ডল, আঞ্জুয়ারা খাতুনকে নিয়ম বহির্ভুতভাবে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব দিয়ে ভোট কারচুপির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। একই প্রতিষ্ঠানের একাধিক কর্মকর্তা- কর্মচারিকে নিয়ম বহির্ভুতভাবে একই ভোট কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া ছাড়াও কালিগঞ্জ উপজেলা ল্যাবরেটরি স্কুলের মত নন-এমপিও স্কুলের ১০জন শিক্ষককে নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সরকারি অফিসগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমান প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা থাকার পরেও পূর্ব কর্মরত ব্লক সুপার ভাইজার, উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্বে দিয়ে ভোট অনিয়মের সূযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নিজদেবপুর উজ্জীবনী ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক ইকবাল আলম বাবলুর স্কু থেকে সকল শিক্ষককে ভোট গ্রহণের কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সহকারি রিটার্ণিং অফিসার হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এর দায় এড়াতে পারেন না বলে দাবি করেন আতাউর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে ঘোড়া প্রতীক বিজয়ী সাঈদ মেহেদীর বিরুদ্ধে নির্বাচন পরবর্তী নাশকতা মামলার আসামী জামায়াত, শিবির ও বিএনপি’র কর্মীদের নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের উপর হামলা, দলীয় অফিস ভাঙচুর ও অফিসে তালা লাগানোর অভিযোগ করা হয়। একইভাবে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে মারপিট করার অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি বাংলাদশ সরকার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

এ বিষয়ে জানত চাইলে সাঈদ মেহেদী বলেন, হেরে যাওয়ায় শেখ আতাউর রহমানসহ কয়েকজন ভুল বকছে।

কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহীন শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, আতাউর রহমানের অভিযোগ ঠিক নয়। কালিগঞ্জে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাড. মোজাহার হোসেন কান্টু, কালিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি জিএম শওকত হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ছোট, ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মলল হক, ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান গাইন, ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল হোসেন খোকন, ইউপি চেয়ারম্যান আরিজুল পাড় প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *