বাংলার দর্পন ডেস্কঃ
দেশের সব জেলা পরিষদে ‘ফেনী স্টাইল’ নির্বাচন চাইলেন ফেনী-২ আসনের সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী। সোমবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় হাজারী এ দাবি করেন।
নিজাম হাজারী বলেন, একটি দৈনিক পত্রিকায় লিখেছে ফেনীর জেলা পরিষদেও ফেনী স্টাইল। পত্রিকাটি যথার্থই লিখেছে। দেশের সব জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সদস্যদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া প্রয়োজন। আমি চাই বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলায় এভাবে নির্বাচন হোক।
পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে ফেনীতে সরকারি দলের অনেক প্রার্থীর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে নিজাম হাজারী বলেন, ফেনীতে উপজেলা নির্বাচন হয়েছে, মেয়র নির্বাচন হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে শেখ হাসিনার মনোনয়ন যারা পেয়েছিলেন তারা সবাই নির্বাচিত হয়েছেন। আমাদের নেত্রীর প্রতি, নৌকার প্রতি ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা আছে বলেই ফেনীতে একক প্রার্থী হয়েছিল।
ইংরেজি দৈনিক অবজারভার পত্রিকার কঠোর সমালোচনা করে হাজারী বলেন, অবজারভার পত্রিকায় আমাদের মানসম্মান নিয়ে কথা বলা হয়েছে। আমাদের ড্রাগ ডিলার বলা হয়েছে। আমরা হুট করে এই সংসদে আসিনি। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে এখানে এসেছি। আমাকে ড্রাগ লিডার বলা হয়েছে। এটার কোনো তথ্য প্রমাণ যদি উনি দিতে পারেন তাহলে এই সংসদ থেকে জুতার মালা গলায় পরে বেরিয়ে যাব। মাননীয় স্পিকার, আপনি তাকে ডাকুন, তার কাছে কি তথ্য প্রমাণ আছে তার বিচার করেন।
অবজারভার পত্রিকার সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর সমালোচনা করে হাজারী বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা ফেনী-২ আসনে নির্বাচন করার জন্য ২০০৮ সালের নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা এক ভদ্র লোককে নৌকা প্রতীক দিয়ে পাঠিয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে সারা দেশে আওয়ামী লীগের গণজোয়ার হয়েছিল। সেই গণজোয়ারের মধ্যেও ইকবাল সোবহান সাহেব নির্বাচিত হতে পারেননি। সেই সময়ে অসংখ্য নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও এই ইকবাল সোবহান একবারও তাদের দেখার জন্য হাসপাতালে যাননি। এই ইকবাল সোবহান চৌধুরী গোলাম আযমের নাগরিকত্ব দাবি করেছিলেন। সবাই যখন যুদ্ধে যাচ্ছিলেন উনি তখন অবজারভার পত্রিকাতে জয়েন করেন। কিন্তু অপকর্ম ঢাকার জন্য দেখিয়েছেন ১৯৭২ সালে ওই পত্রিকা জয়েন করেছেন। উনি যে ৭১ সালে জয়েন করেছেন তার তথ্য প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। ওই পত্রিকা থেকে তার টাকা উত্তোলনের ব্যাংক স্টেটমেন্ট আমার কাছে রয়েছে।
ইকবাল সোবহানকে উদ্দেশ্য করে হাজারী আরও বলেন, তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীকে পত্রিকা দেওয়া হয়েছে। টেলিভিশন চ্যানেল দেওয়া হয়েছে। আর এই পত্রিকা ও টেলিভিশনে তিনি এই সরকারের বিরুদ্ধে লিখছেন। ওনাকে বিনীতভাবে অনুরোধ করতে চাই আপনি দুটিতে এক সঙ্গে থাকতে পারেন না। সাংবাদিকতা করতে চাইলে তথ্য উপদেষ্টার পদ থেকে সরে আসুন। সরকারের সকল সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আপনি আমাদের বিরুদ্ধে বলবেন, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।
হাজারী আরও বলেন, ইকবাল সোবহান চৌধুরীর মতো যারা আছেন, মোশতাকের মতো যারা এখনো আমাদের দলে ঘোরাফেরা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে তাঁরা এই ধরনের দুঃসাহস দেখাতে না পারে।