টেকনাফের স্থানীয় গণমাধ্যমেও একরাম পরিচিত ছিলেন ইয়াবা সম্রাট হিসেবে

নিউজ ডেস্ক :

বিভিন্ন সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত টেকনাফের মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকায় শীর্ষে ছিল মাদক বিরোধী অভিযানে নিহত টেকনাফ পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একরাম। ইয়াবা ব্যবসায় একরামের জড়িত থাকার বিষয়ে দেশের বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে একাধিকবার।

স্থানীয় গণমাধ্যমেও ইয়াবা সম্রাট হিসেবে পরিচিত ছিলেন নিহত একরাম। ২০১৭ সালের ৯ মার্চ ‘ডেইলি কক্সবাজার’ নামে প্রকাশিত স্থানীয় পত্রিকায় টেকনাফের জনপ্রতিনিধিদের ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত থাকার বিষয়ে ‘জনপ্রতিনিধিরাই ইয়াবা কারবারি’ নামের একটি অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদনে নিহত একরামকে টেকনাফ ইয়াবা সিন্ডিকেটের শীর্ষ নেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সেই প্রতিবেদনে বলা হয় স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের মদদে একরাম সহ আরো একাধিক জনপ্রতিনিধিরা সারাদেশব্যাপী ইয়াবা ছড়িয়ে দিচ্ছে।

‘রাইজিং বিডি’ নামক পত্রিকার টেকনাফ স্থানীয় প্রতিনিধির বরাত দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকার উপর ভিত্তি করে একটি সংবাদ প্রচার করা হয়েছিল ২০১৬ সালের ২৬ জুন। সেই প্রতিবেদনে কাউন্সিলর একরামকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত টেকনাফের ইয়াবা সম্রাট হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল একরামের হাত ধরে টেকনাফের আরো অনেকেই এই ভয়ঙ্কর ইয়াবা ব্যবসায় নাম লিখাচ্ছে।

২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ নামক পত্রিকায় ‘টেকনাফে ঘরে ঘরে ইয়াবা ব্যবসা’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। উক্ত পত্রিকার টেকনাফ প্রতিনিধি সরোজমিনে ঘুরে এই প্রতিবেদন তৈরী করেন। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়ীর অধিকাংশই টেকনাফের জনপ্রতিনিধি। প্রতিবেদনে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত জনপ্রতিনিধিদের একটা তালিকাও প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকার শীর্ষে ছিল নিহত একরামের নাম। স্থানীয় জনগণের বরাত দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে একরাম টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয় করেছিল। ইয়াবার ব্যবসা থেকে আয় করা বিপুল অঙ্কের টাকা নির্বাচনে বিনিয়োগের কারণেই একরাম জনপ্রতিনিধি হন বলে মনে করেন অনেকেই। টেকনাফের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার নামে ইয়াবা ব্যবসায় যুক্ত করার অভিযোগও করা হয় একরামের বিরুদ্ধে।

টেকনাফে সরজমিনে ঘুরে জানা যায়, একরাম মূলত দেশের শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী সাহেদুর রহমান নিপু, আব্দুর রহমান এবং মোঃ ফয়সালের সাথে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত ছিল। এদের মধ্যে ফয়সাল স্থানীয় সংসদ সদস্য বদির ভাই এবং নিপু বদির ভাগ্নে।

একরাম ইয়াবা ব্যবসায় যুক্ত হন ২০০৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের দিকে ইয়াবা গডফাদারদের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠার সুবাধে তাদের সাথে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে একরাম।

দেশব্যাপী চলা মাদক বিরোধী অভিযানের সুফল পেতে শুরু করেছে দেশবাসী। সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সাধুবাদও জানিয়েছেন অনেকে। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল একরামের পারিবারিক তথাকথিত কিছু আবেগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে এই অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *