নোয়াখালীতে স্ত্রী হত্যার লোমহর্ষক বর্ণণা দিলেন ঘাতক স্বামী(ভিডিও সহ)

মো ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী প্রতিনিধি:

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন – https://m.youtube.com/watch?v=4NNYIYfXdNs
পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে নতুন বাড়িতে এনে ঠান্ডা মাথায় গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে হত্যার পর ঘরের মধ্যে অধ্য মাটি চাপা দিয়ে দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন ঘাতক। বাঁচার উদ্দেশ্যে নিজের ভগ্নিপতি ও নিজ পিতার কাছে স্বীকার করেন খুনি মিল্লাদ। ঘটনাটি জানতে পেরে সু-কৌশলে স্থানীয় বাজার সেক্রেটারী আবুল কাশেম ও ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশারের মাধ্যমে থানায় খবর দিয়ে ধরিয়ে দেন তার পিতা নিজেই। ঘটনাটি নিয়ে নোয়াখালী জুড়ে বইছে আলোচনার ঝড়। স্বরেজমিনে গিয়ে জানতে চাইলে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ঘটনাটি ঘটে নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলার ৭নং পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের সেলিম বাজার বেলার সমাজ নামক স্থানে। থানা সূত্রে ও স্বরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভোলা জেলার মনপুরা থানার বাতানখালি গ্রামের ৫নং ওয়ার্ডে শাহজাহানের পুত্র মিল্লাদ (৩৮) ও পাশ্ববর্তি সাকুরিয়া গ্রামের ১নং ওয়ার্ডের মৃত আবদুর রশিদের মেয়ে কহিনুর বেগম (৩০) প্রায় ১৫ বৎসর আগে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে স্বামী মিল্লাদ যৌতুকের দাবীতে অনেক সময় মারধর করতো। বিগত কয়েক বৎসর ধরে মিল্লাদ তার ৩ সন্তানকে নিয়ে ভোলার মনপুরা থেকে নোয়াখালীর মাইজদী শহরে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। পেশায় মিল্লাত একজন অটোরিক্সা চালক। বেশ কিছুদিন থেকে পুনরায় যৌতুকের দাবীতে তার স্ত্রী কহিনুর বেগমকে নির্যাতন শুরু করে। এতে কহিনুর বেগম ভাড়া বাসায় থাকতে অস্বীকৃতি জানালে ঘটনার স্থলে মিল্লাদ আগে থেকে ক্রয়কৃত বাড়িতে নিয়ে আসে। আসার পর দিন থেকে পারিবারিক কলহের জের ধরে গত ২রা মার্চ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কহিনুর কে গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে হত্যা করে ঘরের ভিতরে আংশিক গর্ত করে অর্ধ মাটি চাপা দিয়ে রাখেন।
শুক্রবার (৩ মার্চ ) দিনভর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন মিল্লাদ। বাচাঁর জন্য তার পিতা শাহজাহান ও তাঁর ভগ্নিপতি মন্নান ডুবাইওয়ালার কাছে খুনের কথা স্বীকার করেন, এতে তারা মিল্লাদ কে বাঁচানোর আশ্বাস দিয়ে স্থানীয় সেলিম বাজারের সেক্রেটারী আবুল কাশেম ও ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশার মঞ্জু চর জব্বার থানায় খবর দিলে রাত ৯টার দিকে এসআই মোঃ ইকবাল হোসেন ও এসআই সফিকুল সহ একটি ফোর্স রাত ১২টায় ঘটনার স্থলে পৌছে লাশটি উদ্ধার করে ঘাতক মিল্লাদকে নিয়ে থানায় আসেন। ঘাতক মিল্লাদ প্রাথমিক ভাবে খুনের ঘটনা স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে মৃত কহিনুর বেগমের ভাই বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে চর জব্বার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মামলা নং- ০২/১৭।
চর জব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নিজাম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতন্তের জন্য পাঠায় এবং ঘাতক মিল্লাদকে থানা হাজতে রাখা হয়। তার বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত মিল্লাদের সাথে খুনের বিষয়ে জানতে চাইলে সে খুনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, শহরে ভাড়া বাসায় থাকা অবস্থায় অজ্ঞাত কিছু ব্যক্তির সাথে পরকিয়ায় লিপ্ত হয় কহিনুর বেগম। এতে সে বাধা দিলে প্রায় তাদের দুইজনের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি হয়। ঘটনার দিন এসব বিষয় নিয়ে বাকবিতন্ডের এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে কহিনুর বেগমকে হত্যা করেন তিনি।

 
সম্পাদনা/ আবদুল্লাহ রিয়েল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *