ফেনীতে ভিক্ষুক বেড়েই চলছে, পুনর্বাসন করা প্রয়োজন | বাংলারদর্পন

সৈয়দ মনির অাহমদ >> দেশ অর্থনৈতিকভাবে  এগিয়ে যাচ্ছে।  বাংলাদেশ এখন উন্নয়ন শীল দেশ।  অামাদের মাথাপিছু গড় অায় প্রায় ১৭০০ ডলার।

সমাজের অনগ্রসর জাতি গোষ্ঠীর উন্নয়নে সরকার বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, দুস্থ্য ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা সহ নানাবিধ কর্মসুচী চালিয়ে যাচ্ছে। ভিক্ষুক পুনর্বাসনের উদ্যোগও নিয়েছে বর্তমান সরকার। কিন্তু ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্প সঠিকভাবে  বাস্তবায়িত হচ্ছে না।  তাই ভিক্ষুকের সংখ্যা কমছে না, বরং বেড়ে চলেছে। ইতোপূর্বে ভিক্ষাবৃত্তি নিরসনে বিকল্প কর্মসংস্থানসহ ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচী নেয় সরকার। কিন্তু তা সফল হয় নি। একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরে বলা হয় রাজধানীসহ সারাদেশের রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল, এয়ারপোর্ট, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজের সামনে, মাজার, বাসা-বাড়ি, রাস্তা-ঘাটে ভিক্ষুক আর ভিক্ষুক। সারা দেশে ভিক্ষুকের সংখ্যা কতো তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিক্ষা বৃত্তির মতো লাভজনক পেশা পৃথিবীতে আর কোথাও নেই। বাংলাদেশে ভিক্ষুকদের যে আয় রোজগার হয় তার এক তৃতীয়াংশও দৈনিক খেটে খাওয়া কুলি মজুরদের নেই; এমনকি মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরও নেই।  এই অবস্থায় সরকার এখনও আশাবাদী যে, ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন করা সম্ভব হবে অচিরেই।

ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে জড়িত লাখ লাখ মানুষ। এটাকে অনেকে একটা ‘সামাজিক অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকেও ভিক্ষাবৃত্তিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভিক্ষাবৃত্তি নির্মূলে তাগিদ দিয়েছেন হযরত মুহাম্মদ (সা.)। তিনি ভিক্ষার হাতকে কর্মের হাতিয়ারে পরিণত করার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যান্য ধর্মেও ভিক্ষাবৃত্তিকে সমর্থন করা হয় নি। এজন্য ভিক্ষাবৃত্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে এখনই। এটা ঠিক যে, দারিদ্র্য ভিক্ষাবৃত্তির মূল কারণ। আর তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেই এই প্রবণতা বেশি। অনেক ক্ষেত্রে দারিদ্র্য নয়, ব্যবসা হিসেবে ভিক্ষাবৃত্তিকে বেছে নিয়েছে অনেকে। তবে আমাদের সংবিধান অবশ্য এই ভিক্ষাবৃত্তিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে নি।

বেসরকারি হিসেবে দেশে এখন ভিক্ষুকের সংখ্যা প্রায় ১২ লাখ। এই ভিক্ষাবৃত্তি নির্মূলে দরকার সর্ব মহলে সচেতনতা। একজন সক্ষম ব্যক্তি যে দৈহিক শ্রম দিয়ে রোজগার করতে পারে, তাকে ভিক্ষা দেয়া মানে ভিক্ষাবৃত্তিকে উৎসাহিত করা।

 

ইতোপূর্বে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশও দিয়েছিলেন ‘আশ্রায়ন’ ও ঘরে ফেরা’ কর্মসূচিসহ অন্যান্য সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচীর মাধ্যমে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসিত করার। কিন্তু তাও বাস্তবায়িত হয় নি। সরকার ২০১০ সালে ভিক্ষাবৃত্তি নির্মূলে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেয়। এর জন্য ভিক্ষুক জরিপ কার্যক্রমও শুরু হয় বিভিন্ন শহরে। ফেনীতে গত মার্চ মাসে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের প্রাথমিক কাজও শুরু হয়। প্রাথমিক ভাবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০০ জনকে বিকল্প পেশায়  পুনর্বাসিত করা হয়েছে। এখনো ফেনী শহরের গুরুত্বপূর্ন স্থান গুলোতে ভিক্ষুক দেখা যায়। সরেজমিনে দেখা গেছে, অাদালত পাড়া, জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের প্রবেশ গেইট, মসজিদের বারান্দা,উপজেলা কার্যালয়, পৌর কার্যালয়, বাস ও অটোরিক্সা স্ট্যান্ডে নিয়মিত একই ভিক্ষুক দেখা যায়। ধারনা করা হচ্ছে শহরের মত ফেনীতেও তাদের নেটওয়ার্ক থাকতে পারে। নিয়ন্ত্রন করতে পারে কোন গডপাদার। সাধারন জনগন মনে করে সমাজের বিত্তবান লোকেরা সরকারকে সহযোগীতা করলে ভিক্ষুক সমস্যার সমাধান হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *