প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষিত: দখলমুক্ত হয়নি হাজীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ

সৈয়দ মনির অাহমদ :

সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নস্থ হাজীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ সহ প্রায় ৪০শতক ভুমি  দীর্ঘদিন ধরে দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মান করেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

সুত্রমতে জানা যায়,  গত ১৪ জানুয়ারী ২০১৫ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিবের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের  বেদখলকৃত ভুমি পুনরুদ্ধারের বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়।  কিন্তু অদৃশ্য কারনে মানা হয়নি প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশনা।
রবিবার (২২জুলাই) সকালে ক্লাশ বর্জন করে রাস্তায় মানববন্দন করে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের শ্লোগান ছিল ‘ শরীরচর্চার মাঠ নাই কেন, প্রশাসন জবাব চাই ” ‘খেলার মাঠ চাই, খেলার মাঠ চাই ‘। 

ছাত্র কাউন্সিল প্রতিনিধি মুশফিকুর রহিম ও জাকিয়া সুলতানা বলেন, সকল স্কুলে খেলাধুলার জন্য মাঠ অাছে, শরীরচর্চার জন্য জায়গা আছে, তাদের নেই কেন?  তারা কোন প্রকার খেলাধুলার চর্চা করতে পারেনা। দ্রুত বে-দখলকৃত ভুমি উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে তারা।

সরেজমিনে জানা যায়,  ১৯৭৫ সালে স্থানীয় সমাজসেবক আবদুল মান্নানের উদ্যোগে উক্ত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় দানবীর হাজী সুলতান অাহম্মদ ও হাজী জাগির আহম্মদ ২৫ শতক হারে ৫০ শতক জমি  প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নামে ছাপ কবলায় হস্তান্তর করেন। ওই সময় উক্ত ভুমি নাল হিসেবে ছিল।   পরে পর্যায়ক্রমে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল বিদ্যালয়ের চতুর্পাশের ভুমি দখল করে ।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবদুল মান্নান বাংলারদর্পনকে জানান, বিদ্যালয়ের মাঠসহ  প্রায় ৪০ শতক ভুমি দখল করে দীর্ঘদিন যাবত ভোগ করছেন ছেরু মিয়ার ছেলে আবদুল ওহাব। স্থানীয়ভাবে বহু দরবার করেও বেদখলি ভুমি উদ্ধার করা যায়নি।  প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের গোপন শাখা থেকে  ভুমি পুনরুদ্ধারের চিঠি পেয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিস  ১৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে চিঠি প্রেরন করেন।  কিন্তু অদৃশ্য কারনে তা থেমে গেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন বাংলারদর্পনকে জানান, প্রথম-পঞ্চম শ্রেনি পর্যন্ত ১৫০ জন শিক্ষার্থী অাছে। মাত্র ১০ শতকের মধ্যে ৩কক্ষের একটি ইমারত ।  ভবনের বাহিরে সম্পুর্ন ভুমি বেদখল হওয়ায় শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও শরীরচর্চার  কোন জায়গা  নেই। গত ১৭জুলাই ২০১৬ তারিখে নবাবপুর ভুমি কর্মকর্তা কুমদ বিহারি দাসের মনগড়া প্রতিবেদনের কারনে বিদ্যালয়ের ৪০শতক ভুমি হাতছাড়া হয়। প্রথমবার ১৯৯৫ সালে জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দেয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় দফা গত ১৬ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহি অফিসার বরাবরে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। দ্রুত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে সংশ্লিস্টদের অাশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহি অফিসার মো: মিনহাজুর রহমান বাংলারদর্পনকে জানান, অভিযোগ তদন্ত হচ্ছে।  নথিপত্র অনুযায়ী দ্রুত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হিটলারুজ্জামান জানান, হাজীপুর সহ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভুমি বেদখল আছে। উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

#বাংলারদর্পন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *