চট্টগ্রাম ব্যুরো: ‘প্রিয় নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা যে আদর্শ নিয়ে পৃথিবীতে তাশরীফ এনেছেন সে আদর্শ বাস্তবায়িত হচ্ছে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফে। গারে হেরার ধ্যান, ফয়েজে কোরআন, তাওয়াজ্জুহ’র মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি, নূরে বাতেন আদান-প্রদান, তাহাজ্জুদের অনুশীলন, সুন্নাতে নববী (দঃ) পালন ও হুব্বে মোস্তফা (দঃ) অন্তরে লালনের আধ্যাত্মিক ব্যবস্থাপনার প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছে এ দরবার।’ কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মহান মোর্শেদ, আওলাদে রাসূল, হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্ল¬াহ্ আহমদী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) মাহফিলে এ কথা বলেন।
তিনি গতকাল ০১ ডিসেম্বর জুমাবার রাউজান কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে ৬৪ তম পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) শীর্ষক সেমিনার ও মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথির গুরুত্বপূর্ণ তকরির রাখছিলেন।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উদযাপন উপলক্ষে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত এ মাহফিলে প্রধান অতিথি আরও বলেন, বর্তমানের মত মুসলিম জাতির ক্রান্তিকালে কাগতিয়ার গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হু যুব সমাজকে নবীজির আদর্শে আদর্শবান করে তোলার জন্য মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ গঠন করেন। যার ছায়াতলে এসে হাজার হাজার যুবক নবীজির নূরে বাতেনে নিজেদের ক্বলবকে আলোকিত করছে। যার ফলে গভীর রজনীতে উঠে যুবকরা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে ‘আল্লাহু-আল্লাহু’, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ জিকিরে মাশগুল হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এ তরিক্বতে দীক্ষিত হাজার হাজার মুসলিম যুবক-যুবতি ইসলামের অনুশীলন বিশেষ করে পর্দা অবলম্বন করে দৈনন্দিন জীবন চালিয়ে যাচ্ছেন। তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহারে মুসলিম যুবক-যুবতির কলুষিত অন্তরে তাওয়াজ্জুহ প্রদান করে তাজকিয়া করা এ দরবারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর বলেন, মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির উদ্যোগে আগামী ২৫ ডিসেম্বর সোমবার চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিতব্য ঐতিহাসিক গাউছুল আজম কনফারেন্সে মুসলমান যুবকরা পাবে ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ)’র বাস্তব শিক্ষা, প্রিয় রাসূলের আদর্শে জীবন গঠনের প্রকৃত দিক-নির্দেশনা এবং তরিক্বতের মাধ্যমে হেদায়াতপ্রাপ্তির শ্রেষ্ঠ উপায়।
মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ এর উদ্যোগে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে ছিল বাদে জোহর খতমে কোরআন, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা, বাদে আছর তরিক্বতের বিশেষ পদ্ধতিতে ফয়েজে কোরআনের মাধ্যমে নূরে কোরআন প্রদান, তাওয়াজ্জুহ্র মাধ্যমে রাসুল (দঃ) এর বাতেনী নূর প্রদান, তাবাররুক বিতরণ এবং বাদে এশা মোর্শেদে আজম হুজুর ক্বেবলা মাদ্দাজিল্লুহুল আলীর তকরির, মিলাদ-কিয়াম ও আখেরী মুনাজাত। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও এসব কর্মসূচীতে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে দুপুর থেকেই হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান কাগতিয়া দরবার শরীফে আসতে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে আছরের পূর্বেই মাহফিলস্থল দরবার শরীফস্থ গাউছুল আজম জামে মসজিদ প্রাঙ্গনসহ এর আশেপাশের এলাকা লোকে লোকারন্য হয়ে জনসমুদ্রে রূপ নেয়।
মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুহাদ্দিস আল্লামা মুহাম্মদ ইব্রাহিম হানফী, মুফতি কাজী আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকি, আল্ল¬ামা মোহাম্মদ আশেকুর রহমান, আল্লামা সেকান্দর আলী ও মাওলানা মুহাম্মদ ফোরকান।
মিলাদ ও কিয়াম শেষে হুজুর ক্বেবলা দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি, অসহায় নির্যাতিত মুসলমানদের হেফাজত এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা কাগতিয়ার গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।