সোহেল রানা >>>
আমরা সবাই হিপোক্রেট ; কেউ কম কেউ বেশি। তাই সমাজ যখন ভয়ানকভাবে মেরুমুখী তখন যত কম বলা যায় ততই মঙ্গল।
কারো কারো টাইমলাইন দেখলে মনে হয় উনি তার দিনের একটি দীর্ঘ সময় ফেইসবুক স্ট্যাটাস লিখে ব্যয় করেন। এখন সময়ের যে হাল তাতে লিখালিখি খুব একটা কাজে লাগে বলে মনে হয় না। তাই যত কম লেখা ও বলা যায় তত উত্তম। কারণ আপনি সবটা যদি সত্য লেখেন তাহলে আপনার অস্তিত্ব বিলীন হবেই। আপনাকে তাই ব্যালেন্স করতে হয়। আপনি সব সময় স্বাধীনভাবে পুরোপুরি সত্য লিখতে পারবেন না। কারণ আপনি আসলে কখনোই স্বাধীন ছিলেন না; হবেনও না। তাই আপনার লেখাও যে পরাধীনতার হিস্যা মেটানোর পর সঠিক বার্তা দিবে সে সম্ভাবনাও কম! যেহেতু আপনি পরাধীন ও ব্যালেন্সকারী তাই যত কম বলা যায় তত উত্তম!
ভেবে দেখুন খুব ভালো করে। অনেক বক্তব্যই আপনি দেন যা সম্মন্ধে আপনার কোন ধারণা নেই, যা বিশ্লেষণের সুযোগও আপনি পান না। অনেক ঘটনা সম্মন্ধে আপনি মন্তব্য করেন যা আপনি দেখেননি! আপনি প্রায় সময়ই শক্তিকে কনফিডেন্সে নিয়ে এগোতে চান। নাহলে আপনার অস্তিত্বে টান পড়তে পারে। আপনি প্রায়ই সবাই যাকে ঠিক বা ভুল বলে তার বিরুদ্ধে যান না। অনেক সত্য আপনি মাইর খাওয়ার ভয়ে লিখতে চান না; চিনির প্রলেপ দিয়ে লিখেন। নাহলে অস্তিত্ব ফটাশ হয়ে যেতে পারে। মানুষের অস্তিত্ব পাকাপোক্ত করার তাড়না একেবারেই সহজাত ও প্রকৃতিপ্রদত্ত। তাই আপনাকে আমি দোষও দেই না।এত বেশি না লিখে বা না বলে আপনি কাজে মনোনিবেশ করতে পারেন। আপনার কাজ অনেক বেশি কথা বলবে।
আমাকে এক বড় ভাই বলেছিলেন, ” আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবিরা ভয়ানকভাবে বুদ্ধিহীন। আমরা জানিই না আমরা কত বেশি জানি না। আমরা যে অনেক বেশি হুজুগে তার কারণ আমাদের জানার ও বিশ্লেষণের প্রবণতা ও ধৈর্য কম।”
আমার প্রায়ই মনে হয় : কিম জং উন এই মূহুর্তে পৃথিবীর একমাত্র স্বাধীন মানুষ!
লেখক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ফেনী জেলা প্রশাসন।