ত্যাগী নেতা কর্মীরাই টিকিয়ে রেখেছে আওয়ামীলীগকে: শেখ হাসিনা

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বাধা কাটিয়ে উঠে আসার জন্য আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদেরই কৃতিত্ব দিয়েছেন দলটির সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সদ্য প্রয়াত দুই নেতার স্মরণে এক সভায় তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগের উপর অনেক আঘাত এসেছে। এই ত্যাগী নেতাদের জন্য কেউ আওয়ামী লীগের ক্ষতি করতে পারেনি।”

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে রাজনৈতিক দলগুলোকে ভাঙার চেষ্টার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “শুধু ক্ষমতাসীন সরকার নয়, দলের মধ্যে থেকেও বিভিন্ন সময়ে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। এই পুরনো লোকদের জন্যই দলের কিছু হয়নি।”

ঢাকা মহানগর শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ এবং সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল ইসলাম স্মরণে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিটিউশনে এই সভার আয়োজন করে।

তিন যুগ ধরে বাংলাদেশের প্রাচীন দল আওয়ামী লীগে নেতৃত্ব দিয়ে আসা শেখ হাসিনা তার ২০ মিনিটের বক্তব্যের পুরোটাজুড়েই এম এ আজিজ এবং নুরুল ইসলামকে স্মরণ করেন।

নুরুল ইসলামকে স্মরণ করে তিনি বলেন, “উনাকে নুরুল ইসলাম চাচা বলেই জানতাম। সারাক্ষণ আওয়ামী লীগের প্রচার করত, আওয়ামী লীগের জন্য উনি বহুবার গ্রেপ্তার হয়েছেন।”

ঢাকার নেতা আজিজকে স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “সবার প্রিয় আজিজ ভাই, আমিও উনাকে আজিজ ভাই বলে জানতাম।”

“ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ হওয়ার নয়”

গত ২৩ জানুয়ারি মস্তিস্কের রক্তক্ষরণে মারা যান ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আজিজ। পুরান ঢাকার হোসাইনী দালান এলাকার এই বাসিন্দা জীবনের পুরোটা সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন।

তার বাবা পুরান ঢাকার বিলুপ্ত পঞ্চায়েতের নেতা পেয়ারু সরদার ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় প্রথম শহীদ মিনার তৈরিতে সহায়তা করেছিলেন।

আজিজের পরিবারের অবদানের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রতিটি সময়ে ছাত্র বা রাজনৈতিক কর্মীদের পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জায়গা ওই হোসনী দালান।”

১৯৭০-এর নির্বাচনেও এম এ আজিজের পরিবারের অবদানের কথা স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

রাজনৈতিক কর্মসূচি সফলে আজিজের অবদান তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “কোনো বড় অনুষ্ঠান বা কনফারেন্স হলে মঞ্চ থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়া তাদের (এম এ আজিজের পরিবার) ওখান থেকে হত। টাকা যা জোগাড় করতাম, তা উনার হাতে তুলে দিতাম।”

“একাশি সালে দেশে ফেরার পর আজিজ ভাইয়ের পরিবারের কাছ থেকে স্নেহ-ভালোবাসা পেয়েছি।”

সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যুর পর ২০০৭ সালে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি গঠনের সময় আজিজকেই সভাপতি হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন বলে জানান শেখ হাসিনা।

“আমি সাহারা আপার (সাহারা খাতুন) মাধ্যমে জিল্লুর রহমানে কাছে আজিজ ভাইয়ের নাম পাঠাই।”

“আমরা ঢাকা মহানগরের দক্ষিণ ও উত্তরের কমিটি করে রেখেছিলাম। দক্ষিণের সভাপতি করেছিলাম আজিজ ভাইকে। এত ব্যস্ত ছিলাম। ওই ঘোষণা দিতে পারলাম না,” বলেন শেখ হাসিনা।

হানিফের মৃত্যুর পর থেকে ঢাকা মহানগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন আজিজ। মাঝে সম্মেলন হলেও নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। আজিজ ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বেই পালন করে যাচ্ছিলেন।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি কামাল আহমেদ মজুমদারের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, খাদ্যমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, এম এ আজিজের ছেলে কাউন্সিলর ওমর বিন আজিজ তামিমও বক্তব্য করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *