লক্ষীপুর সংবাদদাতাঃ
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে মাদ্রাসার পরিচালক ও পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহন করতে ছাত্রদের বাধ্য করেছে মাদ্রাসার শিক্ষকরা।
জানা যায়, উপজেলার চর কলাকোপা জামিয়া ইসলামিয়া কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানার পরিচালক মুফতি আবু বক্কর সিদ্দিক ও পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম,স্বেচ্ছাচারিতা, শিক্ষক হয়রানি, শিক্ষক লাঞ্ছিত করা,চাকুরীচ্যূত ও প্রাণ নাশের হুমকিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ইউএনও’র কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই মাদ্রাসার ভুক্তভোগী শিক্ষক নিজাম উদ্দিন।
অভিযোগের আলোকে ২১শে মার্চ উভয়পক্ষকে শুনানির জন্য ডাকা হয়।শুনানীতে ইউএনও মো: আজগর আলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন এবং তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত মাদ্রাসার ব্যাংক একাউন্ট সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত দেন।
এর প্রেক্ষিতে উক্ত মাদ্রাসার শিক্ষকরা গতকাল বুধবার মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে সাধারন ছাত্রদের দিয়ে জোরপূর্বক বিক্ষোভ মিছিল করতে বাধ্য করে বলে জানা যায়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্র জানায়,শিক্ষকরা জোর পূর্বক ক্লাস বর্জন করে মিছিল করতে বলে নাহলে তাদের মাদ্রাসা থেকে বের করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।
অভিযোগকারী শিক্ষক নিজাম উদ্দিন জানান,মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি আবু বক্কর ছিদ্দিক বিতর্কিত একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে কাজ করেন।তিনি ছাত্রদের বিভিন্ন মিছিল মিটিং এ যেতে বাধ্য করেন।তিনি নিয়মের তোয়াক্কা না করে একক সিদ্ধান্তে মাদ্রাসার বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক কাজ থেকে আর্থিক সুবিধা নেন।তিনি পরিচালনা কমিটির সহায়তায় মাদ্রাসার বার্ষিক প্রতিবেদনে অডিট কর্মকর্তার স্বাক্ষর নকল করে প্রতিবেদন জমা দেন।তাদের এসব অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করায় তাকে চাকুরিচ্যুত করে প্রান নাশের হুমকি ও বিভিন্নভাবে হয়রানী করা হয়।
মাওলানা মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান নামে আরো একজন শিক্ষক জানান,এই মাদ্রাসায় ৩১ বছর শিক্ষকতা করেছেন।কয়েকমাস পূর্বে বর্তমান কমিটির ইন্দনে কিছু বহিরাগত ও মাদ্রাসার কিছু ছাত্র বিভিন্ন হুমকি দিয়ে অশোভন আচরন করে।এরপর থেকে তিনি প্রাণভয়ে মাদ্রাসায় যেতে পারছেননা।এ বিষয়ে তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যানের নিকট অভিযোগ দিয়েছেন।মাদ্রাসার পরিচালক ছাত্রদের উস্কানী দিয়ে বিভ্রান্ত করছে বলে তিনি জানান।
রামগতি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন হেলাল জানান,ইউএনও সাহেব মাদ্রাসার অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে কমিটি করায় একটি ইসলামী রাজনৈতিক দলের অনুসারী শিক্ষকরা ছাত্রদের উস্কানি দিয়ে মাদ্রাসায় মিছিল করায়।শুনানীর দিন কোন শিক্ষকের সাথে তিনি অশোভন আচরন করেন নাই।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়,মাদ্রাসাটিতে একক কতৃত্ব ধরে রাখার জন্য ওলামালীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতার ইন্দনে স্থানীয় একটি
প্রভাবশালী মহল শিক্ষকদের ইউএনও লান্চিত করেছেন, এই মর্মে ছাত্রদের উস্কানী দিয়ে মিছিল করিয়েে বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে অসত্য সংবাদ প্রেরণ করে।
এ বিষয়ে রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আজগর আলী জানান, দীর্ঘদিন ধরে উক্ত মাদ্রাসা নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ থাকায় তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত মাদ্রাসার ব্যাংক একাউন্ট সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ চাইলে একাউন্ট থেকে টাকা উঠানোর অনুমতি দেয়া হবে।
তিনি এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে অসত্য সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদ জানান।