মোঃ আলাউদ্দীন, চট্টগ্রাম :
প্রতিভা বিকাশে দরকার একাগ্রতা, নিয়মানুবর্তিতা, স্মৃতিশক্তি, চিন্তাশক্তি ও আত্মবিশ্বাস। আর একজন শিক্ষার্থীর মাঝে এসব গুণাবলীর সুষ্ঠু বিকাশে এক ফলপ্রসু আধ্যাত্মিক রূপরেখা রয়েছে কাগতিয়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর তরিক্বতে। মূলত ছাত্রজীবন থেকেই তরিক্বত চর্চার ফলে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের শিক্ষা অর্জনের সাথে মননশীলতা ও প্রতিভার বিকাশ ঘটে।
গতকাল ১৪ জুলাই শনিবার চট্টগ্রাম রাউজান সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এ.কে.এম ফজলুল কবির চৌধুরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এশায়াত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মহান মোর্শেদ আওলাদে রাসূল হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্ল¬াহ্ আহমদী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর এ তরিক্বতে রয়েছে বিশে^ বিরল ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ্ ব্যবস্থাপনা ও মোরাকাবার শিক্ষা। যা শিক্ষার্থীদের স্মৃতিশক্তিকে প্রখর করে, নিয়মানুবর্তিতা ও একাগ্রতার শিক্ষা দেয়, মানবতার বিকাশ ঘটিয়ে সচ্চরিত্রবান করে আদর্শ শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তুলতে নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।
ছাত্র সমাজের কল্যাণে হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর বিভিন্ন অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আশি-নব্বইর দশকে রাউজান-ফটিকছড়িসহ উত্তর চট্টগ্রামের ছাত্র সমাজ যখন বিপথগামী হচ্ছিল, তখন এ মহামনীষীর আধ্যাত্মিকতা ও দূরদর্শিতায় এসব পথভ্রষ্ট ছাত্র-যুব সমাজ ফিরে আসে আলোর পথে, তিনি তাদেরকে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করান, নিয়মিত নামাজ-রোজা ও দরুদ পাঠে ধাবিত করেন এবং মাতৃভূমি শান্ত করার ডাক দেন। এ মহামনীষী ছাত্র-যুবককে বেশি ভালোবাসতেন। তিনি ছাত্রদেরকে বলতেন, ‘আমার এ তরিক্বতের ছাত্রদেরকে অন্যদের চেয়ে দ্বিগুণ পড়ালেখা করতে হবে।’
‘ছাত্র সমাজের প্রতিভা বিকাশে হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর তরিক্বতের অবদান’ শীর্ষক এ এশায়াত সেমিনারের আয়োজন করে মুনিয়ীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ ৩১নং রাউজান সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা। এতে সভাপতিত্ব করেন রাউজান আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলহাজ্ব ছৈয়্যদ মুহাম্মদ গোলাম সরোয়ার। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন মুহাম্মদ সায়মন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রাউজান পৌরসভার প্যানেল মেয়র আলহাজ¦ মুহাম্মদ বশির উদ্দীন খান, পৌরসভার ২য় প্যানেল মেয়র মুহাম্মদ জমির উদ্দীন পারভেজ, নাজিরহাট ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, রাউজান সরকারি বিশ^বিদ্যালয় কলেজের অধ্যাপক মুহাম্মদ সেলিম নাওয়াজ চৌধুরী, গহিরা ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, হযরতুলহাজ¦ আল্লামা মুহাম্মদ ফোরকান, ওয়ান ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার এভিপি মুহাম্মদ নাজিম উদ্দীন।
সভাপতির বক্তব্যে এডভোকেট আলহাজ্ব ছৈয়্যদ মুহাম্মদ গোলাম সরোয়ার বলেন, কাগতিয়া দরবারের অনুসারী ছাত্র-যুবকরা হচ্ছে ছাত্র-যুব সমাজের কাছে এক একজন মডেল, এলাকার গৌরব। যারা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় সর্বোচ্চ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সুনামের সাথে কাজ করছে। আর এর নেপথ্যে কাগতিয়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর অবদানের কথা এ অঞ্চলের মানুষ কখনো ভুলবে না। আর সেই পথ ধরেই ছাত্র ও যুব সমাজের কল্যাণে আলোকবর্তিকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন গাউছুল আজমের একমাত্র খলিফা মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী। যা সর্বোচ্চ প্রশংসার দাবি রাখে।
এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মুহাম্মদ তসলিম উদ্দীন, অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল আব্বাস চৌধুরী, অধ্যাপক মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল আজিম চৌধুরী, নাজিরহাট ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। সেমিনারে রাউজান কলেজের বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও বিপুল সংখ্যক ছাত্র উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনার শেষে মিলাদ ও কিয়ামের পর প্রধান অতিথি দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ্র সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি, কলেজের উত্তরোত্তর উন্নতি এবং হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।