শেখ হাসিনার রাজনীতি, বিচক্ষণতা এবং কৌশল নিয়ে গবেষণা হচ্ছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে

ডেস্ক রিপোর্ট :

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে চর্চা হচ্ছে। অন্তত তিনটি বড় ধরনের গবেষণায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি, বিচক্ষণতা এবং কৌশল নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। ক্লাসরুমে শিক্ষকদের বক্তৃতায় বার বার উঠে আসছে শেখ হাসিনা প্রসঙ্গ। হার্ভার্ডের কেনেডি স্কুলে শিক্ষকদের লেকচারে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে আসছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাজ এবং তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া।

গর্ভমেন্ট বিষয়ে অধ্যাপক গ্রাহাম অ্যালিসন। কেনেডি স্কুলে সরকার বিষয়ে পড়ান। এই কেনেডি স্কুল থেকে লেখাপড়া করে বেরোনো অন্তত ২১ জন এখন বিভিন্ন দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান। সরকার ও রাজনীতি বিভাগকেই হার্ভার্ড কেনেডি স্কুল বলা হয়।

গ্রাহাম অ্যালিসন তাঁর লেকচারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বশান্তির মডেল ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ কে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত এক গবেষণায় ‘দারিদ্র থেকে উঠে আসা দেশগুলোতে সরকারের ভূমিকা’ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা উঠে এসেছে উদাহরণ হিসেবে। গবেষণায় বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে ইতিবাচক পরিবর্তনের ধারা সূচিত হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। তিনি উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রের সমন্বয় করেছেন।

হাভার্ডের কেনেডি স্কুলের আরেক খ্যাতিমান অধ্যাপক আর্থার অ্যাপলবাম, তিনি ‘পলিটিক্যাল লিডারশীপ এবং ডেমোক্রেটিক ভ্যালুস’ বিষয়ে এডামস প্রফেসর। তাঁর সাম্প্রতিক লেকচারগুলোতেও শেখ হাসিনা প্রশংসার বন্যায় ভাসছেন। তাঁর নেতৃত্বে একদল পিএইচডি শিক্ষার্থী ‘রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং শরণার্থী সমস্যা নিয়ে গবেষণা করছে। সেই গবেষণায় উঠে এসেছে রোহিঙ্গা শরণার্থী গ্রহণে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও সাহস। ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, ‘রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঠিক সিদ্ধান্ত একটি জাতিকে নতুন উচ্চতা দেয়, তার সবচেয়ে ভালো উদাহরণ সম্ভবত বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা।’ গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ‘শেখ হাসিনা সামরিক স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের উত্তরণ ঘটিয়েছেন। এজন্য তাঁকে দীর্ঘ সংগ্রাম করতে হয়েছে।’ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর অনেক সমালোচনা সত্ত্বেও তিনি শান্তিবাদী এবং সেক্যুলার রাজনীতির ধারাকে বেগবান করেছেন। অর্থার তাঁর সাম্প্রতিক এক নিবন্ধতেও বলেছেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে শেখ হাসিনা সারাবিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।

ক্রিস্টোফার অ্যাভেরি, কেনেডি স্কুলে পাবলিক পলিসি পড়ান। পাবলিক লিডারশিপ এবং ম্যানেজমেন্টের উপর তাঁর অনেকগুলো গবেষণা আছে। অ্যাভেরিও তাঁর সাম্প্রতিক গবেষণায় শেখ হাসিনাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। শেখ হাসিনার উন্নয়ন কৌশলকে তিনি জনপ্রিয় নেতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হিসেবে মনে করছেন। তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত এক গবেষণায় ‘শুধু নেতার জনপ্রিয়তার কারণে একটি অজনপ্রিয় দল কীভাবে ক্ষমতায় দীর্ঘদিন টিকে থাকে, তার উদাহরণ হিসেবে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রসঙ্গ এসেছে। বিরোধপূর্ণ রাজনীতি বাংলাদেশের বিরোধী প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করার রাজনৈতিক কৌশলকে অ্যাভেরি বলেছেন ‘ভালো রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা হিসেবে। জাতির পিতার পর হার্ভার্ডের বিশ্বখ্যাত ক্যাম্পাসে এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো রাজনীতিবিদকে নিয়ে এভাবে চর্চা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে, সরকারের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, যিনি হার্ভার্ডে অধ্যাপনা করছেন, বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘কেনেডি স্কুলে পাঠ্যবইয়ের চেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয় সমসাময়িক রাজনীতি এবং বিশ্ব পরিস্থিতিকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিভাগে পড়ে সব আগামী দিনের বিশ্বনেতারা। শেখ হাসিনা আজ বিশ্বের রোল মডেল। তাই আগামী দিনের বিশ্ব নেতারা তাঁকে নিয়ে চর্চা করবে এটাই স্বাভাবিক। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে বিশ্বের অনেক কিছুই শেখার আছে।’ আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এই শিক্ষাবিদ বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশ নয় এখন তিনি বিশ্বের সম্পদ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *