বাংলাদেশ নামে আর্মেনিয়ার একটি জেলা আছে | বাংলারদর্পন

নিউজ ডেস্কঃ ভ্রমন পিপাসু এক বাংলাদেশী নাগরিকের ফেসবুক স্টাটাসে জানা গেছে বাংলাদেশ নামে আর্মেনিয়ার একটি জেলা আছে।

ওই স্টাটাসে তিনি লিখেন,

ইয়েরেভান এয়ারপোর্টে অবতরণ করে ডলার এক্সচেঞ্জ করতে গেলে একজন আর্মেনিয়ানের সঙ্গে কথা হয়।আমরা বাংলাদেশ থেকে আসছি শুনেই তিনি ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে যা বললেন তার অর্থ হচ্ছে, ‘ইয়েরেভানের একটি জেলার নাম বাংলাদেশ।’ আমাদের কৌতুহলি জিজ্ঞাসা, ইজ ইট ফান? আর ইউ শিওর? জবাব- নো নো, ইটস নট ফান। ইউ ক্যান ভিজিট দেয়ার।

‘বাংলাদেশ নামে আর্মেনিয়ার একটি জেলা আছে’ প্রথমবারের মতো এ কথা শোনার পর নিজের কানকে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না। এতে একটু বিস্ময় নিয়েই বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে এলাম।বাইরে আমাদের রিসিভ করতে অপেক্ষা করছিলেন মূকাভিনয় উৎসব আয়োজক কমিটির সদস্যরা।

বের হতেই দেখলাম ‘লিওনিড ইয়েঙবারিয়ান ইন্টারন্যাশনাল মাইম ফেস্টিভাল’ লেখা পোস্টার হাতে দাঁড়িয়ে আছেন একজন দীর্ঘদেহী তরুণ। আমাদের দেখে এগিয়ে এলেন। তার সঙ্গে আসলেন একজন তরুণী। প্রাইভেটকারে বিমানবন্দর ত্যাগ করতে করতে কথা হয় তাদের সঙ্গে। স্মার্ট তরুণ বাগরাত এবং তরুণী আর্মেনি মুহতাসিয়ান।মুহতাসিয়ান ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী। একজন আর্টিস্ট এবং একইসঙ্গে জবও করেন।বিভিন্ন কথা প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি জেলা রয়েছে ইয়েরেভানে।আমরা এরপরও বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারছিলাম না। আবার মনে মনে ভাবলাম থাকতেও পারে। আমাদের ঢাকায় যদি আর্মানিটোলা থাকতে পারে তবে আর্মেনিয়ায় বাংলাদেশ নামে কিছু থাকতে পারবে না কেন। তাই আমরা আর্মানিটোলার ইতিহাসটি সংক্ষেপে তাদেরকে জানালে তারাও কৌতুহলী হলেন।

আর্মেনিয়ায় বাংলাদেশ নামক জেলায় ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান নিয়েই রাতে আমাদের জন্য বুকিং করা হোটেলে উঠলাম। এরপর রাতেই ফাইনাল পরিকল্পনা করলাম, সকালে আমাদের প্রথম কাজ হবে এখানকার ‘বাংলাদেশ’ সফর করাসকালে উৎসব আয়োজক কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক এনার সঙ্গে সাক্ষাতেও জানতে চাইলাম বাংলাদেশ জেলা প্রসঙ্গে। কেন এই নামকরণ, বিষয়টি সম্পর্কে তিনিও স্পষ্ট নন। তবে তার ধারণা, হয়তো কোন ঐতিহাসিক কারণ রয়েছে। তার সঙ্গে আলাপ সেরেই আমরা মস্কুভিয়ান স্ট্রিট থেকে ৯৯ নাম্বার বাসে রওনা হলাম বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে।

পাহাড়-পর্বতে ঘেরা আর্মেনিয়ার রাজধানী ও বৃহত্তম শহর ইয়েরেভানের আয়তন ৮৮ বর্গমাইল। উচ্চতা ৯৮৯.৪ মিটার (৩২৪৬.১ ফুট)। মূল কেন্দ্র রিপাবলিক স্কয়ার থেকে যতো সামনে এগিয়ে যাচ্ছি ততোই নিচে নেমে যাচ্ছি। ওদিকটায় রাস্তার দুপাশে সারি সারি গাছ। কিছু সবুজ মাঠও আছে। আরেকটু সামনে গিয়ে বিশাল এক পুকুরের দেখা মিলল। পাহাড়ে সবুজ বৃক্ষও দেখতে পাচ্ছি। ৩০ মিনিট পর পৌঁছলাম। দারুণ সাজানো সুন্দর এই বাংলাদেশ। রাস্তায় বিল বোর্ডে ইংরেজি বানানের ‘বাংলাদেশ’ নাম খুঁজে পেলাম না। আর্মেনিয়ান ভাষায় সবকিছু লেখা। কিন্তু স্থানীয়রা উচ্চারণ করছেন ‘বাংলাদেশ’। গাড়ি চালক বলছেন, ‘বাংলাদেশ পৌঁছে গেছি, নেমে পড়ুন’।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *