গাজীপুরে জামায়াতের প্রার্থী প্রদান ও দলীয় কোন্দলে পরাজয়ের আশঙ্কা বিএনপির 

নিউজ ডেস্ক: আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রতিপক্ষ এখন জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামী! গাজীপুরে জামায়াতের নগর আমির অধ্যক্ষ সানাউল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এছাড়া ৬টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থীও দিয়েছে জামায়াত। জামায়াত তাদের প্রার্থীদের পক্ষে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে। ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। যা এখন বিএনপির জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা গেছে, গত ৫ এপ্রিল ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল- সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জোট একক প্রার্থী মনোনয়ন দিবে এবং তাদের পক্ষে জামায়াতসহ সকল দল ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। কিন্তু সর্বশেষ গত ১৯ এপ্রিল গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রস্তুতি ও পরিচালনার জন্য ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে জোটের ১৯টি দলের নেতারা থাকলেও জামায়াতের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও জামায়াতের কেউ আসেননি।

জানা গেছে, নিবন্ধন না থাকায় জোটের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে জামায়াত প্রার্থীরা। এদিকে গত ১৫ এপ্রিল স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ সানাউল্লাহর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডল। ফলে নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে অধ্যক্ষ সানাউল্লাহ থাকলে বিএনপির ভোট ব্যাংকে এর বড় প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ।

জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ সানাউল্লাহ দাবি করেছেন, দলের স্বার্থে ও দলকে আরো সুসংগঠিত করতে কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতৃবৃন্দের নির্দেশেই তিনি প্রার্থী হয়েছেন। তিনি জানান, জোট শুধুমাত্র জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিন্তু বিএনপি সকল নির্বাচনেই জোটকে নিজেদের পক্ষে নামতে বাধ্য করতে চায় যা সম্পূর্ণ অনৈতিক। বিগত দিনে দেশের সকল স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। বিশ দলীয় জোটের সকল শরিকরাও তাই মনে করেন, কিন্তু তাদের প্রার্থী বা সাংগঠনিক শক্তি না থাকায় তারা চুপ থাকলেও জামায়াতের সেই শক্তি ও সামর্থ্য রয়েছে তাই জামায়াত প্রার্থী দিয়েছে। গাজীপুরে মেয়র ছাড়াও ৬টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদেও প্রার্থী দিয়েছে জামায়াত। এই ওয়ার্ডগুলোতে বিএনপির প্রার্থীও রয়েছে।

অন্যদিকে, বিএনপির বর্তমান মেয়র আবদুল মান্নান ও বিএনপির এবারের মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের বিভাজন দীর্ঘদিনের। এই দু’জন নেতার আলাদা দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থক রয়েছে। মান্নান সমর্থকরা কখনই হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে কাজ করবে না। এমনকি, হাসান উদ্দিন সরকারকে হারাতে প্রতিপক্ষের হয়ে কাজ করতেও দ্বিধা করবে না বলে জানা যায়। কাজেই তাদের ঐক্যবদ্ধ করে এক কাতারে দাঁড় করানো কঠিন ব্যাপার। তার মধ্যে জামায়াত মেয়র প্রার্থী দেওয়ায় তাদের ভোটও বিএনপির পক্ষে না পড়লে বিএনপি নির্বাচনের মাঠে বেকায়দায় পড়ে পরাজয় বরণ করতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *