কড়া নির্দেশ মেয়রের! প্রতি ওয়াক্ত নামাযের সময় একযোগে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সব দোকান-পাট

 

লক্ষীপুর :

মেয়রের নির্দেশে বিগত এক মাস ধরে লক্ষ্মীপুরে জনসম্মুখে ধূমপান নিষিদ্ধ ঘোষণার পর তা অনেকাংশেই বাস্তবায়নের মুখে। এ দফায় নতুন এক সিদ্ধান্ত দিয়ে ফের আলোচনায় এলেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহের। দেশব্যাপী আলোচিত এই মেয়র এবার প্রতি ওয়াক্ত নামাজের সময় পৌর এলাকা/ শহরের সব দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। গত রবি ও সোমবার শহরে মাইকিং করে মেয়রের এই নির্দেশ প্রচার করা হয়।

মেয়রের নির্দেশের পরই পালটে গেছে দৃশ্যপট। মসজিদের মাইক থেকে আযানের শব্দ শুরু হলেই শহরজুড়ে এক যোগে হাজারো দোকান পাটের শাটার বন্ধের শব্দকে ‘অভাবনীয়’ উল্লেখ করে লক্ষীপুর শহরের সুমন নামের একজন শিক্ষার্থী সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, গতকাল মঙ্গলবার জোহরের সময় থেকে এই নির্দেশ কার্যকর হয়েছে লক্ষ্মীপুর পৌর এলাকায়।

এদিকে, মেয়রের এমন নির্দেশের পর পুরো এলাকাজুড়েই চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ধর্মপ্রান মানুষ এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানালেও চাপা ক্ষোভ দেখা গেছে অনেকের মাঝেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের এক দোকানি সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, ‘মাইকিং গতকালই শুনেছি। আজ থেকে এটা কার্যকর হয়েছে। আমি শহরে ঘুরে দেখেছি প্রায় ৯০ ভাগ দোকানই নামাজের সময় বন্ধ ছিল।’

এই দোকানি বলেন, ‘আজানের পরপরই দোকানে সাটার নামিয়ে তালা লাগিয়ে দেন দোকানিরা। এমনকি মার্কেটের মূল গেইটেও তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।’

মেয়র আবু তাহের বিষয়েটি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমি এ নির্দেশ দিয়েছি। রমজান মাসে আমার কাছে স্থানীয় জনগণ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এসে এই দাবি জানিয়েছিলেন। পরে আমি হজে গিয়েছিলাম। তাছাড়া আমার অ্যাক্সিডেন্টের কারণে এই নির্দেশ কার্যকরে দেরি হয়েছে। এই উদ্যোগে আমরা স্থানীয় মানুষের ভালো সাড়া পাচ্ছি।’

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীরা এমন নির্দেশনার আওতাধীন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘আজ সকালে তাদের একটি প্রতিনিধি দল আমার সঙ্গে দেখা করেছে। আমি তাদের বলেছি, তারা তাদের দোকান খোলা রাখতে পারবেন, তবে নামাজের সময় তাদের দোকানে যেন কোনো মুসলমান আড্ডা না দিতে পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।তারা এমনটি হবে না বলে আমাকে কথা দিয়েছেন।’

এদিকে পৌর মেয়রের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সর্বস্তরের মুসল্লিরা। এ সিদ্ধান্তের পর থেকে বিভিন্ন মসজিদে মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী , এমন সিদ্ধান্তে অনেকেরই দ্বিমত থাকলেও প্রকাশ্যে বিরোধিতা বা প্রতিবাদ করেননি কেওই । স্থানীয়দের অনেকেই জানান, লক্ষ্মীপুর জেলা শহরে মেয়র তাহেরের কথাই ‘শেষ কথা’ হিসেবে প্রচলিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *