বাংলার দর্পন ডটকম : দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভবন ও সেতু নির্মাণে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। এবার রেললাইনে স্লিপারে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রেলরুটের মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার হাজীপুর ইউনিয়নে মনু রেলসেতুতে রেললাইনে স্লিপারের বদলে বাঁশ লাগানো হয়েছে। ফলে স্লিপার স্থানচ্যুত হয়ে রেললাইন সরে যে কোনও সময় বড় ধররনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মনু নদের ওপর প্রায় ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুতে ২০৮টি স্লিপার রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেক স্লিপার নষ্ট। তাই স্থানচ্যুতি ঠেকাতে স্লিপারের মাঝে ফালি করা বাঁশ লাগিয়ে রাখা হয়েছে।
হবিগঞ্জের লস্করপুর থেকে কুলাউড়ার টিলাগাঁও রেলস্টেশন পর্যন্ত এলাকায় দায়িত্বে থাকা রেলওয়ের শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলী আজম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মনু রেলসেতুটি নিয়ে আমরা চিন্তিত। সেজন্য ওই এলাকায় একজন কি-ম্যান (রক্ষণাবেক্ষণ কর্মী) সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে থাকেন।’
সিলেট কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান বলেন, কাঠের সংকটের কারণে নতুন স্লিপার স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে কাঠের স্লিপারের বদলে বাঁশ থাকার অভিযোগের বিষয়ে তিনি সরজমিন পরিদর্শন করে দেখবেন।
তিনি বলেন, আগামী দুই বছরের মধ্যেই রেললাইনে পুরনো স্লিপারের বদলে নতুন স্লিপার বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে কোনও ঝুঁকি নেই বলে তিনি দাবি করেন।
মনু রেলস্টেশনের পাশ ঘেঁষেই সেতুটির অবস্থান। রেলওয়ের তিনজন কি-ম্যান সেতুর ওপরে নাট-বল্টু লাগিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্লিপারের সঙ্গে নিচের গার্ডারের সংযোগ দেওয়ার কাজ করছেন। সেতুর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত স্লিপারে পেরেক ঠুকে বাঁশের ফালি লাগানো।
কি-ম্যান আবদুর রহমান বলেন, ‘স্লিপারগুলো অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। ট্রেন চলাচলের সময় ঝাঁকুনিতে নাট-বল্টু খুলে স্লিপারগুলো সরে যায়। দিনে দুই-তিনবার এসে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে হয়। কোথাও ক্রটি থাকলে সারাতে হয়। স্লিপার যাতে স্থানচ্যুত না হয়, সেজন্য ফালি করা বাঁশ দিয়ে স্লিপারগুলো আটকে রাখা হয়েছে।’