সাক্ষাতকার গ্রহন করেছেন শেখ আমিনুর হোসেন ,সাতক্ষীরা ব্যুরো চীফ:
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাধারন ভোটারদের কৌতুহল বাড়ছে। হাটে বাজারে মোড়ে মোড়ে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। কে হবে সাংসদ? কোন দল থেকে মনোনয়ন পাবে? জলপনা কল্পনার শেষ নেই। নিজ পছন্দের মানুষের ছাপাই গাইছেন অনেকেই। গিয়েছিলাম শ্যামনগর প্রত্যান্ত অঞ্চলে সাধারন মানুষের কাছে আগামী নির্বাচন কতটুকু প্রভাবিত করছে তা জানার জন্য।
সংসদীয় আসন-১০৮, সাতক্ষীরা-৪, শ্যামনগর উপজেলা ও কালিগঞ্জ উপজেলার আংশিক নিয়ে গঠিত। মোট ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই আসন। এর মধ্যে শ্যামনগর ২২টি ইউনিয়ন ও কালিগঞ্জের ৮টি ইউনিয়ন এই আসনের অর্ন্তভূক্ত। এই আসনে মোট ৩ লক্ষ ৯৩ হাজার ৬৪৭ টি ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ২লক্ষ্য ৫৩ হাজার ভোটার শ্যামনগরের। এখানে ১৩৯ কেন্দ্রে ভোট গ্রহন হবে।
২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারী ১০তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন এস এম জগলুল হায়দার। বিগত ৪ বছর ৯ মাসে তাঁর সাফল্য অনেক। তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ৪টি প্রতিষ্ঠান সরকারী করন হয়েছে। শতকারা ৮০ ভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় আছে। অসংখ্য ব্রীজ নির্মান সহ ব্যাপক সাফল্য কথা জানিয়েছেন তিনি।তবে ওই আসনে মহাজোটের মধ্যে আওয়ামীলীগের ৫ জন ও জাতীয় পাটির ২ জন জাসদের একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। কে পাবেন মনোনয়ন। এটা কেন্দ্রের বিষয়। তবে তৃনমূল পর্যায়ে মানুষ মহাজোটের প্রার্থী হিসাবে কাকে মনোয়ন দিলে সন্তুষ্ট এটা এখন তা স্পষ্ট। আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনেে রেখে দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলার দর্পনের পক্ষ থেকে একান্ত সাক্ষাৎকারে এস এম জগলুল হায়দারের নিকট জানতে চাওয়া হয়েছিল কেন আবার ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী?
তিনি বাংলার দর্পনকে জানান, ৪ বছর ৯ মাস ক্ষমতা থাকা কালে এই আসনে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। প্রতিটা সেক্টরে আমার উন্নয়নের অবদান রয়েছে। সেবামূলক কাজে আমি নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছি। জনগনের দোরগোড়ায় যেয়ে সেবার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। জনগনের দুঃখ দুর্দশা নিজের মতো অনুভব করে তাদের পাশে থেকেছি। ক্ষমতার জোরে কাউকে আঘাত করেনি। জনগনের সুখে দুঃখে এবং তাদের ব্যাথায় ব্যথিত হয়েছি। এখন তারা এই আসনের সার্বিক উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে আমাকে আবারও প্রয়োজন বোধ করছে। বিধায় তাদের সংসদের অবিভাবক হওয়ার জন্য আবারও মনোনয়ন প্রার্থী।
বাংলার দর্পন : এখানে বড় একটা ভোটার সংখ্যা জামাত ইসলামী ও বিএনপির। নির্বাচিত হতে হলে তাদের ভোট প্রয়োজন। কিভাবে এই ভোট আপনি দখলে নিবেন ?
এস এম জগলুল হায়দার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকা কালে দেশে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে তা সবাই খুশি। এই উন্নয়নমূখী সরকার পূনরায় নির্বাচিত করতে হলে তাঁর মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে হবে। তবেই দেশে উন্নয়ন হবে। যারা স্বাধীনতা কে বিশ্বাস করেনা। যারা জ্বালাও পুড়াও রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। তাদের সংখ্যা খুবই কম। নেতারা হয়তো ভোট নাও দিতে পারে কিন্তু সমর্থক যারা তারা সবাই আওয়ামীলীগ তথা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে।
বাংলার দর্পন : শ্যামনগর সাতক্ষীরার জেলার প্রধান অর্থনৈতিক অঞ্চল। এখানে চিংড়ী উৎপাদনে ভাল মন্দ স্থানীয় অর্থনীতির উপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে।
চিংড়ী শিল্প উন্নয়নের জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহন করছেন কী ?
এস এম জগলুল হায়দার: চিংড়ী চাষে ভাইরাস হলো মূল সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে মৎস্য মন্ত্রনালয়েকে আমি জানিয়েছি এবং এই শিল্প আরো উন্নয়ন করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অসৎ ব্যবসায়ীদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায় ও সচেতনতা করার লক্ষ্যে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
বাংলার দর্পন : দুর্যোগ প্রবন এলাকা হিসাবে খ্যাত এই উপজেলাকে কতটুকু ঝুঁকি কমাতে সক্ষম হয়েছেন?
এস এম জগলুল হায়দার: হ্যাঁ এটা দুর্যোগ ঝুঁকি প্রবন এলাকা। ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য ১০০টি সাইক্লোন শেল্টার, রাস্তা নির্মান। ভেড়ীবাধ সংস্করন ও জনসচেতনতা করে যাচ্ছি। ক্ষতিগ্রস্থদের ঘর,খাদ্য,বস্ত্র বিনা মূল্যে প্রদান করেছি। সুন্দরবন সংলগ্ন ভেড়ী এবং ঝুকিপূর্ন ভেড়ী নীচে ১২০ ফুট ও উপরে ৬০ ফুট প্রস্থ ভেড়ী নির্মানের জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
বিডি টুডে:এই এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সমস্য অনেক। সমাধানের কি কোন পথ খুজছেন?
এস এম জগলুল হায়দার: নির্বাচনী এলাকায় বিশুদ্ধ পানির জন্য পুকুর খনন, ডিপ টিউবওয়েল আর ও প্লাল্ট বসিয়ে বিশুদ্ধ পানির সমস্যা অনেকটা দূর করতে পেরেছি। আগামীতে সুযোগ পেলে বিশুদ্ধ পানির জন্য এই এলাকায় আর হাহাকার থাকবে না।
বাংলার দর্পন : খাসজমি ও সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে দুস্যতা কতটুকু নিয়ন্ত্রন আছে ?
এস এম জগলুল হায়দার: বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর অন্যায় অত্যাচারীকে প্রশ্রয় দেয়নি। সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত রাখতে মিডিয়ার সাহায্যে র্যাব, কোষ্টগার্ড ও বিজিবির যৌথ অভিযানে প্রায় শূন্যের কোটায় আনতে সক্ষম হয়েছি।
আপনাকে বাংলার দর্পনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।
এস এম জগলুল হায়দার: বাংলার দর্পনের মাধ্যমে আমার নির্বাচনী এলাকার সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমার পক্ষ থেকে বাংলার দর্পন পরিবারকে ধন্যবাদ।