ফেনী-২ আসনে হটাৎ অালোচনায় আওয়ামীলীগ নেতা এ্যাডভোকেট কাজী ফয়সল | বাংলারদর্পন 

নিউজ ডেস্ক :

দেশের রাজনীতিতে যুগ-যুগ ধরেই আলোচিত, সমালোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে ফেনী সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত ‘ফেনী-২’ আসনটি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তাই এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে নানামুখী আলোচনায় সরব এখন এলাকার হাট-মাঠ-ঘাট। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির বিষয়ে দলটির জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী নিশ্চিত।  যদি কোনো কারণে তিনি নির্বাচন না করেন, তাহলে  যে নামটি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে সেটি হলো অ্যাডভোকেট কাজী ওয়ালী উদ্দিন (কাজী ফয়সল)।

 

আলোচিত মুখ কাজী ফয়সল তৃণমূলের ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে এসে ক্রমশ কেন্দ্রীয় যুবলীগে নেতেৃত্ব দেয়া শেষে বর্তমানে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির নেতেৃত্বে রয়েছেন। কাজী ফয়সল ১৯৭৪ সালের ৪ ডিসেম্বর ফেনী সদরের পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা কাজী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। প্রবীণ কর আইনজীবী কাজী গোলাম মাইন উদ্দীন ও মরহুমা কাজী সাকিনা বেগমের কনিষ্ঠ সন্তান তিনি।

 

মুজিব আদর্শের পারিবারিক আবহে বেড়ে উঠা কাজী ফয়সল ছাত্রজীবনে ফেনীর পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে রাজনীতিতে হাতেখড়ি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীনও ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে করতেই তিনি তৎকালীন বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ও অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আবুর নেতৃত্বে পরিচালিত বাংলাদেশ আওয়ামী আইন ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটিতে যোগ দেন, সেখানে দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দেন এবং ঐতিহ্যবাহী সেন্ট্রাল ল’ কলেজের পর-পর দুইবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। আইন ছাত্র রাজনীতিতে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দেয়ায় কাজী ফয়সল তৎকালীন যুবলীগ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজমের সুদৃষ্টিতে পড়েন, তারা তাকে ২০০৩ সালের ২৫ জানুয়ারি যুবলীগের ৫ম জাতীয় কংগ্রেসে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য মনোনীত করেন।

 

কেন্দ্রীয় যুবলীগের একজন পরীক্ষিত নেতা হিসেবে কাজী ফয়সল গত ১/১১ সময়কাল এবং তার পরবর্তীতে যখন রাজনৈতিক নেতাদের ওপর চলছিল অবর্ণনীয় স্টিমরোলার তখনো যুবলীগ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজমের নির্দেশিত সব দায়িত্ব দেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে সাংগঠনিক সফরসহ সব নির্দেশ যথারীতি পালন করেছেন।

 

সম্প্রতি কাজী ফয়সল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির নেতৃত্বে আসেন। এখানে দায়িত্ব পাওয়ার পর কাজী ফয়সল বর্তমানে উপ-কমিটির চেয়ারম্যান মির্জা জলিল ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলীর নির্দেশগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে তা পালন করে যাচ্ছেন।

 

কাজী ফয়সল সারাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের আইনজীবীদের সংগঠন ল’ ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (LAB) কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ ট্যাক্স ল’ ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (BTLA) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করেন। কাজী ফয়সল ফেনী সমিতি ঢাকা’র আজীবন সদস্য, ফেনী বন্ধু পরিষদের আজীবন সদস্য, ফেনী থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক শমশের নগর পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক, ইয়ুথ জার্নালিস্টস ফোরাম বাংলাদেশের (ওয়াইজেএফবি) উপদেষ্টা ।

 

সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডর সঙ্গে জড়িত কাজি ফয়সলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় স্থাপিত হয় ফেনী ল’ কলেজ। তিনি ‘ফেনী থিয়েটার’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ফেনীর উন্নয়নের ২০টি প্রস্তাবনা নিয়ে ২০০২ সালে ‘ ফেনীর অতিত – বর্তমান- ভবিষ্যৎ ’ দিনব্যাপী সেমিনারের মূল প্রবক্তা তথা লেখক গোষ্ঠী ফেনীর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন কাজী ফয়সল। তিনি বর্তমানে রাজধানীতে রোটারি ক্লাব অব আহসান মঞ্জিলের সদস্য। কবি শামসুল ইসলাম স্মৃতি সংসদের কেন্দ্রীয় সহ- সভাপতি, ড. সেলিম আল দীন স্মৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন।

 

কাজী ফয়সলের প্রকাশিত দু’টি কাব্যগ্রন্থের নাম ‘মুজিব মানে বাংলাদেশ’ এবং ‘সংশপ্তক শেখ হাসিনা’ । কাব্যগ্রন্থ দুটি বিগত কয়েকটি অমর একুশের বইমেলায় ব্যাপক সমাদৃত হয়। তারও আগে ২০০৩ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বেচ্চাচারী আমলে যখন আওয়ামী লীগের অনেক সহযোগী ও অংগ সংগঠন ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে কোনো স্মরণিকা বের করেনি, তখনো কাজী ফয়সল তার সম্পাদনায় ওই প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও ‘রক্তাক্ত সিঁড়ি’ নামক স্মরণিকা বের করেছিলেন। স্মরণিকাটি হাতে পেয়ে তখন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাপক প্রশংসা করেছিলেন।

 

কাজী ফয়সলের স্ত্রী  ব্যাংকার তাহমিনা আক্তার সুক্তা এবং দুইপুত্র কাজি ওয়াসী উদ্দিন শাদ ও কাজি ওয়াফি উদ্দিন সামী’কে নিয়ে তার সুখের নীড়। কাজী ফয়সলের বড়ভাই কাজী নওফেল জেদ্দা আওয়ামী লীগের (আওয়ামী পরিষদ) বর্তমান সভাপতি, মেজোভাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কাজি গোলাম আলাউদ্দিন (তানভীর আলাদিন) বর্তমানে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সিনিয়র সাংবাদিক ও ইয়ুথ জার্নালিস্টস ফোরাম বাংলাদেশের (ওয়াইজেএফবি) কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ।

 

মুজিব আদর্শের পরীক্ষিত সৈনিক ও ফেনী-২ আসনের আলোচিত মূখ কাজি ফয়সল জানান,  তার শেকড় প্রোথিত ফেনীতে। তিনি সবসময় ফেনীর স্থানীয় নেতা-কর্মী ও এলাকাবাসীর ভালো-মন্দের সঙ্গে নিবিড় সংস্পর্শে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন।

 

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন প্রসঙ্গে  কাজী ফয়সল বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী কোনো কারণে যদি নির্বাচন না করেন, তাহলেই আমি মনোনয়ন চাইব। কারণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গড়া এই দলটিতে কোনো নতুন গর্জ ওঠা রাজনৈতিক ব্যবসায়ী, হাইব্রিড কিংবা এলাকার সঙ্গে অথবা দলের সঙ্গে সম্পর্কহীন কেউ যেনো উড়ে এসে জুড়ে না বসতে পারেন। আমার বিশ্বাস এই আসনে আমাদের প্রাণপ্রিয় আপা জননেত্রী শেখ হাসিনা শতভাগ খাঁটি একজন আওয়ামী লীগের লোকের হাতেই মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নৌকাটি তুলে দেবেন।

 

সর্বশেষে এটুকু বলতে চাই, জননেত্রী যাকেই নৌকার কান্ডারি বানাতে চান আমরা সবাই নৌকাকে বিজয়ী করতে একসঙ্গে ঝাপিয়ে পড়বো। আমাদের মনে রাখতে হবে, নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করতে সামান্যতম অবহেলা করা মানেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর বঙ্গবন্ধু আদর্শের অনুসারী জাতির বৃহৎ অংশটিকে চরম মূল্য দিতে হতে পারে। তাই বলবো, মুজিব আদর্শে বিশ্বাসী আমাদের ‘একটাই পরিচয় হোক-আমরা নৌকা মার্কার লোক’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *