নিউজ ডেস্ক : সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর গণসংযোগে হাতেগোনা সমর্থক ও কর্মী দেখে হতাশা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এত আয়োজন করে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েও গুটিকয়েক সমর্থক নিয়ে ভোট চেয়ে বিএনপিকে শরমে ফেলেছেন আরিফুল হক চৌধুরী।
সূত্র বলছে, মূলত আরিফুল হকের উপর ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণেই বিএনপির নেতা-কর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছেন না। আরিফুল হক নেতা-কর্মীদের সঠিক মূল্যায়ণ না করায় তার এই পরিণতি হয়েছে। সিলেট সিটির বিএনপির কর্মীরা আরিফুল হককে বাদ দিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিমের পক্ষ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আরিফুল হকের অহংকারী মনোভাব ও উগ্রতার কারণে দলীয় কর্মীরা তাকে ত্যাগ করে সেলিমের পক্ষে কাজ করছেন।
সিলেট মহানগর বিএনপি সূত্রে জানা যায়, সিটি করপোরেশনের মেয়র থাকাকালীন সময়ে মেয়র আরিফুল হক দলীয় নেতা-কর্মীদের চরমভাবে অবহেলা করেছেন। দলের কোন কাজে সাহায্য করেননি। বরং নেতা-কর্মীদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টিতে ব্যাপক ভুমিকা পালন করেছেন তিনি। দলের বিপর্যয়ে ঢাকায় বসে আরাম-আয়েশে দিন পার করেছেন আরিফুল। বিচার-সালিশের নামে অর্থ আত্মসাৎ, কমিটিতে পদ দেওয়ার নামে অর্থ কামিয়ে দলীয় কর্মীদের পকেট খালি করে দিয়েছেন তিনি। নিজের সামর্থ থাকার পরও দলের বিভিন্ন কর্মসূচীতে নেতা-কর্মীদের নাম ধরে ধরে চাঁদা তুলেছেন। লন্ডনে টাকা পাঠানোর নামে লাখ লাখ টাকা তছরূপ করেছেন তিনি। একজন মেয়র হয়েও তার আচরণ ছিল অশিক্ষিত ও মূর্খের মত। অন্য দিকে নেতা-কর্মীদের বিপদের দিনে পাশে থেকেছেন বদরুজ্জামান সেলিম। নেতা-কর্মীদের নিয়মিত খোঁজ-খবর নিতেন তিনি। দলের প্রতিটি কর্মসূচীতে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন সেলিম। দলের হয়ে কর্মসূচী পালন করতে গিয়ে মার খেয়েছেন, নির্যাতন সহ্য করেছেন সেলিম। সেলিম মূলত সিলেট মহানগর বিএনপির প্রাণের মানুষ। ক্ষমতা না থাকার পরও তিনি যেভাবে কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেটি আরিফুল হক মেয়র থেকেও করেননি। পুরো মেয়াদকাল জুড়ে চেয়ার বাঁচাতে এবং অবৈধ উপায়ে টাকা উপার্জন করতেই পার করেছেন আরিফুল হক। একজন নেতার চরিত্রের সাথে যেটি সাংঘর্ষিক। আরিফুল হকের চরিত্র ও কাজকর্ম বিবেচনা করেই স্থানীয় বিএনপির ভোটাররা তাকে ভোট দিবেন না বলে বাতাসে গুঞ্জন রটেছে। আরিফুল হকের দূর্দশায় অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন সেলিম।
এদিকে, আরিফুল হকের দুর্গতি দেখে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের। আরিফুল হকের সম্ভাব্য পরাজয় ঠেকাতে একাধিক পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছে দলটি। নয়া পল্টন বিএনপির পার্টি অফিস সূত্রে জানা যায়, আরিফুল হকের অতীত শাসন ও বর্তমান দূরবস্থা দেখে খোদ পস্তাচ্ছে বিএনপি। আরিফুল হককে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য ইতিপূর্বে তারেক রহমানকে সতর্ক করেছিলেন একাধিক সিনিয়র বিএনপি নেতারা। কুকর্ম ও চুরির রাজনীতি বিবেচনা করে আরিফুলকে বাদ দিয়ে বদরুজ্জামান সেলিমকে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্যও তারেক রহমানকে অনুরোধ করেছিলেন তারা। কিন্তু তারেক তো ইতিমধ্যেই আরিফুলের কাছ থেকে মনোনয়ন বাবদ ১০ কোটি টাকা চাঁদা নেওয়ায় নেতারা মুখে কুলুপ আটতে বাধ্য হন। এখন আরিফুল হকের করুণ পরিণতি কল্পনা করে দলটির নেতারা লজ্জা পাচ্ছেন। খুলনা ও গাজীপুর সিটির মতই সিলেটেও আরিফুল অতীত অপকর্মের জন্য মুখ থুবড়ে পড়বেন, সেটি ভেবেই দিশেহারা হচ্ছেন নেতারা।