নিউজ ডেস্ক: সম্প্রতি কাঁঠালিয়া ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও নেছারবাগ বায়তুল আমান জামে মসজিদের ইমাম আবু হানিফার মাথায় মল ঢেলে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি জামায়াত শিবিরের কর্মীরা ঘটিয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন স্বয়ং লাঞ্চনার শিকার হওয়া ইমাম আবু হানিফা।
ভুক্তভোগী শিক্ষক আবু হানিফা গণমাধ্যমকে জানান, এই চক্রের অধিকাংশ লোকই স্থানীয় পর্যায়ে জামায়াত শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। এরা মুসল্লিদের ঠিকমত নামাজ পড়তেও দিত না। এছাড়া মিলাদ-মাহফিলেও বাঁধা দিত।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারি কাঁঠালিয়া ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচন হয়। নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী হন এইচ এম মুজিবর ও জাহাঙ্গীর খন্দকার। ইমাম আবু হানিফা মুজিবর রহমানের পক্ষ নেন। নির্বাচনে বিজয়ী হন মুজিবর। আর পরাজিত হন জাহাঙ্গীর খন্দকার।
ইমাম জানান, পরাজিত হয়ে তাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল জাহাঙ্গীর খন্দকার। গত ১১ মে ফজরের নামাজের পর মসজিদ থেকে বের হলে তার পথরোধ করে পরাজিত প্রার্থী ও তার লোকজন। একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর খন্দকারের এক সহযোগী ইমাম আবু হানিফার হাত ধরে ফেলে। আর ইমামকে ধরে রাখে জাহাঙ্গীর খন্দকার। এ সময় তার আরেক সহযোগী হাঁড়িভর্তি মল এনে ইমাম আবু হানিফার মাথায় ঢেলে দেয়। আর সেই ঘটনার দৃশ্যটি ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয় তারা।
আবু হানিফ বলেন, অনেক আগে থেকে স্থানীয় জামায়াত শিবির অনুসারীরা মাদ্রাসার জমি দখল করার চেষ্টা করছিল। বিনা অনুমতিতে মাদ্রাসার জমিতে বিভিন্ন কার্যক্রম করে আসছিল। আমি এতে তাদের বাঁধা দিই। এই কারণে ওরা আমার ওপর ক্ষিপ্ত।
ইউনিয়নে পরিষদের চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন বলেন, যারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের মধ্যে জামায়াতপন্থী লোকজন রয়েছে। আমরা চাই পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করুক।
এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। ১৪ মে বিকেলে বরিশালের একটি আদালতে আসামিদের তোলা হলে তিনজনের রিমান্ড আবেদন নাকচ করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
বরিশাল জেলার পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১২ নং রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামের মিনজু (৪৫) ও বাকেরগঞ্জ পৌর এলাকার বেলাল (২৫) কে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গ্রেপ্তার করা হয় মিরাজকে। পুরো ঘটনায় ১০ থেকে ১২ জন জড়িত বলে জানান পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, মাদ্রাসা সুপারের মাথায় ও শরীরে মানুষের মল ঢেলে দিয়ে লাঞ্ছনার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। জড়িত বাকিদেরও খুবই অল্প সময়ের মধ্যে আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।