নিউজ ডেস্ক: সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে সংশয়ে রয়েছে বিএনপি। সিটি নির্বাচনে পুরনো ও জনপ্রিয় প্রার্থীকে রেখে তুলনামূলক কম জনপ্রিয় প্রার্থীকে মনোনীত করা নিয়ে তৃণমূল বিএনপিতে অন্তর্দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হতে শুরু করেছে এরইমধ্যে। আপাতত গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনে দেশবাসীর দৃষ্টি থাকলেও বাকি তিন সিটি রাজশাহী বরিশাল ও সিলেটে মেয়র পদে প্রার্থীতা নিয়ে বিএনপিতে বিভিন্ন নানা হিসাব-নিকাশ চলছে।
এরইমধ্যে বিএনপির কেন্দ্র হতে চড়া দামে মনোনয়ন কেনা-বেচারও প্রশ্ন গণমাধ্যমে ফলাওভাবে প্রকাশ পেয়েছে। সে মোতাবেক সিটি নির্বাচনে গড়মিলের গুঞ্জনে এবার শোনা যাচ্ছে বরিশালেও প্রার্থীতা বদল হতে চলেছে। গাজিপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনের পরই পর্যায়ক্রমে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই বাকি তিন সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২০১৩ সালের বিজয়ী দুই প্রার্থীকে বিএনপি পাল্টে দেয়ার পর বরিশালে কী হয়, তা নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। ২০১৩ সালে বিপুল ভোটে মেয়র হন আহসান হাবীব কামাল। বর্তমান সরকারের আমলে মহানগরগুলোতে বিএনপির মেয়ররা মামলা মকদ্দমায় আতঙ্কে পড়লেও সে তুলনায় নিরাপদেই ছিলেন বরিশালের কামাল। এই বিষয়টি নিয়ে বিএনপিতে কামালকে নিয়ে কিছুটা সন্দেহ, অবিশ্বাস দানা বেঁধেছে। দলের একটি অংশ প্রকাশ্যেই তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। বিভিন্ন সময় দলীয় কর্মসূচিতে তাকে নানাভাবে লাঞ্ছনার চেষ্টাও হয়েছে। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার মনোনয়ন।
গাজীপুর এবং খুলনার মতো বরিশালেও জেলা বিএনপির একটি বড় অংশই প্রার্থী পাল্টানোর পক্ষে। তারা সাবেক মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ারকে আবার মনোনয়ন দেয়ার দাবি তুলছেন। তবে মেয়র কামাল আশা করছেন, দলীয় প্রতীকে ভোটেও তাকেই প্রার্থী করবে দল। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে তা সত্য নয়।
বিএনপির জন্য মনোনীত প্রার্থীর বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, ‘প্রার্থী কে হবে, সেটা সময়ই বলে দেবে।’
বরিশাল যুবদলের এক নেতা বলেন, ‘মেয়র কামাল পাঁচ বছর পদে থাকাকালে দলের কাজে অংশ নেননি। কোনো কর্মসূচিতেই তাকে পাওয়া যায় না। এই সময়ে তিনি নিজের আর নিজ পুত্রের জন্য কাজ করেছেন। দলের জন্য তার ত্যাগ শূন্য। তবে দলের অভ্যন্তরে যেভাবে মনোনয়ন বাণিজ্যের খেলা চলছে তাতে ঠিক করে বলা যাচ্ছে না কে হবেন বরিশালের মনোনীত প্রার্থী।’
এদিকে আরেক আলোচিত প্রার্থী বিলকিস জাহান শিরিন সম্পর্কে জানতে চাইলে তার ওই যুবদল নেতা বলেন, ‘তিনি তো সব সময় ঢাকায়ই থাকেন। কেন্দ্রের সাথে তার যোগাযোগ খুবই ভালো। শুনেছি তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগও রক্ষা করেন তিনি। আর দলের শীর্ষ নেতারা তো আছেনই। ফলে তার প্রার্থীতাও ফেলে দেয়ার মতো নয়।’
সবকিছু বিবেচনায় এখন কেন্দ্রের সাথে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ, অর্থের দম্ভকে মনোনয়নের বড় হাতিয়ার বলে মনে করছেন বরিশাল বিএনপির কর্মীরা।