বরিশাল প্রতিনিধি: নাম বেল্লাল (২৪)। পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হলেও তার বাঁশ শিল্প অবাক করে দিয়েছে স্থানীয় অধিকাংশ বাসিন্দার হৃদয়। তার কর্মদক্ষতা জনমনে প্রশ্ন তুলে দেয় আর্কিটেকচার ও ডিজাইনারদের তুলনায় তিনিও কোন অংশে কম নয়। বাঁশ শিল্পী বেল্লালের বাঁশ শিল্প স্ব-চোখে দেখতে বরিশাল নবগ্রাম রোড সোনামিয়ার পুল সংলগ্ন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছুটে যাচ্ছে অনেক মানুষ মাত্র ৬ মাসের ব্যবধানে বাঁশ ও গাম দিয়ে তিনি তৈরী করেছেন বিভিন্ন তলার একাধিক ভবনসহ গ্রামের ছোট বসত ঘর। যার মধ্যে রয়েছে সর্বোচ্চ ১০ তলার ভবন।
শুধু ভবনই নয়, তৈরী করেছে একাধিক লঞ্চ, জাহাজ ও নৌকা। বাস্তব চিত্রের সাথে তার তৈরী বাঁশ শিল্পের মধ্যে মিল পাওয়া যায়। যেমন ৩য় ও ৪র্থ তলা লঞ্চে রয়েছে, সিঙ্গাল-ডাবল কেবিন, সোফা সেট, ডেক ও বাথরুমসহ লঞ্চের ইঞ্জিন রাখা এবং চালকের নির্দিষ্ট স্থান। একইভাবে ভবন তৈরীতেও রেখেছেন প্রবেশ পথসহ উপরে ওঠার সিড়ি, নিচ তলায় গাড়ি পার্কিং এর সুব্যবস্থা, তলা প্রতি আলাদা কক্ষ-দরজা-জালনা ও বাথরুম। জাহাজ ও নৌকা তৈরী করেছে নানা ডিজাইনের। বাঁশ শিল্পী বেল্লাল জানান, প্রথমে তিনি বাঁশ দিয়ে একটি কবুতরের খাঁচা তৈরী করেণ। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে ওই সব তৈরী করে।
এক কথায় বেল্লাল বলেন, তাকে সরেজমিনে নিয়ে যে কোন অফিস-আদালত, ভবন-বসতঘর, লঞ্চ-জাহাজ-নৌকা, প্লেন-উড়োজাহাজ ইত্যাদি চিত্র দেখালে তা তিনি বাঁশ দিয়ে তৈরী করতে পারবে। বর্তমানে তার তৈরী বাঁশ শিল্পের পণ্য মানুষ ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। ৬টি ছোট-বড় ভবন-বসতঘর প্রতিটি ১২শ থেকে ২২ শত টাকা এবং ১১টি লঞ্চ-জাহাজ-নৌকা প্রতিটি ৩ শত থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন তিনি। ওই সব পণ্য তৈরী করতে তার ব্যয় হয়েছে নিম্মে ২ শত থেকে ১২শ টাকা পর্যন্ত। ক্রেতারা বাঁশ শিল্পের পণ্যগুলো উপহার দেয়াসহ ঘরে আকর্ষনীয় শোপিস হিসেবে ব্যবহার করে বলে জানান বেল্লাল। এ সব তৈরীর জন্য প্রথমে ধর্য্য এর পাশাপাশি বাঁশ, দা, করাত, হাতুরী, বাটাই, গাম ব্যবহার হয়।তিনি আরো বলেন, প্রচার-প্রচারণা দিক থেকে তিনি খুবই দুর্বল।
স্থানীয় আনোয়ার হোসেন ও এম ফোরকান জানান, বেল্লাালের বাঁশশিল্প পণ্য দেশ-বিদেশে রফতানি করার মত যোগ্যপণ্য। যে কোন মানুষ তার তৈরী পণ্য দেখলে ভালো লাগার পাশাপাশি ক্রয় করতে চাইবে। জানা গেছে, নগরীর ২৬ নং ওয়ার্ড হরিণাফুলিয়া এলাকার আঃ রহিম সরদারের (সরদার বাড়ি) ছেলে বেল্লাল। রহিম পেশায় কাঠমিস্ত্রি। ২০০৮ সালে স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিয়েছিল বেল্লাল। বিজ্ঞান শাখার ছাত্র ছিলেন। এরপর পারিবারিক নানা সমস্যার কারণে লেখাপড়া করেণি। অপরদিকে বেল্লালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হলো নগরীর ২৭ নং ওয়ার্ডে। দুই ওয়ার্ডের অধিকাংশ বাসিন্দা তাদের আত্মীয়-স্বজন বেড়াতে আসলেই বেল্লালের তৈরী বাঁশশিল্প দেখাতে নিয়ে যায়।