যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারকে অনুদান দিচ্ছে পাকিস্তান | বাংলারদর্পন  

নিজস্ব প্রতিবেদক :

যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারকে অনুদানসহ বিভিন্ন আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে পাকিস্তান। পাকিস্তান দূতাবাসের পক্ষ থেকে অন্তত পাঁচজন যুদ্ধাপরাধীর সন্তানকে এককালীন অনুদান দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। অন্য দেশের হাইকমিশন বাংলাদেশে কাউকে এরকম অনুদান দিতে পারে কিনা, জানতে চাওয়া হলে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এরকম অনুদান দেওয়ার আগে অবশ্যই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু পাকিস্তান দূতাবাস এরকম কোনো অনুমতি গ্রহণ করেনি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, যুদ্ধাপরাধের অপরাধে সর্বোচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয় ১২ ডিসেম্বর ২০১৩ তে। এর মাত্র এক সপ্তাহ পর ২০ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার ছেলে হাসান জামিলকে পাকিস্তান দূতাবাসের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকার অনুদান দেওয়া হয়। কাদের মোল্লার পরিবার এখনো প্রতিমাসে পাকিস্তান দূতাবাস থেকে মাসিক ১০ হাজার টাকা অনুদান পায় বলে জানা গেছে।

আরেক যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী ১১ মে ২০১৬ সালে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবার পরপরই তাঁর পরিবারের সঙ্গে পাকিস্তান দূতাবাসের দুজন কর্মকর্তা দেখা করেন। মতিউর রহমান নিজামীর পত্নী শামসুন্নাহার নিজামীকে পাকিস্তান দূতাবাসের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকার নগদ অনুদান দেওয়া হয়। নিজামীর পরিবার নিয়মিত অনুদান না নিলেও তাদের বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়। শামসুন্নাহার নিজামীর বিদেশে চিকিৎসার ব্যয়ভার পাকিস্তান দূতাবাস বহন করেছে বলে জানা গেছে। আরেক যুদ্ধাপরাধী দেলোয়ার হোসেন সাইদী আমৃত্যু কারাভোগ করেছেন। সাইদী গ্রেপ্তারের পর থেকেই তাঁর পরিবারকে বিভিন্ন রকম আর্থিক সহায়তা দিয়েছে পাকিস্তান দূতাবাস। সাইদীর স্ত্রী সালেহা বেগমকে মামালা চালানোর জন্য পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছিল। এখনো সাইদীর পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর বড় ছেলে রফিক বিন সাইদী পাকিস্তান দূতাবাসের অনুদান পায় বলে জানা গেছে।

যুদ্ধাপরাধের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আলী আহসান মুজাহিদও পাকিস্তান দূতাবাস থেকে নিয়মিত মাসোহারা পায়। যুদ্ধাপরাধীদের শিরোমণি, গোলাম আযম আমৃত্যু কারাদণ্ড ভোগ করতে থাকা অবস্থায় মারা যান। তাঁর পরিবারকেও পাকিস্তান দূতাবাস নিয়মিত মাসিক আর্থিক অনুদান দেয়। তবে, বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের পিছনে যে অর্থ ব্যয় করে তা যুক্তরাজ্যের তুলনায় খুবই সামান্য। যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের কার্যত: অভিভাবক হলো সেদেশের পাকিস্তান দূতাবাস। শিক্ষাবৃত্তি, সহায়তা অনুদান ছাড়াও পাকিস্তান দূতাবাস তাঁদের সংগঠিত হবার এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণার জন্য অর্থ যোগায়।

এ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একজন কূটনীতিক বলেন, যুক্তরাজ্যে বিশেষ করে লন্ডনে যুদ্ধাপরাধীরা যে ঘাঁটি করেছে, এটা মূলত পাকিস্থান দূতাবাসের সরাসরি হস্তক্ষেপে। আসলে তাঁদের মদদ দিচ্ছে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *