ডাকাতির ফাঁদ রুখে যাত্রীবেশি ২৮ জনকে আটক করল পুলিশ

 

বাংলারদর্পন : ৩ নভেম্বর ২০১৭।

ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে রাতে বাড়িফেরা মানুষকে প্রায়ই অস্ত্রের মুখে জিম্মি হতে হয়। হারাতে হয় সর্বস্ব।

আর তা নস্যাৎ করে দিয়েছে পুলিশ। দুঃসাহসিক অভিযানে ফাঁদ পেতে বসে থাকে একটি ডাকাত দলের ২৮ সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

অভিযান চলাকালে ডাকাতের ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছেন ওসিসহ ৪ পুলিশ সদস্য। উদ্ধার করা হয়েছে ৫ জিম্মিকেও।

এসময় ডাকাতদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় বাস, একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও দেশি বিভিন্ন অস্ত্রসহ লুট করা মূল্যবান জিনিসপত্র।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আশুলিয়ার নবীনগর এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এ অভিযান চালায় পুলিশ।

আটকরা হলেন- বশির, আবু সাইদ, স্বপন মল্লিক, আলামীন, মেহেদী হাসান, হাবিবুর রহমান, শহিদুজ্জামান, সানাউল্লাহ বারী, শফিকুল ইসলাম, কাশেম, মোকসেদ, জাহিদুল ইসলাম, এনামুর রহমান, শাহ আলম, রুহুল আমীন, মামনু, রহিদ, কায়সার, মহসিন, কামরুল, ইকবাল, সোরহাব, রফিকুল ইসলাম, বাবুল, বাহারুল, জাকির ও সোপন মিয়া।

জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পাওয়া পোশাক কারখানার কর্মকর্তা সামিউল জানান, ধামরাইয়ের কালামপুর স্ট্যান্ডে দীর্ঘক্ষণ বাসের অপেক্ষায় দাড়িয়ে ছিলেন তিনি। এ সময় একটি লোকাল বাস আসে।

ভেতরে অনেক যাত্রী দেখে বাসে উঠে বসেন তিনি। ডুলিভিটা বাসস্ট্যান্ড পার হলেই যাত্রীদের মধ্যে থেকে কয়েকজন উঠে এসে দেশি অস্ত্র ও পিস্তল ঠেকিয়ে সব কিছু দিয়ে দিতে বলেন।

এসময় প্রাণ বাঁচাতে সব কিছু তাদের দিয়ে দেওয়া হয়। পরে হাত-পা বেধে তাকে গাড়ির পেছনে ফেলে রাখে ডাকাতরা। এসময় বাসের পেছনের সিটে হাত-পা বাধা অবস্থায় আরও চারজন ছিলেন বলেও জানান সামিউল।

সাভার সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার খোরশেদ আলম জানান, বাসে যাত্রী তুলে ডাকাতি করা হচ্ছে- এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ নবীনগরের ত্রিমোড়ে অবস্থান নেয়। ডাকাতদলটি নবীনগর এসে পৌঁছালে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত বাসটিকে থামতে সিগন্যাল দেয় পুলিশ। এসময় বাসের ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকে ডাকাতরা।

একপর্যায়ে পুলিশ পুরো বাসটি ঘিরে রেখে ডাকাতদের প্রতিরোধ করে। পরে ২৮ ডাকাতকে আটক ও বাসটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে।

এসময় আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল, পরিদর্শক (অপারেশন) জাহিদুর রহমান, উপ-পরিদর্শক মুকিব হাসান ও রাকিবুল হাসান আহত হন।

তিনি আরও জানান, বাসে ডাকাতির এটি একটি কৌশল। অনেক যাত্রী দেখলে অনেকেই নিরাপদ মনে করে সেই বাসে উঠে বসেন। ডাকাতেরা পরে সাধারণ যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করে হাত-পা বেধে মহাসড়কের পাশে ফেলে রেখে যায়।

তিনি জানান, ডাকাত দলনেতা বশিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় পাচঁটি মামলা রয়েছে। তার সহযোগী স্বপন মল্লিকের বিরুদ্ধে দু’টি এবং আলামীন ও আবু সাইদের বিরুদ্ধে একটি করে মামলা রয়েছে। ডাকাতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *