প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নামছেন নির্বাচনী প্রচারে ★ বাংলারদর্পন 

 

ডেস্ক রিপোর্ট :

২১ জানুয়ারি ২০১৮ :

৩০ জানুয়ারি হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত এবং সিলেটে সমাবেশের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্বাচনী সফর শুরু হচ্ছে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি যাবেন বরিশালে। এভাবে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে নির্বাচনী সফর করবেন। এরপর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বেছে বেছে জেলা সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এ ছাড়া দলের অন্য কেন্দ্রীয় নেতারা ২৬ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে সফর শুরু করবেন। এ জন্য জ্যেষ্ঠ কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে ১৫টি দল গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচনের কৌশল ঠিক করা, পর্যবেক্ষণ জোরদার ও সাংগঠনিক তৎপরতা চালানোর জন্য ধানমন্ডিতে নতুন একটি কার্যালয় খোলা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। অতীতের নির্বাচনগুলোতে সাধারণত তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা নির্বাচনী প্রচার শুরু করতেন। হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করে প্রচার শুরু বা শেষ করতেন। এবার অনেক আগেই প্রচারে নামছেন তিনি। আওয়ামী লীগের নেতাদের ভাষায়, এটা ‘প্রাক্-নির্বাচনী প্রচার’। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও সফর করবেন।

সরকারের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে ১২ জানুয়ারি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণেও প্রধানমন্ত্রী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কখন হবে ও কীভাবে হবে, সেই বার্তা দিয়েছেন। সব দলের অংশগ্রহণ আশা করলেও সংবিধান মেনে তাঁর নেতৃত্বাধীন নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে—এটাও স্পষ্ট করেছেন। এর মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক উত্তাপ শুরু হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতারা বিভাগে ও জেলায় জেলায় সফর শুরু করলে নির্বাচনী উত্তাপ আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে যে শক্ত মনোভাব দেখাচ্ছেন, তাতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করার সুযোগ নেই। এবার আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। এ ছাড়া টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারণে অনেক মানুষের মধ্যে নানা কারণে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এর সঙ্গে আছে সরকারি দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং বেশির ভাগ আসনে দলের একাধিক প্রার্থী। সবকিছু সামাল দেওয়ার জন্য এবার একটু আগে নামতে হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক  বলেন, দলকে জয়ী করতে হলে প্রচারের বিকল্প নেই। সরকার অনেক উন্নয়ন করেছে, সেটা মানুষকে জানাতে পারলে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হবে। প্রধানমন্ত্রী ও দলের কমিটিগুলোর সফর সম্পন্ন হলে দলও সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হবে।

সিটি ও জাতীয় নির্বাচন—দুটিই লক্ষ্য

আওয়ামী লীগ ও সরকারি সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর সিলেট সফরে মাজার জিয়ারত, রাজনৈতিক সমাবেশ ছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কর্মসূচি রয়েছে। দলীয় প্রধান ইতিমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন যে এখন থেকে ঢাকার বাইরে প্রধানমন্ত্রীর যত সরকারি সফর হবে, সব কটিতেই রাজনৈতিক সমাবেশ থাকতে হবে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বিভাগীয় সফর শুরু করা হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি সিটি করপোরেশন নির্বাচন মাথায় রেখে। আগামী মার্চ-এপ্রিলে গাজীপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল—এই পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হতে পারে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আচরণবিধি অনুসারে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও সাংসদেরা নির্বাচনের সময় ভোট দেওয়া ছাড়া কোনো প্রচারে অংশ নিতে পারেন না। এ জন্য সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই বিভাগীয় সফর শেষ করার পরিকল্পনা সরকারপ্রধানের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *