প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে গৃহীত হবে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের প্রস্তাবিত পদ্ধতি

 

ডেস্ক রিপোর্ট : প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে বদলে যাচ্ছে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি ও সরবরাহ পদ্ধতি। পুরো প্রক্রিয়াটিই স্বয়ংক্রিয় করতে যাচ্ছে সরকার।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, এ পদ্ধতির ত্রুটি-বিচ্যুতি পরীক্ষা করতে আগামী এসএসসি পরীক্ষার প্রি-টেস্ট এবং টেস্ট পরীক্ষায় তা পাইলটিং করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে।

আর এই লক্ষ্যে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল প্রস্তাবিত একটি পদ্ধতি হতে পারে কার্যকর সমাধান। পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন পরীক্ষার্থীদের হাতে যায় ৬ থেকে ৭টি ধাপ পেরিয়ে।

প্রথম ধাপে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা নিজেদের মত প্রশ্ন প্রণয়ন করেন। এরপর সব প্রশ্ন পরিশোধন করে লটারির জন্য তৈরি করা হয়। ৩য় ধাপে লটারির মাধ্যমে চূড়ান্ত হয় প্রশ্নপত্র। এরপর তা সিলগালা করে পাঠানো হয় বিজি প্রেসে।

সেখানে ছাপা হওয়ার পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে সিলগালা করা ট্রাংকে করে পাঠানো হয় জেলা ট্রেজারিতে। সেখান থেকে যায় উপজেলা ট্রেজারি বা ব্যাংকের ভল্টে। পরীক্ষার দিন সকালে প্রশ্ন নিয়ে যাওয়া হয় পরীক্ষা কেন্দ্রে। পরীক্ষার আধা ঘন্টা আগে সিলগালা খুলে বিতরণ করা হয় পরীক্ষার্থীদের মাঝে।

মূলত ৩য়, ৪র্থ এবং শেষ ধাপে প্রশ্ন ফাঁস হতে পারে। কোনোভাবেই প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে না পেরে এখন প্রশ্ন তৈরি ও সরবরাহ পদ্ধতিতেই পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার।

কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছিলেন,‘প্রশ্ন ২ মাস আগে তৈরি করা হয়। এই ধারণার সঙ্গে আমি একমত নই। কারণ ২ মাস আগে এনালগ পদ্ধতিতে প্রশ্ন তৈরি করলে সেটা ফাঁস হয়ে যাওয়ার বিভিন্ন উপায় থাকে।

আমার প্রস্তাব হচ্ছে প্রশ্ন তৈরি হবে পরীক্ষার দিন সকালে। আর সেটি হবে পারমুটেশন, কম্বিনেশন পদ্ধতিতে। কম্পিউটারই প্রশ্ন করবে। কেউ দেখবে না। র্যানডম স্যাম্পলিং এর মাধ্যমে কম্পিউটার প্রশ্ন তৈরি করবে। আর সেটি অনলাইনে চলে যাবে সেন্টারে সেন্টারে। তাহলে আর ঝুঁকি থাকবে না।

নতুন পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দিয়ে একটি প্রশ্ন ব্যাংক তৈরি করা হবে। এরপর একটি বিশেষায়িত সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় ভাবে একটি প্রশ্ন নির্বাচন করা হবে। যা কারো দেখার সুযোগ থাকবে না। একেবারে পরীক্ষা শুরুর নির্দিষ্ট সময় আগে ই-মেইল বা অন্যান্য মাধ্যমে প্রশ্নটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাঠানো হবে সকল পরীক্ষাকেন্দ্রে। এরপর, পরীক্ষার ঠিক আগে কেন্দ্রেই প্রশ্ন প্রিন্ট করা হবে।

এ পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ নিরাপদ করতে পারলেই প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকবে না

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *