ফেনী প্রতিনিধি :
জেড এম কামরুল আনাম ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের সেনেরখিল গ্রামের ভূঞা বাড়ির এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১১ জানুয়ারি ১৯৫৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- মরহুম এবিএম শাহাবুদ্দিন, সুশিক্ষিত, সৎ ও ন্যায়পরায়ণ একজন সরকারী কর্মকর্তা এবং মাতা- মরহুমা হুর জাহান বেগম সমাজসেবী ছিলেন।
কামরুল আনাম সোনাগাজীর ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ মঙ্গলকান্দি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল থেকে লেখাপড়া শুরু করেন এবং এ স্কুল থেকেই (১৯৭২ সাল থেকে) ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ল’কলেজ, ছাত্র সংসদ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিকলীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এমকম/এমবিএ এবং এল.এল.বি সহ ইটালি থেকে সোস্যাল সেফটি নেট, জার্মান থেকে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, জাপান থেকে ট্রেড ইউনিয়ন ফিলোসোপি, মালয়েশিয়া থেকে স্টাডি সার্কেল মেথড অব এডুকেশন এবং বাংলাদেশ থেকে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন।
কামরুল আনাম পরপর দুইবার সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে ৭ বছর এবং ফেনী জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য হিসেবে ২০১২ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক হিসেবে ৮ বছর, আইটিজিএল ডাব্লিউএফ (ব্রাসেলস) এর ইসি মেম্বার হিসেবে ২০ বছর, বিটিএমসিতে একটানা ১৫ বছর(সিবিএ) এবং বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাক শিল্প শ্রমিক লীগের সভাপতি হিসেবে ১৯৯০ সাল থেকে অদ্যবধি দায়িত্ব পালন করছেন।
১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত আইন কলেজ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এবং বাংলাদেশ ল’স্টুডেন্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারীতে বিএনপি জামাত এর জ্বালাও-পোড়াও-মানুষ হত্যা, পেট্রোল বোমা এবং নাশকতার বিরুদ্ধে বলিষ্ট ভুমিকা রাখাসহ “শ্রমিক-কর্মচারী-পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ” গঠন করে আন্দোলন পরিচালনা এবং সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। খালেদা জিয়ার শাসনামলে (১৯৯২-১৯৯৫) মাথায় হুলিয়া নিয়ে পাট-সূতা বস্ত্রকলে শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলেন; যে আন্দোলনে ১৭ জন শ্রমিক শাহাদাৎ বরণ করেন। এ সময় দেশের সকল শিল্পাঞ্চলে খালেদা বিরোধী আন্দোলন এবং জনমত গড়ে তোলেন, ফলশ্রুতিতে ১৯৯৬ সালে দেশের সকল শিল্পাঞ্চলে আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য জয়লাভ করে।
স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার ও নির্যাতনের শিকার হন এবং বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং অনেক জুলুম-নির্যাতনের শিকার হন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনে এবং জনতার মঞ্চের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনের পর বিএনপি জামাতের নির্যাতনের শিকার সোনাগাজীর এলাকা ছাড়া নেতা কর্মীদের পাশে দাঁড়ান। নেতাকর্মীদের আশ্রয়, চিকিৎসা, মামলা পরিচালনা, চাকুরী প্রদানসহ বিভিন্ন রকম সাহায্য সহযোগীতা করেন এবং ধাপে ধাপে এলাকায় আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিস্তরে সাংগঠনিক কার্যক্রমের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের সক্রিয় করেন এবং তাদের সংগঠিত করেন। পরবর্তীতে সংগঠনকে পূর্ণগঠন করেন। ফলশ্রুতিতে ২০০৬ সালের সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ২০১২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সোনাগাজী উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগ, মহিলা শ্রমিক লীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গমাতা পরিষদ কৃষি শ্রমিক ইউনিয়ন এবং সোনাগাজী প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতি গঠনে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
জননেতা জনাব শেখ সেলিম এর সাথে একটানা ৫ বছর তেজগাঁও যুবলীগের এজিএস -এর দায়িত্ব পালন করেন। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের পর (১৬ জুলাই ২০০৭) শ্রমিক নেত্রীবৃন্দকে এবং কর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেন, দেশে বিদেশে জনমত সৃষ্টির নিরালস প্রচেষ্টা চালান এবং তার মুক্তি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রখেন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তেজগাঁও শিল্প এলাকা স্টাফ কোয়ার্টার স্কুল কেন্দ্রে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ ও পালন এবং বিপুল ভোটে নেত্রীয় জয়লাভ।
মুহুরী নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ কমিটি গঠন (১৯৮৭-৮৯) করেন এবং বাঁকা নদী সোজাকরণের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলেন। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর তারই উদ্যোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাঁকা নদী সোজাকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। স্পেকট্রাম গার্মেন্টস, স্মার্ট ফ্যাশান, তাজরিন ফ্যাশান, গরীর এন্ড গরীব, রানা প্লজাসহ বিভিন্ন গার্মেন্টস দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সরকারের বিভিন্ন কমিটিতে দায়িত্ব পালন: “অলাভজনক পাট ও বস্ত্র মিল সমূহের বিরাজমান সমস্যাবলী পর্যালোচনা ও প্রতিকারের” সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে তৎকালীন মাননীয় অর্থমন্ত্রী শাহ এস এমকিবরিয়াকে আহ্বায়ক করে গঠিত হাইপাওয়ার্ড কমিটির “সদস্য” মনোনীত এবং দায়িত্ব পালন করেন ; ৯টি টেক্সটাইল মিলস্ শ্রমিকদের নিকট হস্তান্তরের লক্ষ্যে গঠিত “ হস্তান্তর নীতি মালা প্রনয়ন কমিটির” সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন এবং মিল হস্তান্তরের ভূমিকা পালন করেন। স্বেচ্ছাবসর শ্রমিক কর্মচারীদের আর্থিক সুবিধা প্রদান সংক্রান্ত তৎকালীন মাননীয় শ্রম মন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে গঠিত “মান্নান কমিশনের” ‘সদস্য’ মনোনীত এবং দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ও সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
কামরুল আনাম-কিংবদন্তীর স্বপ্নযাত্রা, প্রেমানন্দ, একুশ মানে নতুন আলো, সহিংসতা চায়না স্বদেশ, জনক কণ্যা শেখ হাসিনা উন্নয়ণের কাণ্ডারি, লাল সবুজের মেয়ে শেখ হাসিনা, সময়ের আয়নায় ভাষা সৈনিক সামসুল হুদা, শত বাঙ্গালীর কথা, আমি একদিন চাঁদ হবো, শ্রমিকের বঙ্গবন্ধু, শিক্ষা সম্ভাবনা উন্নয়ন,প্রাথমিক শিক্ষা প্রাসঙ্গিক ভাবনা, ভাষা থেকে স্বাধীনতা, কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, পরিবার কল্যাণ, এইডস্ ও মানবাধিকার, শিশু শ্রম নিরসন সহ বিভিন্ন বিষয়ে বহুগ্রন্থ রচনা করেছেন।
তিনি শ্রমিকের ডাক এবং সোনাগাজী পরিক্রমা পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। সংগঠক হিসেবে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি লাভ সহ সিটি সমাজ কল্যাণ সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত স্বর্ণপদক, জাতীয় সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন সাউন্ডবাংলা গোল্ডেনবুক সম্মাননা- ২০০৭, মাওলানা ভাষানী স্বর্ণপদক, স্বাধীনতা সংসদ প্রদত্ত কাজী নজরুল ইসলাম পদক ও একুশে সম্মাননা পদক ২০১২, ইউ এস এ’র আই এ আই, এ বি সি পদক, ফেনী বন্ধু পরিষদ সম্মাননা ২০০৩, জাপানস্থ – জেনসন এ্যাওয়ার্ড- ১৯৯০, স্বপ্নালোক স্বর্ণকলম সম্মাননা ২০০৮, বিজিএমইএ স¤মাননা পদক ২০০৯, হিউম্যান রাইট সোসাইটি এ্যাওয়ার্ড ২০০৯, ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সম্মাননা পদক ২০০৯, বাংলাদেশ মেধা বিকাশ সোসাটির ম্যান অপ দ্যা ইয়ার সম্মাননা ২০১৪, নাট্যচার্য সেলিম আল দীন স্মৃতি পরিষদের শ্রেষ্ঠ সমাজসেবক সম্মননা ২০১১, রুরাল জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশনের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সম্মাননা ২০১১, মানব সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য হিউম্যান রিসোর্স এন্ড হেলথ ফাউন্ডেশন প্রদত্ত সম্মাননা স্মারক, বাংলাদেশ স্বপ্নকুড়ি ফাউন্ডেশন প্রদত্ত জাতীয় চারনেতা স্মৃতি পদক ২০১২, বাংলাভিশন ফাউন্ডেশন প্রদত্ত কবি নজরুল গোল্ড অ্যাওয়ার্ড ২০১৪, সাউন্ডবাংলা সম্মাননা স্মারক ২০১৫, মাসিক ধানসিঁড়ি প্রদত্ত স্বাধীনতা দিবস সম্মাননা স্মারক ২০১৫, মানবাধিকার জোটের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম পদক ২০১৫, স্বাধীনতা সংসদ-এর বিদ্রোহী কবি সম্মাননা ২০১৫, এশিয়ান জার্নালিস্ট হিউম্যান রাইটস এন্ড কারচারাল ফাউন্ডেশন প্রদত্ত মাদার তেরেসা স্বর্ণপদক ২০১৬, স্বপ্ন মেলা শিশু ফাউন্ডেশনের নবাব সিরাজ উদ্দৌলা সম্মাননা ২০১৬ সহ বিভিন্ন সম্মাননা ও পদক পেয়েছেন।
পাশাপাশি সমাজসেবা-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ও শিক্ষায় অবদানের জন্য সরকারী-বেসরকারীভাবে পেয়েছেন অসংখ্য সংবর্ধনা ও সম্মাননা। তিনি আমেরিকা, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, ইউ কে, জাপান, জার্মান, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ইটালী, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, পর্তুগাল, তাইওয়ান, আর্জেন্টিনা, তিউনেশিয়া, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, হংকং, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ডেনর্মাক, নেপাল, সৌদি আরব সহ বিভিন্ন দেশে সভা সেমিনারে যোগদান সহ শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, মিটিং, সেমিনারে বিভিন্ন দেশে একাধিকবার ভ্রমণ/ যোগদান করেন। তিনি ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে ফেনী-৩ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন; “২০০৮ সালে মাননীয় নেত্রী বলেছিলেন এবার আবুল বাশার কে দিলাম, তার নির্বাচন করো, পরেরবার তোমাকে দেখবো, এবার তুমি উপজেলা নির্বাচন করো।” জনাব কামরুল আনাম পরম শ্রদ্ধেয় নেত্রীর কথা অনুযায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন এবং দ্বিতীয়বারও বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে এলাকার উন্নয়নে সততা এবং নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাংগঠনিক অবস্থান:
চেয়ারম্যান- সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ, ফেনী। সদস্য- ফেনী জেলা আওয়ামীলীগ, সভাপতি- বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোষাক শিল্প শ্রমিক লীগ, মহসচিব- বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন, সদস্য সচিব- শ্রমিক কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ, চেয়ারম্যান- সেভ দ্যা রোড, সভাপতি-নাট্যচার্য্য সেলিম আলদীন স্মৃতি পরিষদ এবং সেলিম আলদীন সাংস্কৃতিক একাডেমী, সদস্য-ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ কাউন্সিল (ওইঈ), সদস্য- তৈরি পোষাক শিল্পের সম্প্রসারণ ও সহজীকরণ বিষয়ক টাস্ক ফোর্স, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার, সদস্য- জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ কাউন্সিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার।
#বাংলারদর্পন।