এক মেয়াদেই শতাধিক কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন আরিফুল হক চৌধুরী

নিউজ ডেস্ক: এক মেয়াদে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র হয়েই শতাধিক কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বিএনপির সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। উন্নয়ন বরাদ্ধ থেকে নির্ধারিত কমিশন বাণিজ্য, কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজী, চাকরির নামে টাকা উত্তোলন করা, সরকারি সম্পদ দখল ও বিক্রি করার মতো বহু অনৈতিক কাজ করে মাত্র পাঁচ বছরের কম সময়ে সিলেটের কোটিপতি ব্যক্তিদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন সদ্য বিদায়ী বিতর্কিত মেয়র আরিফুল হক।

সূত্র বলছে, মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়েই পয়সা ইনকামের চিন্তায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন আরিফুল হক। এক্ষেত্রে ভাগ্যও তার সাথে ছিল। কারণ তৎকালীন বিদায়ী আওয়ামী লীগের মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের নামে বরাদ্ধকৃত উন্নয়নের সব কাজগুলো একে একে চলে আসে আরিফুলের হাতে। তৎকালীন সরকারের আন্তরিক চেষ্টার সরাসরি ফল ভোগ করেন তিনি। সিটি করপোরেশনের রাস্তাঘাট উন্নয়ন, নগর উন্নয়ন, সৌন্দর্য বৃদ্ধি, সেবা বৃদ্ধির যতগুলো প্রকল্প ছিল সবগুলো থেকেই নিজের ভাগ বের করে কোটিপতি হয়ে যান আরিফুল।

এছাড়া সিটি করপোরেশন এলাকার ভেতর সরকারি জমি দখল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে মাসিক চাঁদা আদায়, শহরে চলাচলকারী যানবাহন থেকে চাঁদা আদায়, হোটেল-মোটেল থেকে মাসোহারা আদায়, এমনকি নাগরিকদের কাছ থেকে সেবা প্রদানের নামে সিটি করপোরেশনের বিল বই ব্যবহার করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে আরিফুল হকের বিরুদ্ধে। সিলেট শহরে অঘোষিত নৈরাজ্যের সম্রাট ছিলেন তিনি। প্রকাশ্যে ও গোপনে তিনি সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিতেন। প্রশাসনে নগ্ন হস্তক্ষেপ করে কুখ্যাত সব সন্ত্রাসীদের ছাড়িয়ে বিদেশ পাঠিয়ে দিতেও সাহায্য করেছেন আরিফুল। একটা সময় ছিল যখন তার অনুমতি ছাড়া প্রশাসন কাজ করতে পারত না। তার কারণে একাধিক প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বিব্রত হয়েছেন। পীর-আউলিয়াদের শহরে মদ-মাদকের ব্যবসাকে বৈধতা দিয়েছেন তিনি। মাসিক চাঁদার বিনিময়ে সিটি করপোরেশনের আনাচে-কানাচে মাদকের সহজলভ্যতায় ব্যাপক অবদান ছিল তার। এক কথায় যাবতীয় অনৈতিক কাজ-কর্মের মাধ্যমে মাসে মাসে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছেন আরিফুল হক। শুধু তিনি নন, তার শাসনামলে কোটিপতি হয়েছেন তার স্ত্রীও।

এই বিষয়ে নগরের জিন্দাবাজার এলাকার সাবিরুল হোসেন নামের হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, আরিফুল হকের বিরুদ্ধে নালিশের শেষ নেই। তিনি মেয়র কম চাঁদাবাজ বেশি ছিলেন। তার কারণে বিগত পাঁচ বছর ব্যবসা করাটা কঠিন হয়ে পড়েছিল। কথায় কথায় তার লোকরা এসে চাঁদা নিয়ে যেতেন। সেবা দেওয়া তো দূরের কথা, তার কর্মকাণ্ডে সিলেটবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। তিনি কী করেননি! সিটি করপোরেশনের নাম ভাঙ্গিয়ে বাড়ি-গাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়েছেন তিনি। পথের ফকির থেকে রাজা হয়েছেন আরিফুল। মন্ত্রী-এমপিদের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা বেনামী আরিফুল হক আজ নেতা সেজেছেন। আরে মেয়র হয়েছিলেন তো আমাদের দোয়ায়। মুখে এক কথা, অন্তরে আরেক কথা আরিফুলের। মানুষ যে গিরগিটির মতো রং পাল্টায় তা আরিফুল হক প্রমাণ করেছেন। সিলেটবাসী এবার আর ভুল করবে না। আরিফুল হককে শিক্ষা দেওয়ার সময় এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *