সোনাগাজীতে দাদনের টাকা না পেয়ে সংখ্যালঘু অপহরন, বাড়ীতে আগুন, বসত বাড়ী ছাড়ার হুমকি 

বাংলারদর্পন >>

সোনাগাজীতে দাদনের টাকা সুদ না পেয়ে এক সংখ্যালঘুর বাড়ীতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ীরা। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার রাতে সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের আলামপুর গ্রামে।

ইউপি চেয়ারম্যান, সোনাগাজী থানা পুলিশ ও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভূমি সিন্ডিকেটের ব্যবসা করতে আলামপুর গ্রামের রাখাল শীলকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা দাদন দেয় স্থানীয়  ইউপি মেম্বার আলাউদ্দিন বাবুলের চাচাতে ভাই বিএনপি ক্যাডার সবুজ ,ইউছুপ ও হানিফ । এরিমধ্যে রাখাল ২লাখ ৪০হাজার টাকা পরিশোধ করে দেন। কিন্তু দাদন ব্যবসায়ীরা তার নিকট আরো ১লাখ ৪০হাজার টাকা দাবী করেন।

রাখাল আর কোন টাকা দিবে না বললে গত ১২নভেম্বর সকালে চর লক্ষীগঞ্জের বিয়ে বাড়ী থেকে সবুজ,ইউছুপ ও হানিফ তার কপালে অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরন করে নির্যাতন শেষে সবুজের বাড়ীতে বেধে রাখেন। রাখালের স্ত্রী কমলা রানী কোন উপায় অন্ত না দেখে বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে চেয়ারম্যান ইসহাক খোকনের সহযোগিতা চায়। চেয়ারম্যান সোনাগাজী থানায় সংবাদ পাঠালে সোনাগাজী থানার এস,আই মোস্তফা তাকে উদ্ধার করে ঘটনার স্থল থেকে মাইন উদ্দিনকে আটক করে থানা নিয়ে যান। এ বিষয়ে আহত রাখাল সবুজ,ইউছুপ ও হানিফকে আসামী করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

ইউপি চেয়ারম্যান থানা পুলিশের সাথে বৈঠক করে আগামী ২১ নভেম্বর পুনরায় বিষয়টি সমাধানের জন্য উভয়কে নিয়ে সোনাগাজী থানায় বৈঠক করার সিধান্তে মাইন উদ্দিনকে মুক্ত করে আনেন। শুক্রবার রাখাল ও তার পরিবারের সদস্যরা চরক্ষীগঞ্জে তার ভাগ্নের বাড়ীতে গেলে রাতের আধারে দূবৃর্ত্তরা তার বসতঘর ও রান্নাঘরে আগ্নিসংযোগ করে। বাড়ীর লোক জন আগুনের লেলিহান শিখা দেখে চিৎকার শুরু করলে গ্রামবাসী এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন। রাতে পুলিশ ঘটনার স্থল পরিদর্শন করলেও কোন আসামী গ্রেফতার করতে পারেনি। এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংখ্যালঘুদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দফায় দফায় হামলার কারনে রাখালের দুই ভাই দিপাল শীল পরিবার পরিজন নিয়ে ভারতে ও মৃনাল শীল ভিটেবাড়ী ছেড়ে ফেনীতে আশ্রয় নিয়েছে। হামলা কারীরা মৃনালকে ফেনীথেকে অপহরন করে নিয়ে বিনাটাকায় ভিটেবাড়ী দলীল করে নেয়।

সোনাগাজী থানার ওসি হুমায়ুন কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন এ নিয়ে এখনো কোন অভিযোগ দেয়নি। রাতে পুলিশ ঘটনার স্থল পরিদর্শন করেছে।

স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ইউপি মেম্বার আলাউদ্দিন বাবুল জানান হামলা কারী ও দাদন ব্যবসায়ীরা এলাকার চিহ্নিত ক্যাডার। অতিতেও তাদের নেতৃত্বে সংখ্যালঘু পাড়ায় দফায় দফায় হামলা হয়েছিলো। তাদের দৃষ্টি সংখ্যালঘুদের বসত বাড়ী দখল করা।

ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইসহাক খোকন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে  জানান রাখালকে আটক রাখার সময় স্থানীয় ইউপি মেম্বার বাবুলও ঘটনার স্থলে ছিলেন। আমি তাকে বার বার অনুরোধ করেও বিষয়টি সমাধানে ব্যর্থ হয়েছি। অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি দূর্বৃত্তদের পূর্ব পরিকল্পিত বলে মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্ট্রান ঐক্যপরিষদ ফেনী জেলা কমিটির আহবায়ক শুকদেব নাথ তপন শনিবার বিকালে জেলা নেতাদের সাথে জরুরী সভাকরে এ ঘটনায় জড়িত দের গ্রেফতারের দাবী জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *