টেকনাফে ইয়াবা ব্যবসা শুরুর নেপথ্যে | বাংলারদর্পন

নিউজ ডেস্ক :

করিম, আবদুল্লাহ ও রাশেদুল করিমদের হাত ধরেই টেকনাফ সীমান্তে ইয়াবার রমরমা বাণিজ্য শুরু হয়েছিল। তখন মিয়ানমার থেকে ক্ষমতার দাপট ও টাকার জোরে সীমান্ত বাণিজ্যের নামে লাখ লাখ পিস ইয়াবার চালান নিয়ে আসত তারা। এদের মধ্যে টেকনাফ উপজেলা বিএনপি নেতা সাইফুল করিম এখনো ‘ইয়াবা ডন’ হিসেবে পরিচিত স্থানীয়ভাবে।

সাইফুল করিমের দালানে ১৯৯৪ সালে গোপনে ইয়াবা তৈরির মেশিনও স্থাপন করা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলে ওই ইয়াবা কারখানা বন্ধ করে দেয় সাইফুল সিন্ডিকেট। সম্প্রতি সাইফুল সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য বিএনপি নেতা জিয়াউর রহমানের বাড়ি থেকে বিপুল ইয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেন্টমার্টিনের অদূরে সমুদ্র পথে বিএনপির চিহ্নিত ওই ইয়াবা ব্যবসায়ীরা ট্রলার ভর্তি ইয়াবার চালান পৌঁছাত চট্টগ্রাম ও ঢাকায়। মাঝ পথে কোন সমস্যার ইঙ্গিত পেলে ইয়াবার চালান খালাস করা হতো মহেশখালীর যুদ্ধাপরাধীপুত্র সালাহ উদ্দিনের কাছে।

বর্তমানে ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে সবার উপরে আছেন টেকনাফ বিএনপির সভাপতি জাফর আলম। তার বাড়ি টেকনাফের হ্নীলার পূর্ব লেদায়। বিভিন্ন সংস্থার তথ্য মতে, জাফর আলমের এখনো একটি ইয়াবা সিন্ডিকেট চালু রয়েছে। নিজস্ব বাহিনীর মাধ্যমে নাফ নদী দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে সারাদেশে পাচার করেন তিনি।

টেকনাফ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহও একই কারবার করেন। ইয়াবা ব্যবসা করে তার পরিবারের সদস্যরা এখন শত শত কোটি টাকার মালিক। টেকনাফ বিএনপির প্রভাবশালী এই নেতার দুই ভাই জিয়াউর রহমান (টেকনাফ সদর ইউপি নির্বাচনে ধানের শীষের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন) ও আবদুর রহমান তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী। তাদের নামে একাধিক মাদক মামলাও রয়েছে। কিছুদিন আগে তাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাও জব্দ করেছিল পুলিশ।

টেকনাফ পৌর বিএনপির সভাপতি রাজ্জাক মেম্বারের পুরো পরিবার ইয়াবা ব্যবসা করেন। তার ছেলে কক্সবাজার জেলা ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ২১ লাখ টাকা ও ৭০ হাজার পিস ইয়াবা পাওয়া গিয়েছিল। তার বাকি দুই ছেলে মো. আবদুল্লাহ এবং মো. ফারুকও তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী।

মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর এদের অনেকেই আত্মগোপন করেছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *