খুলনা প্রতিনিধি :
দৈনিক খুলনার কন্ঠের সম্পাদক শেখ রানা ও প্রকাশক ইশরাত ইভা’র বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭/৬৬ ধারায় খুলনা খালিশপুর থানায় গত ২৬শে জানুয়ারী একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলার এজাহারে উল্লেখ্য যে, একটি ফেসবুক আইডি ও চাঁদা দাবী করছে সাংবাদিক দম্পত্তি। এরই মধ্যে বিভিন্ন সাংবাদিক মহল ও রাজনৈতিক সংগঠন এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়ে আসছে।
২৬শে জানুয়ারী মামলা রুজু করে খুলনা খালিশপুর থানা খুলনা জজ কোটে প্রেরণ করে। কিন্তু ২৬শে জানুয়ারী থেকে ৫ই মার্চ পর্যন্ত মামলার তদন্ত শেষ করতে পারিনি খুলনা খালিশপুর থানায় কর্ত্যবরত তদন্ত কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে সাংবাদিক দম্পত্তির সাথে কথা হলে তারা জানান, মামলা রুজু হয়েছে কোন প্রকার তদন্ত ছাড়া। মামলা রুজুর পরে তদন্ত কর্মকর্তা এস আই রফিকুল ইসলাম আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং মামলার প্রকৃত সত্য ডকুমেন্টস সহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের কপি চান। আমরা তদন্ত কর্মকর্তা কে সকল প্রকার কাগজপত্রাদি ও প্রতিবেদনের ভিডিও এবং স্বাক্ষীদের কথোপকথন রেকর্ড সহ প্রতিবেদনে উল্লেখিত পরিবারের সদস্যদের জবানবন্দি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দিয়েছি। এমনকি মামলার এজাহারে যে ফেসবুক আইডি ‘শরিফুল ইসলাম বাবু’ নামে মামলা রুজু হয়েছে সেই ফেসবুক আইডির আসল মালিক সহ তার বায়োডাটা ও ফোন নাম্বারও তদন্ত কর্মকর্তা কে দেয়া হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের থানায় এনে সংবাদের সত্যতা যাচাই করার জন্য তাদের কাছ থেকে মৌখিক ও লিখিত ভাবে জবানবন্দি রেকর্ড করেন। তারপরও তারা কেনো এই মামলা এভাবে রাখছেন সেটা আমরা বলতে পারছি না।
খুলনা খালিশপুর থানার এস আই রফিকুল ইসলাম যিনি এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তার সাথে যোগাযোগ হলে তিনি জানান, মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে আপনাদেরকে জানাবো।
খুলনা খালিশপুর থানার ওসি তৈয়েমুর ইলি’র সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, মামলার বিষয়ে এই মূহুর্তে কিছু বলতে পারছি না। একটু ব্যস্ত আছি পরে কথা বলবো।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য বৃদ্ধ শাহিনুর বেগম জানান, আমাদের কে থানায় ডেকেছিল। আমরা সবাই সন্ধ্যার পরে থানায় যাই এবং এস আই রফিকুলের কাছে মৌখিক ও লিখিত ভাবে আমরা জানাই। দৈনিক খুলনার কন্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশক সাংবাদিক দম্পত্তি আমাদের দূরঅবস্থার কথা একই সাথে আমাদের উপর অত্যাচারের কাহিনী তুলে ধরেছে সমাজের কাছে যা পুরোপুরি সত্য। যার সত্যতা এখানকার সাধারণ মানুষ সহ পুলিশ প্রশাসন জানেন, কারন হিসেবে তিনি বলেন, ২০১৪/১৫ সালে খালিশপুর থানায় এস আই আব্দুল হালিম ও এস আই জেলহাজ্ব উদ্দিন দুটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে কাহিনী সহ তকদির হোসেন বাবু প্রকৃত একজন ভূমিদস্যু, সে অসহায় মানুষের জমি দখল করেন সহ একাধিক অভিযোগ তুলে ধরেছেন তাদের তদন্ত রিপোর্টে।
দৈনিক খুলনার কন্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশকের নামে দায়ের কৃত তথ্য প্রযুক্তি আইনে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ রুপেই মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে জানান খুলনার কন্ঠের সম্পাদক শেখ রানা। তিনি আরো বলেন, মামলায় ফেসবুক আইডি বা মোবাইল ফোনে তার কাছে অর্থ চাওয়া হয়েছে তা সবকিছুই মিথ্যা ও সাজানো। যার কোন কিছুর সাথেই খুলনার কন্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশকের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা নেই। মামলার এজাহারে যে ফেসবুক আইডি উল্লেখ করা হয়েছে সেটা খুলনার কন্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশকের নয়। মামলার এজাহারে বাদী যেহুতো উল্লেখ করেছে মোবাইল ফোনে চাঁদা দাবী করেছে সেহেতু মামলার এজাহারে তিনি কোন মোবাইল নাম্বার উল্লেখ করেন নাই। কোন নাম্বার থেকে চাঁদা দাবী করেছে বা কোন নাম্বারেই চাঁদা দাবী করেছে সেটাও তিনি উল্লেখ করেননি মামলার এজাহারে।
দৈনিক খুলনার কন্ঠের প্রকাশক ও ভোরের কলামের খুলনা ব্যুরো প্রধান ইশরাত ইভা জানান, জমি দখলদারী এবং অসহায় পরিবারের একটি চার পর্বের রিপোর্ট তৈরী করি। সেখানে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে জমিদখলদারী হিসাবে পরিচিত তকদির হোসেন বাবুর চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইশরাত ইভা চার পর্বের প্রতিবেদনের দুটি পর্ব প্রকাশিত পায় তখনই তকদির হোসেন বাবু সুকৌশলে আমাদের নামে সাজিয়ে মিথ্যা মামলা থানায় রুজু করে। যাতে করে আমি আমার বাকি প্রতিবেদনের বাকি পর্ব গুলি প্রকাশ করতে না পারি তারই ধারাবাহিকতায় এই মামলা। তারপরও আমি মামলা হওয়ার পরেও প্রতিবেদনের তৃতীয় পার্ট প্রকাশ করি। যা খুলনার কন্ঠ সহ একাধিক অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়া প্রকাশিত হয়। যা খুলনা শহর সহ দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।