ময়মনসিংহে ২শ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করে নৌকায় ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ফের নৌকা মার্কা ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আগামী ২১০০ সাল পর্যন্ত উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছি। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নয়নশীল ও সমৃদ্ধিশালী দেশ। দেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত।

শুক্রবার (২ নভেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে আপনাদের সহযোগিতা চাই। নৌকা মার্কায় ভোট চাই। যারা আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন তারা হাত তুলে ওয়াদা করেন।

এসময় উপস্থিত জনতা হাত তুললে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি সবার সহযোগিতা চাই। সবাই সুন্দরভাবে বাঁচবেন। উন্নত জীবন পাবেন, সেটা আমরা চাই।

তিনি বলেন, জাতির পিতার ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। ২০২০ সাল জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সাল স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমরা উদযাপন করবো। ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সাল মুজিব বর্ষ হিসেবে আমরা ঘোষণা দিয়েছি। এর মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্রমুক্ত করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর আওয়ামী লীগ করে উন্নয়নের রাজনীতি। আমরা করি উন্নয়নের রাজনীতি আর বিএনপি করে দুর্নীতির রাজনীতি। তারা হাওয়া ভবনের নামে খাওয়ার রাজনীতি করেছে।

জাতির জনককে সপরিবারে হত্যার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ তার আপনজনকে হত্যার বিচার চাইতে পারে, আমাদের সেই বিচার চাওয়ার সুযোগও দেওয়া হযনি। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করতে চেয়েছিল জিয়াউর রহমান।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করে। এই ময়মনসিংহে তারা পাকিস্তানি বাহিনীর মতো অত্যাচার করেছিল।

২০০১ সালে আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্র করে নির্বাচনে হারানো হয় বলেও অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তারপর ২০০৮ সাল পর্যন্ত এ দেশকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এর আগে আগে ১৯৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ময়মনসিংহ নতুন বিভাগ, এ বিভাগের উন্নয়নে সবার সহযোগিতা চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। এছাড়া ময়মনসিংহে একটি শিক্ষাবোর্ড, বিভাগীয় স্টেডিয়াম ও নভোথিয়েটার নির্মাণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে ময়মনসিংহ বিভাগের জন্য ১৯৫টি প্রকল্পের নাম উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যে জামালপুর-জয়দেবপুর রেল লাইন মেরামত এবং নেত্রকোনায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করা হচ্ছে। ময়মনসিংহ বিভাগকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এতে শিল্প কারখানা স্থাপন হবে। সেখানে বিনিয়োগ হবে। ফলে মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

আ.লীগ সভাপতি বলেন, ইতোমধ্যে ময়মনসিংহের কয়েকটি জেলা ও উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ বিতরণ করা হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদ খনন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল করা হবে। বিআরটিসি চালক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করা হবে। সরকারি আনন্দমোহন কলেজে দশ তলা একাডেমিক ভবন উদ্ধোধন করা হবে।

জনসভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কোনও চাওয়া-পাওয়া নাই। বিদায়ের আগে শুধু এই কথা বলতে চাই- আপনাদের সেবা করাই আমার কাজ।

বক্তব্যের শেষে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, রিক্ত আমি, নিঃস্ব আমি দেবার কিছু নাই আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *