শেখ আমিনুর হোসেন,সাতক্ষীরা ব্যুরো চীফ: সাতক্ষীরা শহর ডাস্টবিনের কারণে পচা দুশহরে পরিনত হয়েছে। সাধারণ লোকজন বলছে এর ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে আর বাড়ছে রোগ জীবানু। আর পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে তাদের জনবলও সরঞ্জমাদির অভাব আছে। সে কারণে ইচ্ছা থাকলেও তারা শহর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারছে না । আবার আইলাও সিডর এরপর শহরের লোক
সংখ্যাও বেড়ে গেছে। সরজমিনে বুধবার সাতক্ষীরা শহরে এই তথ্য সংগ্রহ কালে এসব দৃশ্য চোখে পড়ে।
শহরের পাকাপুলের পশ্চিম পাশে হোটেল কর্মচারী লিপু, মোটর মেকানিক মহিদুল, দোকানদার হান্নান জানান, সকালে খাল ধারের রাস্তা দিয়ে মানুষ হাটতে বের হয়। দূগন্ধের জন্য হোটেলের উত্তর পাশে রাস্তা ধারের ডাস্টবিন বন্ধ করে দিয়েছে পৌরসভা। কিন্তু এলাকার লোকজন পচাবাসি খাবারও ময়লা আবর্জনা ফেলছে ডাস্টবিনের পাশে। ফলে এই রাস্তা দিয়ে যেতে দারুন কষ্ট পেতে হচ্ছে পথচারিদের। এর পর প্রাণ সায়েরের খালের পশ্চিম পাশের রাস্তা দিয়ে যেতে
যেতে দেখা গেছে, এক থেকে দেড়শ গজ পরপর আছে ডাস্টবিন । এসব ডাস্টবিনের একই অবস্থা। কুকুর গুলো ডাস্টবিনের উচ্ছষ্ট খাচ্ছে আর টানা টানি করছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটছে দূগন্ধ । এর পর পলাশপোল বউ বাজারে যেতেই বাতাসে ভেসে আসল দূগন্ধ। পাশেই তাকিয়ে দেখি ডাস্টবিন। ডাস্টবিন সংলগ্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে মাংস ও মাছ। সেখানে গৃহবধু নাজমা খাতুন ও নাছিমা খাতুন জানান, দূগন্ধ কারণে বউ বাজারে আসতে অনেক সমস্যা হয়। এছাড়া ডাস্টবিনের মসা মাছি খাদ্য উপরে বসে জীবানু ছড়াচ্ছে। বাস টারমিন্যালে রাস্তার উপরে ফেলা হয়েছে পচা ময়লা আবর্জনা। মানুষ দূগন্ধ নীরবে সহ্য করে পথ চলছে। সাতক্ষীরা বাসমালিক সমিতির আহবায়ক অধ্যক্ষ আবু আহম্মেদ জানান, তারা অনেক বার পৌরসভাকে বলেছে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। সদর হাসপাতালের ভিতরে পশ্চিম পাশে ও উত্তর পাশে রোগীর স্বজনরা হেটে যেতে পারছে না। দুই পাশেই আছে দুটি ডাস্টবিন। ঠিক এই সময় চোখে পড়ল ৩টি গরু ডাস্টবিনের ময়লা খাচ্ছে।
ভূমিহীন নেতা আব্দুস ছামাদ, কাপড় ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান জানান, পার্কের ভিতরে শহীদ আব্দুর রাজ্জাকের কবরের পাশ দিয়ে এখন আর যাওয়া যায় না। কবরের পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলে ঘুটো করে রেখেছে।
কোট এলাকার কম্পিউটার দোকানদার মোবাশ্বের ও হোটেল ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম জানান, কোটের সামনে রাস্তার ধারে রাত ১২টার পর মানুষ ময়লা আবর্জনা ফেলে রেখে যায়। এসব থেকেতো দুগন্ধ ছড়াবেই। কোটের সামনে রাস্তার ধারে আগে একটা ডাস্টবিন ছিল। সেটা কে বা কারা ভেঙ্গে দিয়ে গেছে। সঙ্গীতা মোড়ে ব্যাংকের সমানে থেকে হাটের মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুধারে ময়লা ফেলে রেখেছে। অথচ হাটের মোড়ে রয়েছে ময়লা ফেলার বড় একটা ডাস্টবিন।
এদিকে শহরের পাকাপোল থেকে শুরু করে বড় বাজার পর্যন্ত প্রাণ সায়েরের খালে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে খাল প্রায় ভরাট হয়ে গেছে । স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছু দিন আগে এই খাল কাটা হয়েছে । প্রতিনিয়ত খালের ভিতরে বাজারের ময়লা ফেলার কারনে, খাল এখন ড্রেনে পরিণত হয়েছে । আবার ময়লা পচে খালের পানি দূষিত হয়েছে। এলাকার লোকজন দু:খ প্রকাশ করে এই প্রতিবেদককে জানালেন পৌরসভা কর্তৃপক্ষ একটু নজর দিলে প্রাণ সায়েরের খাল আবার প্রাণ ফিরে পেত। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারণে খাল হয়েছে ডাস্টবিন ।
পলাশপোল এলাকার নিকিরি পাড়ার সেলিম, রায়হান, লুৎফর জানান, তাদের এলাকায়
ডাস্টবিন আছে। একদিন পরপর পৌরসভার লোকজন এসে ডাস্টবিন পরিস্কার করে নিয়ে
যায় । সমস্যা হল শহরের মধ্যে অসংখ্যা হোটেল রয়েছে। এসব হোটেলের পানি সরানোর কোন পথ নেই। নেই কোন ডাস্টবিন।
শহরের আমতলা এলাকার শাহিন,রসূলপুর এলাকার মাসুম, কুকরালীর শহিদুল এই
প্রতিবেদক জানান পৌরসভার প্রতিটি ওয়াডের একই অবস্থা। পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকায় মানুষ যত্রতত্র পচাবাসি ময়লা আবর্জনা ফেলাচ্ছে ।
পৌর সভায় পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক ইদ্রিস আলী জানান, পৌরসভা ডাস্টবিন আছে একশ
১০টি। তার মধ্যে সচল আছে ৫০/৬০ টি। এই ডাস্টবিন পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য তাদের লোকবল আছে ২৫ জন, ৩টি ট্রাক, ২টি আলম সাধু ,ট্যানেচফার স্টেশন আছে ২টি হাটের মোড়ে. ডামপিন স্টেশন ১াট বিনের পোতায়। আর ডাস্টবিন সংলগ্ন এলাকায় ল্যাম্পপোস্ট না থাকার কারণে রাতের বেলায় পরিস্কার করতে পারছে না
শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে তাদের আরও ৩টি ট্রাক লাগবে। পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
জেলা নাগারক কমিটির আহরায়ক প্রভাষক আনিসুর রহিম জানান, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ
কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু নাগরিক সচেনতা সৃষ্টি ছাড়া এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব না ।
সদর হাসপাতালের সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ এবাদুল্লাহ জানান, দুগন্ধের কারণে পানি বাহিত, বাতাস বাহিত, চর্ম, এলার্জি, স্বাস কষ্টসহ বিভিন্ন ধরণের রোগ হতে পারে।
পৌরসভায় যেয়ে প্যানেল মেয়র ফারহাদিবা খান সাথীর কাছে জানতে তিনি এব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি ।
পৌর মেয়র তাজকিন আহম্মেদ চিসতি মুঠো ফোনে এই প্রতিবেদককে জানান, আমাদের প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় সব কাজ করে উঠতে পারছি না। তবে এ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হাওয়াই দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবো বলে তিনি জানান।