বাংলারদর্পন >
ইসলাম জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ধর্ম। আল্লাহতায়ালা মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন, জ্ঞান ও বর্ণনা শক্তি দান করেছেন।
পবিত্র কোরআনে সর্বপ্রথম নাজিলকৃত আয়াতে মহান প্রভুর নামে পাঠ করার আদেশ করা হয়েছে। জ্ঞান-বিজ্ঞান, তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তি অর্জনে বই-কিতাব পাঠের বিকল্প নেই। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘পড় তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে রক্তপিণ্ড থেকে। পড়! তোমার প্রভু তো অধিক সম্মানিত। যিনি কলম দ্বারা শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না’ (সুরা আলাক : ১-৫)।
সুতরাং মহান আল্লাহকে মানবজাতির প্রথম শিক্ষক বলা যায়। তার কাছ থেকে ওহির মাধ্যমে নবী-রসুলগণ জ্ঞান লাভ করেছেন।
মহাবিশ্বের সব জ্ঞান-বিজ্ঞানের তিনিই প্রধান ও মূল উৎস। এরপর পৃথিবীতে মানবজাতিকে আল্লাহ প্রেরণ করেন এবং তাদের জাগতিক জ্ঞান, শরিয়তি জ্ঞান শিক্ষাদানের জন্য নবী-রসুলদের দায়িত্ব দেন। আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করা এবং মানবসভ্যতা গঠনের জন্য মানুষ প্রথমত নবী-রসুলদের কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করেছে। দ্বিতীয়ত, মানুষ তাদের পিতা-মাতা ও শিক্ষকের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় বিদ্যা শিক্ষা অর্জন করেছে।
একজন মুসলিম তার জীবনে সর্বাধিক শ্রেষ্ঠ যা অর্জন করে তা হলো উপকারী জ্ঞান। এর দ্বারা মানুষ সৌভাগ্যশালী হয় এবং সব মানুষের মধ্যে উচ্চমর্যাদায় আসীন হয়। তবে সর্বোত্তম মানুষ হলো যে ইলম অনুযায়ী আমল করে। ইসলামই জ্ঞান ও জ্ঞানীকে যথাযথ মর্যাদা দেয়। পার্থিব ও পারলৌকিক সব স্তরে। মানুষ যদি দুনিয়াবি বিষয়াদিতে জ্ঞানী হয় এবং আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করে এতে তার ইমান বৃদ্ধি পায়। উপরন্তু ইসলাম ও মুসলমানের অনেক উপকারও সাধিত হয়।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, জ্ঞান ছাড়া মানুষ আল্লাহ ও তার রসুলের হুকুম যেমন পালন করতে পারে না তেমনি বান্দার ও সৃষ্টির হকও আদায় করতে সক্ষম হয় না। সহিহ ইলম হাসিল করা এবং তদানুযায়ী আমল করা দ্বারা একজন পূর্ণাঙ্গ, সুসভ্য ও উপকারী মানুষ পরিণত হতে পারে যার দ্বারা সমাজ ও সৃষ্টি কল্যাণ লাভ করে। এ জন্য ইসলাম সর্বত্র ও সর্বযুগেই জ্ঞান অর্জন এবং তা প্রসারে উৎসাহ দেয়।
ইসলাম এক মহান শরিয়ত প্রবর্তন করেছে, যা কতগুলো জ্ঞান ও বিধিবিধানের সমষ্টি। ইসলামে রয়েছে সব কল্যাণ ও উপকারী বিষয় অর্জনের এবং ক্ষতিকারক ও মন্দ বিষয় থেকে দূরে রাখার শক্তি ও যোগ্যতা। কেয়ামত পর্যন্ত মানবজাতির সার্বিক কল্যাণের জন্য এতে সংস্কার ও গবেষণার দ্বারও উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। কোরআন-সুন্নাহর মূলনীতির আওতায় উপযুক্ত আলেমগণ এ গবেষণা ও সংস্কার করার অধিকার রাখেন।
ইসলামী জ্ঞানের বিস্তারে সমাজ থেকে অজ্ঞতা, অন্যায় দূরীভূত হবে এবং মানুষ রক্ষা পাবে কুসংস্কার, বিশৃঙ্খলা ও পথভ্রষ্টতা থেকে।
লেখক-
প্রফেসর মাওলানা মো. সালাহ্উদ্দিন –
(খতিব, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ)