পাঁচ কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত হওয়া এবং গুজব ছড়ানোর কারনে ফেসবুকের জরিমানা

অনলাইন ডেস্ক :

 

বেশ কিছুদিন ধরেই ফেসবুক ঘিরে নানা সমালোচনার ঝড় বইছে। ভুয়া খবর ঠেকানোর ব্যর্থতা কিংবা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপের মতো বিষয়গুলোকে ভালোভাবে নেয়নি বিভিন্ন দেশের সরকার। এর বাইরে প্রাইভেসি বা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয়গুলোয় ফেসবুকের নিরাপত্তার ব্যর্থতার জন্য ব্যবহারকারীরা আস্থা হারাচ্ছেন। এ বছরের কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারি ছিল ফেসবুকের জন্য বড় ধাক্কা। ওই সময়েই বড় আস্থার সংকট তৈরি হয়েছিল। এবারে আরও বড় ধাক্কা খেয়েছে ফেসবুক।

পাঁচ কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত হয়েছে ফেসবুক থেকে।

নিউইয়র্কভিত্তিক আর্থিক ও ডেটাসেবা প্রদানকারী এবং মিডিয়া কোম্পানি ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক হ্যাক হওয়ার ঘটনায় ফেসবুকের ওপর আস্থার সংকট আরও বাড়বে। একবার আস্থা নষ্ট হলে তা ফিরে পাওয়া কষ্ট হবে এবং প্রতিটি ভুল পদক্ষেপ বড় করে দেখা হবে।

রোববার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপের প্রাইভেসি রেগুলেটররা ফেসবুকের ওপর ১৬৩ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা আরোপের কথা বিবেচনা করছে। গত শুক্রবার ফেসবুকের ওই হ্যাকিংয়ের বিষয়টি জানাজানি হয়।

ফেসবুক জানায়, তারা ফেসবুকে একটি নিরাপত্তা ত্রুটি খুঁজে পেয়েছে, যা কাজে লাগিয়ে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে সাইবার দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় পাঁচ কোটি অ্যাকাউন্টে প্রভাব পড়েছে। ফেসবুক নিরাপত্তা পদক্ষেপ হিসেবে মোট নয় কোটি অ্যাকাউন্ট লগ আউট করে দিয়েছে।

ফেসবুকের পক্ষ থেকে অবশ্য নিরাপত্তা ত্রুটি কাজে লাগিয়ে কারও অ্যাকাউন্ট হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কি না, তা জানানো হয়নি। তবে ফেসবুক বলছে, এ ঘটনা জানার পর দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে তারা। এ ঘটনার পর ব্যবহারকারীরা কতটা আস্থা রাখতে পারবেন, তা চিন্তার বিষয়।

ওই ঘটনা জানাজানি হলে ফেসবুকের শেয়ারের দাম ৩ শতাংশ কমে যায়। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা, রাশিয়ান অপপ্রচার, মিয়ানমারের সহিংসতায় উসকানির বিষয়গুলোতেও সমালোচনার মুখে পড়ে ফেসবুক।

প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা বলছেন, দুই বছর ধরে চলা নানা কেলেঙ্কারির পর ফেসবুক থেকে তথ্য হ্যাক হওয়ার বিষয়টি ব্যবহারকারীদের মধ্যে নতুন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘ফেসবুক’ ও ‘তথ্য হ্যাক’ বিষয় দুটো প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে বাজে অনুভূতি তৈরির জন্য যথেষ্ট।

ফেসবুকের যে ক্ষতি হয়েছে, তা খুব সহজে উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ মনে করছে, প্রতিটি পদক্ষেপে তাদের সমালোচনা ঠিক নয়, কিন্তু বাস্তবতা তাদের জন্য উল্টো।

মার্ক জাকারবার্গ বলেছেন, ‘এটা মারাত্মক নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়’।

নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনায় মার্ক জাকারবার্গ ও ফেসবুকের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শেরিল স্যান্ডবার্গের অ্যাকাউন্টও হ্যাক হয়েছে। যে–সংখ্যক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার কথা বলা হয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে বেশি হতে পারে।

সব মিলিয়ে ব্যবহারকারীদের মনে ফেসবুক নিয়ে নানা উদ্বেগ জন্ম নিচ্ছে। তৈরি হচ্ছে আস্থার সংকট। ফেসবুক এ সংকট কাটাতে পারবে তো?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *